পানি বাড়ছেই সিলেটের সুরমা-কুশিয়ারা ও সারি নদীর। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে সকল নদ-নদীর পানি বাড়ছে সিলেটে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেট এসব তথ্যানুযায়ী, সুরমা নদীর পানি আজ সোমবার (১৩ জুলাই) বিকেল ৩টায় কানাইঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৬ সে:মি ও সিলেট পয়েন্টে ৮ সে:মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়াও কুশিয়ারা নদীর পানি ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৪৩ সে: মিটার উপর দিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে গোয়াইনঘাটের সারি নদীর পানি ৫ সে:মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা সৃষ্ট বন্যায় সিলেটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিশেষ করে সিলেটের সদর , সীমান্তবর্তী গোয়াইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর, ফেঞ্চুগঞ্জ, বিশ্বনাথ, বালাগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ এলাকার নিম্নাঞ্চল এখন প্লাবিত।
এছাড়াও সুরমা পানি বৃদ্ধির ফলে সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পানিবদ্ধতা প্রকট আকার ধারন করেছে। কয়েকদিনের ব্যবধানে দ্বিতীয় দফায় সৃষ্ট এ বন্যায় জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। ড্রেনেজগুলোর ময়লা আবর্জনা পানির সাথে মিশে একাকার হয়ে পড়েছে। এতে করে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক নিরাপদ জীবনযাত্রা। প্লাবিত এসব এলাকায় বাঁধ ও
পাকা রাস্তাসহ বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নেওয়া লোকজন বিশুদ্ধ পানি, খাদ্য সংকট ও শৌচাগারের ব্যভহার বিড়ম্বনা দেখা দিয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকার বাঁধ, পাকা সড়ক ভেঙে যাওয়ায় মানুষ চলাচলের চরম দুর্ভোগে অসহায় এখন স্থানীয় অধিবাসীরা।
সিলেট জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সিলেট জেলার অন্তর্গত ৫টি উপজেলার একটি পৌরসভা ও ৩৭টি ইউনিয়ন এখন বন্যা কবলিত। এসব বন্যা কবলিত অঞ্চলে ২১৫ মেট্রিক টন চাল, ৫ লাখ টাকা নগদ এবং প্রায় ৯শ’ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। অন্যদিকে সিলেটের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানান ‘কানাইঘাট ও ভারতের মেঘালয়ে প্রবল বর্ষণের কারণে সুরমা নদীর পানি বেড়ে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। এর মধ্যে সিলেট নগরীও রয়েছে। নগরীর ড্রেনেজগুলোর পানি নিস্কাষন সুরমায় পতিত হয়। কিন্তু সুরমার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নগরীর ড্রেনেজগুলোরা এখন অকার্যকর। তিনি বলেন, অবশ্য আগামী চার-পাঁচ দিন পানি কমতে শুরু করবে। কিন্তু ১৯, ২০, ২১ ও ২২ জুলাই সিলেটে ভারী বর্ষণে আবারও বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।’ আর সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম জানান, বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি বন্যা কবলিত এলাকায় বিদ্যালয়গুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের দেওয়া হয়েছে নির্দেশনা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন