শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

করোনা উপসর্গে মৃত ৪

বিনোদন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১১ জুলাই, ২০২০, ১২:০০ এএম

করোনা উপসর্গ সর্দি, জ্বর, কাশি, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে দিনাজপুর, সাতক্ষীরা, ঝালকাঠি ও চট্টগ্রামের বাশখালীতে একজন করে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। 

যশোর : যশোরে গতকাল সর্বোচ্চ রেকর্ড করোনা শনাক্ত হয়েছে ১০৮ জন। যবিপ্রবি ও খুলনা ল্যাবের রিপোর্টে করোনা শনাক্ত হয় বলে যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন দৈনিক ইনকিলাবকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত যশোর জেলায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। হাসপাতালসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, করোনা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন আরো ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবারও যশোর ২৫০ বেড হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন শহিদুল ইসলাম (৫০) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি যশোর শহরের ঢাকা রোড এলাকার মৃত নিয়ামত আলীর পুত্র।
রাজশাহী : রাজশাহী বিভাগে গতকাল সকাল পর্যন্ত এ বিভাগে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০২৫ জনে। এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১০৭ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৩০৬১ জন। রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতরের পরিচালক ডা. গোপেন্দ্র নাথ আচার্য্য জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন শনাক্তের মধ্যে রাজশাহীর ৫৪ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩৫ জন, নওগাঁয় ৩৯ জন, নাটোরের ৭ জন, জয়পুরহাটে ৫ জন, বগুড়ায় ৫৭ জন ও সিরাজগঞ্জে ৪২ জন।
সর্বশেষ বিভাগের আট জেলার মধ্যে সাত জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ২৩৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। পাবনায় এ দিন কোন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়নি। গত ২৪ ঘণ্টায় নওগাঁয় ১ জন ও বগুড়ায় ১ জন করোনা আক্রান্ত রোগী মারা গেছেন। একই সময় সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন ১৮৮ জন। তিনি জানান, রাজশাহী বিভাগে আক্রান্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ বগুড়ায় ৩৬০৮ জন। এছাড়াও মহানগরীতে ১১৩৫ জনসহ রাজশাহী জেলায় ১৪৬৯ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৫৭ জন, নওগাঁয় ৬২৬ জন, নাটোরে ২৬৪ জন, জয়পুরহাটে ৫১৬ জন, সিরাজগঞ্জে ৭৮৬ জন ও পাবনায় ৫৯৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সরকারি হিসেবে এ পর্যন্ত বিভাগের আট জেলার মধ্যে ছয় জেলায় মৃতের সংখ্যা ১০৭ জন। এর মধ্যে রাজশাহীতে ১৩ জন, নওগাঁয় নয়জন, নাটোরে একজন, বগুড়ায় ৬৬ জন, সিরাজগঞ্জে নয়জন ও পাবনায় নয়জনের মৃত্যু হয়েছে করোনাভাইরাসে। সরকারি হিসেবে এখনো জয়পুরহাট ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে কোন করোনা আক্রান্ত রোগী মারা যায়নি।
গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন আরও ১৮৮ জন। এ নিয়ে বিভাগে সুস্থ্য হয়েছেন ৩০৬১ জন করোনা আক্রান্ত রোগি। এর মধ্যে রাজশাহীর ৩২১, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৯৩ জন, নওগাঁয় ৪৫৫ জন, নাটোরে ৯৭ জন, জয়পুরহাট ১৬৪ জন, বগুড়ায় ১৬১৭ জন, সিরাজগঞ্জ ১১৪ জন ও পাবনায় ২০০ জন।
ডা. গোপেন্দ্র নাথ বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে মানুষের সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। অতি জরুরী প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। প্রয়োজনে বের হলে মাস্ক পরতে হবে। এছাড়াও সামাজিক দুরত্ব রাখাসহ মেনে চলতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। তবেই করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব বলে মনে করেন এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
রাজশাহীর দুইট ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা শেষে মোট ৯৮ জনের করোনা ধরা পড়েছে। এদর মধ্যে রাজশাহী জেলার ৫৪ জন। রামেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস জানান, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপতালের করোনা পরীক্ষা ল্যাবে গত বৃহস্পতিবার রাতে ৪৭ জনের করোনা ধরা পড়েছে। এদের মধ্যে ৪৫ জন রাজশাহী জেলার, নওগাঁর একজন ও একজন নাটোরের।
তিনি জানান বৃহস্পতিবার মোট ১৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এদের মধ্যে ৪৭ জনের করোনা পজিটিভ। রাজশাহী জেলার ৪৫ জনের মধ্যে তানোর উপজেলার ৩জন, বাগমারা উপজেলার ১জন। আর নগরীর আক্রান্তদের মধ্যে রামেক হাসপাতালের চিকিৎসক ১জন, সিনিয়র স্টাফ নার্স ৮জন, পুলিশের সদস্য ৭জন। শনাক্তদের সকলেই রাজশাহী নগরীসহ রামেক হাসপাতাল ও মিশন হাসপাতালে অবস্থান করছেন।
এদিকে, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে বৃহস্পতিবার ১৭৯টি নমুনা পরীক্ষা শেষে মোট ৫১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে রাজশাহীর ৯, চাঁপাইনবাগঞ্জের ৩৪ ও নাটোরের ৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। রামেক হাসপাতালের ল্যাবে যাদের করোনা শনাক্ত হলো- রামেক হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সিরাজুল ইসলাম। রামেক হাসপাতালের নার্স সুলতান ইয়াসমিন, নার্স সুলতানা পারভিন, নার্স মুরশিদা খাতুন, নার্স শিরিন খাতুন, নার্স নুর নাহার খাতুন, নার্স তানজিলা খাতুন, নার্স সাইফুর রহমান, নার্স সবুজ রানা। রামেক হাসপাতালের রাঁধুনি শাহিনা খাতুন, রামেক হাসপাতালের এমআইএসএস জোসনা খাতুন, এমআইএসএস জোসনা রানি, এমআইএসএস অনুপ কুমার দাশ। ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারী বিভাগের নার্স মাহবুব আলম। রামেক হাসপাতালে ভর্তি রোগী ববি, বেলাল, মিশন হাসপাতালের রোগী সোহাগী, বড়বাড়িয়া এলাকার লতিফা বেগম, নওগাঁর বানু বেগম, নাটোরের মাইনুদ্দিন।
পুলিশ হাসপাতালের জুবায়ের ইসলাম, পুলিশ লাইনের আব্দুল্লাহ, আরএমপি’র শফিকুল ইসলাম, পুলিশ হাসপাতালের মুকুল হোসাইন, খুরশেদ আলম, শাহেদ, তরিকুল, কুতুবুল আলম। রাজশাহী নগরীর বাসিন্দারা হলেন, ঘোরামারা এলাকার আবু মাসুদ, ২৬ নং ওয়ার্ডের আসাদুজ্জামান, ২৩ এর মাহাবুব আলম, ২১ এর হোসনে আরা, ২৬ এর রইস উদ্দিন, ১৯ এর আসিফ, ৪এর আব্দুল রশিদ, ১৫ এর শাওন, ২৫ এর উম্মে মাহাবুব, ২ এর আল তইয়ব খান, ২১ এর গোলাম মোস্তফা, ২১ এর সারোয়ার হোসেন, ২১ এর আইনুল হক, ১৪ এর ফারহানা রহমান, ১৫ এর জিন্নাত আরা, সুবরনা। তানোরের আফসার আলী, তানোরের আফসানা, তানোরের রাজু, বাগমরারার এনামুল। রামেক ল্যাবে করোনা শনাক্ত হলো যদের- রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এলাকার আক্রান্তরা হলেন, রনি, রবিউল, দেলোয়ার, আসানি সাহরিন, সাইদুর রহমান, বাপ্পি, ডা. শামিম আহসান, ডা. এএফএম শাকিউল এবং আলমগীর।
এছাড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার আক্রান্তরা হলেন, ইকবাল কাদের, সাদিয়া, শিরিন, রাকিব, মানহা, আবদুর রহমান, মনিমুল, জাহিদুল, রনি, আতাউর রহমান, মাসুমা জেসমিন, সাবিত, সোহেল রানা, আতাউর রহমান, ইকবাল আব্বাসী, ডা. পলিন, হাদিউজ্জামান, নিরু, আব্দুল্লাহ আল হোসাইন, হাসান, তাহমিদা এবং আমির আলী, শিবগঞ্জের শরিফুল, আসাদুজ্জামান, মনিরুল, আজাহারুল, আয়েশা খাতুন, মোরশেদুল, মনিরুল ইসলাম, আবদুল রাকিব, আবদুর রাজ্জাক, গোমস্তাপুরের শফিকুল, রাসেল, নাচোলের রায়হান এবং ভোলাহাটের রুবেল। নাটোর জেলার আক্রান্তরা হলেন, সিংড়ার আজাদ, বাগাতিপাড়ার সোহাগ রানা, সদরের শাহিনুর, আরিফুল, ভুলন, মাসুদ রানা এবং লালপুর উপজেলার নুরুজ্জামান।
বরিশাল : দক্ষিণাঞ্চলে মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে করেনা সংক্রমণ বৃদ্ধির সাথে মাসের প্রথম ১০দিনে ৮৬৮ জন আক্রান্তের সাথে মৃত্যুর মিছিলে যুক্ত হয়েছে আরো ২১ জনের নাম। গত ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় নতুন করে ১১৪ জন আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে একজনের। আগের দিন সংখ্যাটা ছিল ৭১। ২৪ ঘণ্টায় পটুয়াখালীর গলাচিপাতে ৬৫ বছরের এক ব্যক্তি করোনা সংক্রমণে মারা গেছেন। জেলাটিতে এপর্যন্ত ২৪ জনের মৃত্যু ও ৬০৬ জনের আক্রান্তের খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
এদিকে, বরিশাল মহানগরীসহ জেলায় সংক্রমণের সংখ্যা গতকাল ছিল এ মাসের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৪ জন। গত ৪ জুলাই জেলায় মাসের সর্বোচ্চ সংক্রমণ ছিল ৬২ জন। এপর্যন্ত বরিশাল জেলায় মৃত্যু হয়েছে ৩১ জনের, আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৮৫৯। এরমধ্যে মহানগরীতেই মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৪ জনের। অক্রান্তের সংখ্যাও দেড় হাজারের মত। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ২৩ জনসহ মোট সুস্থ হয়েছেন ৫৫১ জন।
পিরোজপুরেও মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আগের দিনের ৫ থেকে পাঁচগুণ বেড়ে ২৬ জন হয়েছে। ৮ জুলাই এ জেলায় আক্রান্ত ছিল ৩জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নুতন ১০ জন সহ জেলাটিতে মোট সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৮১ জন। তবে বরগুনা ও ঝালকাঠীতে শুক্রবার আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে। আর ভোলাতে কোন আক্রান্ত ও সুস্থতার খবর ছিলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতরে। শুক্রবার বরগুনাতে ৫ জন ও ঝালকাঠিতে দুজন নতুন করে করোনা সংক্রমণের শিকার হয়েছে বলে জানা গেছে। যা আগের দিন ছিল যথাক্রমে ৮ ও ১৬। ৯ জুলাই একজনের মৃত্যুও হয়। বরগুনাতে ৫ জনের মৃত্যু ও ৩৫৮ জনের আক্রান্তের খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় জেলাটিতে ৭ জন সহ মোট ১৯৪ জন সুস্থ হয়ে উঠলেও ঝালকাঠিতে শুক্রবার নতুন কোন সুস্থতার খবর ছিলনা। এ জেলায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মোট সুস্থ্য হয়ে উঠেছেন ১৫১ জন। জেলাটিতে এ পর্যন্ত ৩০৭ জন আক্রান্তের বিপরিতে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় ঝালকাঠীতে দু জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে, বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে নতুন ৩ জন রোগী ভর্তি হলেও কেউ ছাড়পত্র পায়নি। বর্তমানে এ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ৪৫ জন। অপরদিকে হাসপাতালটির আইসোলেশন ওয়ার্ডে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ১১ রোগী ভর্তি হলেও সুস্থ্য হয় ছাড়া পেয়েছেন ৮ জন। এসময়ে ওয়ার্ডটিতে একজনের মৃত্যুও হয়েছে। ফলে দক্ষিণাঞ্চলের বৃহত এ হাসপাতালটির করোনা ও আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তিকৃত ৮৩৮ রোগীর মধ্যে এ পর্যন্ত ১২২ জনের মৃত্যু হল। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত হাসপাতালটির করোনা ও আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিল ১০৯ জন রোগী। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালটির এ দুটি ওয়ার্ডে করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তিকৃতদের মধ্যে ১২ জনের রক্ত পরিক্ষায় কারোই কোভিড-১৯ আক্রান্ত হবার খবর মেলেনি।
বগুড়া : গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৫৭ জন করোনা পজিটিভ শনাক্ত হওয়ায় বগুড়ায় মোট করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৩,৬০৮ জনে। গতকাল স্বাস্থ্য বিভাগের নিয়মিত ব্রিফিং এ ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মুস্তাফিজুর রহমান তুহিন একজনের মৃত্যুরসহ মোট আক্রান্তের তথ্য উল্লেখ করেন।
দিনাজপুর : করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেলেন দিনাজপুরের এক মাছ ব্যবসায়ী আমিন মিয়া। মারা যাওয়ার পর গোপনে তাকে দাফন করার চেষ্টা করেন পরিবারের লোকজন। পরে স্থানীয়দের আপত্তি করে স্থানীয় প্রশাসনকে খবর দেয়। খবর পেয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ এসে মৃতের করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় নামাজের জানাযাসহ লাশ দাফন করে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন দিনাজপুর। শুক্রবার ভোর ৬টার দিকে দিনাজপুর সদরের শেখপুরা ইউপির শেখ জাহাঙ্গীর রোড এলাকায় তার নিজ বাড়িতে মারা যায়। মৃত আমিন মিয়া (৭০) দিনাজপুর সদরের শেখপুরা ইউপির শেখ জাহাঙ্গীর রোড এলাকার মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে। তিনি মাছের ব্যবসা করতেন।
সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মাসুদ হোসেন নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। একই সাথে করোনা উপসর্গ নিয়ে আব্দুস সাত্তার নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল দুপুর ৩টার দিকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান। করোনা আক্রান্ত মাসুদ হোসেন সাতক্ষীরা শহরের কাটিয়া মাঠপাড়া এলাকার নুর মোহাম্মদের ছেলে। গত ২৮ জুন জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে তিনি মেকিলে কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এরপর তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে শুক্রবার সকালে আইসিইউতে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকাল ৩টার দিকে তিনি মারা যান।
এছাড়া, করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণকারী আব্দুস সাত্তার (৭৮) সদর উপজেলার বাঁকাল শেখ পাড়া এলাকার মৃত গোলাম মোক্তাদির ছেলে। তিনি শুক্রবার দুপুরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কিছুক্ষণ পরে তার মৃত্যু হয়। সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. জয়ন্ত কুমার সরকার জানান, স্বাস্থ্য বিধি মেনে তাদের লাশ দাফনের প্রস্তুতি চলছে। ইতোমধ্যে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের বাড়িসহ কয়েকটি বাড়ি লক ডাউন করা হয়েছে।
বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) : চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কোভিড-১৯ রোগের উপসর্গ নিয়ে এক ব্যক্তি গতকাল রাতে মারা গেছেন। চট্টগ্রাম শহরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে অ্যাম্বুলেন্সে তিনি মারা যান। জানা গেছে, তিনি সপ্তাহখানেক ধরে জ্বর, কাশিসহ কোভিড-১৯ রোগের নানা উপসর্গে ভুগছিলেন। তিনি ডায়াবেটিসেও আক্রান্ত ছিলেন। স্থানীয় এক পল্লিচিকিৎসকের কাছে তিনি চিকিৎসা নিয়ে আসছিলেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। অ্যাম্বুলেন্সে করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে আনোয়ারার চাতরি-চৌমহনী এলাকায় তিনি মারা যান। গতকাল সকালে তার লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। আলেম-ওলামাদের আটজনের একটি দল লাশ দাফন ও জানাজার দায়িত্ব পালন করেন।
নওগাঁ : নওগাঁয় নতুন করে আরও ৩৯ ব্যক্তির শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে সদর উপজেলায় ১৫ জন, মহাাদবপুর উপজেলায় ২ জন, মান্দা উপজেলায় ৬ জন, বদলগাছি উপজেলায় ৪ জন, নিয়ামতপুর উপজেলায় ৭ জন, সাপাহার উপজেলায় ৪ জন এবং পোরশা উপজেলায় ১ জন। এ নিয়ে জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৬২৬ জন-এ। এদিকে মহাদেবপুর উপজেলায় নতুন করে করোনা ভাইরাসে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলারয় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৯ জন-এ।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে মোট ১০৪ জনকে হোমে কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে সদর উপজেলায় ৩৩ জন, রানীনগর উপজেলায় ৬ জন, আত্রাই উপজেলায় ৪ জন, মহাদেবপুর উপজেলায় ১০ জন, মান্দা উপজেলায় ১ জন, বদলগাছি উপজেলায় ৪ জন, পতœীতল্ াউপজেলায় ২ জন, ধামইরহাট উপজেলায় ১ জন, নিয়ামতপুর উপজেলায় ১২ জন, সাপাহার উপজেলায় ২৬ জন এবং পোরশা উপজেলায় ৫ জন। এই সময়ে মোট ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে ৯২ জনকে। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ্য হয়েছেন ২৫ জন এবং মোট সুস্থ্য হয়েছেন ৪৫৫ জন।
নারায়ণগঞ্জ : গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ২১ জন। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এই পর্যন্ত মারা গেছেন ১২০ জন। করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে পাঁচ হাজার ছাড়াল। জেলায় মহামারি এই ভাইরাসে মোট আক্রান্ত হলেন ৫ হাজার ৫০২ জন। শুক্রবার সকালে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে এই তথ্য জানা যায়।
গোপালগঞ্জ : কাশিয়ানীতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে বিমল কৃষ্ণ রায় ত্রিনাথ (৬০) নামে এক পল্লী চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ২৯ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৫৩ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ জন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫৫০ জন। জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৩৮৮ জন। গোপালগঞ্জ সদর, কোটালীপাড়া মুকসুদপুর, কাশিয়ানী ও টুঙ্গিপাড়ায় মারা গেছেন ১৫ জন। গতকাল সকালে গোপালগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ এ তথ্য জানান।
তিনি আরো জানান, নতুন করে গত ২৪ ঘণ্টায় গোপালগঞ্জ সদরে ১৩ জন, মুকসুদপুরে ২ জন, কোটালীপাড়ায় ৯ জন, কাশিয়ানীতে ১ জন ও টুঙ্গিপাড়ায় ৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সিভিল সার্জন জানান, আক্রান্তদের বসতবাড়ি সহ আশপাশের বেশ কয়েকটি বাড়িঘর লকডাউন করা হয়েছে। সেই সাথে আক্রান্তদের পরিবারের সদস্যদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার পারমর্শ দেয়া হয়েছে। তিনি আরো জানান, এ পর্যন্ত ৫৯৯০ টি নম‚না পরীক্ষা করা হয়েছে।এর মধ্যে মুকসুদপুরে ১৯৪ জন, কাশিয়ানীতে ১৭৫ জন, গোপালগঞ্জ সদরে ২৭৮ জন, টুঙ্গিপাড়ায় ১৬০ জন ও কোটালীপাড়া উপজেলায় ১৪৬ জনের দেহে করোনা সনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে চিকিৎসক , নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মী রয়েছেন ৭৬ জন ।
কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়া জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরে ৩৯ জনকে করোনা পজিটিভ বলে শনাক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে কুষ্টিয়ায় এখন পর্যন্ত ৮৮৯ জন কোভিড রোগী শনাক্ত হল। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সিভিল সার্জন অফিস থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়- কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে বৃৃৃহস্পতিবার ৩২৮ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে কুষ্টিয়ার ১৭৭ টি নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে ৩৯ জনকে করোনা পজিটিভ বলে শনাক্ত করা হয়েছে। এছাড়া কুমারখালীর ও দৌলতপুরের ১টি করে নমুনার রিপোর্ট ফলোআপ পজেটিভ। নতুন আক্রান্তের মধ্যে কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুরে ২ জন, ভেড়ামারায় ১ জন, সদরে ১৬ জন, মিরপুরে ২ জন, কুমারখালী ১৮ জন। নতুন আক্রান্তের মধ্যে পুরুষ ২৯ জন, মহিলা ১০ জন। কুষ্টিয়ায় এখন পর্যন্ত ৮৮৯ জন কোভিড রোগী শনাক্ত হল। ব্যাংকের পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় কুষ্টিয়ায় অগ্রণী ব্যাংকের কুমারখালী শাখা লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
পটুয়াখালী : পটুয়াখালীতে গত রাতে প্রাপ্ত রিপোর্টে নতুন শনাক্তকৃত ২৭ জনের মধ্যে গলাচিপা উপজেলার ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড এলাকার ১ জন মৃত্য ব্যক্তি রয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় করোনা শনাক্তদের মধ্যে মৃতের সংখ্যা ২৪। পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন ডাক্তার মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, প্রাপ্ত রিপোর্টের নতুন শনাক্তকৃত ২৭ জনের মধ্যে গলাচিপা ফজলুর রহমান প্যাদা করোনা উপসর্গ নিয়ে ৮ জুলাই মারা গেছন। গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার মো. মনিরুল ইসলাম জানান, গলাচিপার ডাকুয়া ইউনিয়নের ফজলু প্যাদা গত ৬ তারিখে গলাচিপা উপজেলা হাসপাতালে অসুস্থতার জন্য নমুনা প্রদান করেন।
ঝালকাঠি : ঝালকাঠির রাজাপুরে করোনা উপসর্গ নিয়ে আনোয়ার হোসেন (৪৮) নামে এক ইউপি সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে গুরুতর অবস্থায় কাঠিপাড়া গ্রামের বাড়ি থেকে তাঁকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। গত এক সম্পাহ ধরে তিনি জ্বর, বুকে ব্যাথা ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। আনোয়ার হোসেন রাজাপুরের শুক্তাগড় ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। তার পরিবার জানায়, সকালে আনোয়ার হোসেনের শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। দুপুরে তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে বরিশাল নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয়। স্বাস্থ্য বিভাগ তাঁর নমুনা সংগ্রহ করেছে। গ্রামের বাড়িতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাতে তাঁর লাশ দাফন করা হবে।
গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) : গফরগাঁও উপজেলা সদরে নতুন করে ২জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। গতকাল ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ পিসি আর ল্যাব গফরগাঁও উপজেলার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এদের মধ্যে ২জন নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছে। এরা হলেন মশাখালী ইউনিয়নের মো. জসিম উদ্দিন ও পৌর শহরের সোনালী ব্যাংকের কর্মচারী মো. রাশেদ। মোট করোনা আক্রান্ত সংখ্য্ া৬৭ ও সুস্থ ৩৮জন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন