শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

মুহুরী বাঁধের ৬টি স্থানে ভেঙ্গে ১৩ গ্রাম প্লাবিত

ছাগলনাইয়া (ফেনী) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৩ জুলাই, ২০২০, ৯:৩৭ এএম

দুই দিনের টানা বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফেনীর মুহুরী নদীর ৬ স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলার ১৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফাটল দেখা দেওয়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের আরও বেশ কয়েকটি স্থানে ভাঙন দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা, ফসলি জমি, রাস্তাঘাট, পুকুর প্লাবিত হয়েছে। একে করোনার প্রাদুর্ভাব, তার উপর এ দুর্যোগের আর্বিভাবে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন ১৩টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ।
রবিবার (১২ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার দিকে মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ১.৩২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহির উদ্দিন।আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত বাঁধের চার স্থানে ভাঙ্গনের ঘটনা ঘটেছে বলে জানান ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম।
ফুলগাজী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জানান, রবিবার সন্ধ্যার দিকে মুহুরী নদীর ফুলগাজী সদর অংশের উত্তর দৌলতপুরের ৩টি স্হানে ও কিসমত ঘনিয়া মোড়া গ্রামে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১টি স্থানে ভাঙ্গন দেখা দেয়। এতে ইউনিয়নের ঘনিয়া মোড়া, কিসমত ঘনিয়া মোড়া, পুর্ব ঘনিয়া মোড়া, উত্তর দৌলতপুর, বৈরাগপুর, সাহাপাড়া, উত্তর বরইয়াসহ অন্তত সাতটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া ফুলগাজী বাজারের পশ্চিম অংশে শ্রীপুর এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে ফুলগাজী উপজেলা সদরের মূল সড়কও তলিয়ে গেছে। এতে আনুমানিক ৫শ পরিবার পানি বন্দি হয়েছে। তাদের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
পরশুরামের চিথলিয়া ইউনিয়নের দুটি অংশে মুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের ২টি স্থানে ভেঙ্গে ৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ জসিম উদ্দিন। তিনি জানান, রোববার সন্ধ্যার দিকে ইউনিয়নের দূর্গাপুরের কালাম মেম্বারের বাড়ীর পাশে ও দক্ষিণ শালধর জহির চেয়ারম্যানের (সাবেক) বাড়ির পাশে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের দুইটি অংশ ভেঙ্গে দুর্গাপুর, রতনপুর, রামপুর, দক্ষিণ শালধর, মালিপাথর ও পাগলীরকুল গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। রাতের মধ্যেই ইউনিয়নের উত্তর ধনীকুন্ডা, মধ্যম ধনীকুন্ডা, রাজষপুর উত্তর শালধর, নোয়াপুরসহ আরো কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করেন মোঃ জসিম উদ্দিন।
দীর্ঘদিন ধরে চিড়া আর মুড়ির বদলে টেকসই বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের দাবী জানিয়ে আসছেন দুই উপজেলার স্থানীয়রা। প্রতি বছরই পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলায় বৃষ্টি হলেই ভেসে যায় কোটি টাকায় নির্মিত মুহুরী-কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর বাঁধ। এসব বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে যায়। প্রতি বছর এমন হলেও স্থায়ী সমাধান না হওয়ায় স্থানীয়দের দুর্ভোগ সীমাহীন।
পরশুরামের শালধর গ্রামের বয়োবৃদ্ধ আবুল কাশেম মোল্লা, নুরুন নবী ও আবদুল মোমিন জানান, বন্যায় পানিবন্দি হলে অনেকে চিড়া-মুড়ি নিয়ে আসে। কেউ টেকসই বাঁধ নির্মাণ করে স্থায়ী সমাধানের কথা বলে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন