তার মূল কাজ বোলিং। দলের স্পিনের প্রধান অস্ত্রই তিনি। ঘূর্ণির জাদুতে গড়েছেন বিশ্বরেকর্ডও। পাশাপাশি ব্যাট হাতেও বেশ ঝলক দেখিয়েছেন সম্প্রতি। সেটিই বাড়িয়ে দিয়েছে ইয়াসির শাহর ব্যাটিং স্বপ্নের সীমানা। পাকিস্তানের ৩৪ বছর বয়সী লেগ স্পিনার বলছেন, অস্ট্রেলিয়াতে সেঞ্চুরি করতে পারলে ইংল্যান্ডে কেন নয়!
গত নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়া সফরে অ্যাডিলেইড টেস্টে ব্যাট হাতে দারুণ চমক উপহার দিয়েছিলেন ইয়াসির। ৮ নম্বরে নেমে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা ব্যাট করে খেলেছিলেন ১১৩ রানের ইনিংস। ওই ইনিংসের আগে টেস্টে একটি ফিফটিও ছিল না ইয়াসিরের। এখন তিনি ব্যাটিং নিয়েও দারুণ মনোযোগী। ইংল্যান্ড সফরে পাকিস্তানের ট্রেনিং ক্যাম্প চলছে উস্টারে। সেখান থেকে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানালেন, অ্যাডিলেইডের পুনরাবৃত্তি করতে চান ইংল্যান্ডে, ‘নেটে ব্যাটিং নিয়ে কাজ করছি। দলের প্রয়োজন হলে সব জায়গাতেই এগিয়ে আসতে হয়। সত্যি বলতে, ইংল্যান্ডে সেঞ্চুরি করার লক্ষ্য আছে আমার। যদি অ্যাডিলেইডে সেঞ্চুরি করতে পারি, তাহলে করতে পারি এখানেও...।’
তার মূল দায়িত্ব নিয়ে অবশ্য দলের দুর্ভাবনার জায়গা আছে যথেষ্টই। সা¤প্রতিক সময়ে তার ব্যাটিং যতটা ভালো হয়েছে, ততটাই বিবর্ণ ছিল বোলিং। অ্যাডিলেইডে যে টেস্টে সেঞ্চুরি করেছেন, সেই ম্যাচেই বল হাতে ১৯৭ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশ‚ন্য। তার আগের টেস্টে ব্রিজবেনে ৪ উইকেট নিতে খরচ হয়েছিল ২০৫ রান। অস্ট্রেলিয়া সফরের আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় ২ টেস্টে নিতে পেরেছিলেন মোটে ১ উইকেট। অস্ট্রেলিয়া সফরের পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্টে ছিলেন বিবর্ণ। সবশেষ বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজে টেস্টে প্রথম ইনিংসে ছিলেন খরুচে, দ্বিতীয় ইনিংসে অবশ্য ৪ উইকেট নিতে পেরেছিলেন। তবে সব মিলিয়ে গত দেড় বছরে তিনি যেন অনেকটাই হারিয়ে খুঁজছেন নিজেকে। অথচ ২০১৪ সালে অভিষেকের পর থেকেই লেগ স্পিনের মায়াজালে ক্রিকেট বিশ্বকে মুগ্ধ করেছেন ইয়াসির। ৮২ বছরের রেকর্ড ভেঙে গড়েছেন টেস্টে দ্রুততম ২০০ উইকেটের কীর্তি। ২০১৮ সালে ওই মাইলফলক ছোঁয়ার পর থেকেই যেন কমে গেছে তার ধার। ভুগিয়েছে তাকে চোটও। এই সময়টায় ব্যর্থতার একটা বড় কারণ, গুগলির কার্যকারিতা কমে যাওয়া। এজন্যই অনেক খেটেছেন বলে জানালেন তিনি।
এবার ইংল্যান্ড সফরে স্পিন কোচ হিসেবে পেয়েছেন সাবেক লেগ স্পিনার মুশতাক আহমেদকে, গুগলিতে তিনি ছিলেন ‘মাস্টার।’ ইয়াসির জানালেন, গুগলি ঝালাই করে নিয়েছেন তিনি, ‘আমার গুগলি খুব ভালো হচ্ছে। দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচে সবকটি গুগলি ভালো জায়গায় পিচ করেছে ও ভালো টার্ন করেছে। আমার মনে হয়, এটিই হবে আমার সবচেয়ে গুরুত্বপ‚র্ণ অস্ত্র।’ যদিও ইংল্যান্ডের উইকেট ও কন্ডিশন স্পিনারদের জন্য সাধারণত খুব একটা সহায়তা করে না। তবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের টেস্ট সিরিজ হবে অগাস্টে। ওই সময় সহায়তা মিলবে, আশা ইয়াসিরের, ‘কাউন্টি ক্রিকেটে দলগুলি স্পিনারদের দলে টানে সাধারণত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, কারণ এই তিন মাসে উইকেট শুষ্ক থাকে এবং স্পিনারদের জন্য সহায়তা থাকে। আমি আশাবাদী যে উইকেট থেকে স্পিনাররা সাহায্য পাবে।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ শেষে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের টেস্ট সিরিজ শুরু হবে আগামী ৫ আগস্ট। কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সাথে সাথে বাধ্যতমূলক কোয়ারেন্টিন কাটাতে এরই মধ্যে গোটা পাক শিবিরই অবস্থান করছে ইংল্যান্ডে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন