ভারী বর্ষন ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের তিস্তার পানি বিপদসীমার ৩০ সেঃমিঃ উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে রংপুরের ৩টি উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে প্রায় ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ভেসে গেছে ৪ শতাধিক পুকুর ও মৎস্য খামার। বানের পানিতে তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার হেক্টর জমির রবিশস্য, বীজতলা এবং আমন ক্ষেত।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গঙ্গাচড়া উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়নের চিলাখালচর, চরমটুকপুর, খলাইরচর, বিনবিনা, সাউদপাড়া, আলেকিশামত ও উত্তর কোলকোন্দ বাঁধেরধার ২ হাজার, নোহালী ইউনিয়নের বাগডোহরা, মিনার বাজার, চর নোহালী, বৈরাতী ও কচুয়ার ২ হাজার ৫’শ, লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের শংকরদহ, চর ইচলী, বাগেরহাট, চর চল্লিশসাল, বাগেরহাট আশ্রয়ণ, কাশিয়াবাড়ি চরের ৩ হাজার, গজঘন্টা ইউনিয়নের চর ছালাপাক, রামদেব, কামদেব, মহিষাশহরের ৩ হাজার, মণের্য়া ইউনিয়নের তালপট্টি, নরসিংহ, ভাঙ্গাগড়া, কিসামত, মর্ণেয়ার চর, আলাল চরের ২ হাজার ৫’শ হাজার, গঙ্গাচড়া ইউনিয়নের ধামুর বাঁধেরপাড়, গান্নারপাড়, বোল্লারপাড়ের ৩’শ ও আলমবিদিতর ইউনিয়নের পাইকান, হাজীপাড়া, ব্যাঙপাড়া এলাকার ৩’শ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
লক্ষ্মীটারী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী জানিয়েছেন, গত ৭ দিনে তিস্তার ভাঙনে তার এলাকায় ২ শতাধিক পরিবার বিলীন হয়েছে।
কোলকোন্দ ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব আলী রাজু জানিয়েছেন, তার এলাকাতেও একই অবস্থা। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৩ শতাধিক পরিবার। পানিবন্দি এসব এলাকার মানুষের মাঝে খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে মারাত্মকভাবে।
এদিকে, রংপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এনামুল কবীর, উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব রুহুল আমিন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
উপজেলা বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বন্যা কবলিত এলাকায় নতুন করে ৫০ মেট্রিক টন চাল ও শুকনো খাবার বরাদ্দ পাওয়া গেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাসলীমা বেগম জানিয়েছেন, বন্যা কবলিত এলাকা কোলকোন্দ, গজঘন্টা, লক্ষ্মীটারী, মর্ণেয়া ইউনিয়নে বানভাসী ২ হাজার পরিবারের মাঝে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, স্যালাইন, মোমবাতিসহ শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্র মতে, উজানের ঢলে রবিবার রাত ১২টায় ডালিয়ায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। সোমবার সকাল ৮টায় কিছুটা কমে ৫২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্ট হতে উজানে ভারতে তিস্তার দো-মহনীর দুরত্ব ৬৫ কিলোমিটার ও ভারতের গজরডোবার দুরত্ব ১২০ কিলোমিটার।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন