বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

কুড়িগ্রাম-ভুরুঙ্গামারী মহাসড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত

দ্বিতীয় দফা বন্যায় পানিবন্দী ৩ লাখ মানুষ

কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৫ জুলাই, ২০২০, ১১:১৯ এএম

কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। আজ সকালে সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি বিপদসীমার ৯০ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্রের চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ১০১ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্টে ৯৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুড়িগ্রামে ধরলা নদীর পানি কিছুটা কমলেও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে ব্রহ্মপূত্র নদের পানি। দ্বিতীয় দফা বন্যায় আগের তুলনায় অধিক পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। মহাসড়কসহ উপজেলা কেন্দ্রিক ৫টি জায়গায় সড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে বলে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর জানিয়েছে।

দ্বিতীয় দফা বন্যায় জেলার ৬০ ইউনিয়নের ৫২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পরেছে।নতুন করে তলিয়ে গেছে সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা, ঘোগাদহ ও পাঁচগাছী ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম।
এই শীর্ষ কর্মকর্তাজানান, জেলার ৫টি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের উপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এরমধ্যে কুড়িগ্রাম-নাগেশ্বরী সড়ক, রৌমারী-তুরা সড়ক, সোনাহাট-মাদারগঞ্জ সড়ক, ভুরুঙ্গামারী-সোনাহাট সড়ক ও ভিতরবন্দ-মন্নেয়ারপাড় সড়কের কিছু অংশ পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বালির বস্তা ও জিওব্যাগ দিয়ে ক্ষতি কমানোর চেষ্টা করছি।

নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় লোকজন পরিবার নিয়ে বাঁধের রাস্তা ও মহাসড়কে আশ্রয় নিয়েছে। প্রথম দফায় যারা আক্রান্ত হয়েছিল, তারা ১৮দিন ধরে রাস্তার ধারে পলিথিন দিয়ে শেড করে সেখানে আশ্রয় নিয়েছে। রাতভর মুসলধারে বৃষ্টি ও বাতাসের কারণে বানভাসীরা চরম দুর্ভোগের মধ্যে রাত কাটিয়েছে।
কুড়িগ্রাম সদরের পাটেশ্বরী মহাসড়কের দু’পাশেপ্রায় ৫শতাধিক পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। এদের মধ্যে শহিদুল, মেরিনা ও আনোয়ারা অভিযোগ করেন, বন্যার কারণে কাজকাম বন্ধ। সরকার থেকে এখনো তারা কিছুই পাননি। শুধুমাত্র সেনাবাহিনী থেকে ত্রাণ পাওয়া ছাড়া আর কোন ত্রাণ পান নি বলে অভিযোগ করেছেন।
সদরের ধরলা ব্রীজসংলগ œমহাসড়কে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় শতাধিক পরিবার। এরমধ্যে স্কোয়ার সেমি বাঁধে প্রায় ৫৫টি পরিবারের জন্য একটি নলকূপ ও একটি লেট্রিন স্থাপন করা হয়েছে। নারীদের জন্য রাখা হয় নি আলাদা ব্যবস্থা।গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে সারাক্ষণ যানচলাচল অব্যাহত থাকায় সন্তানদের নিয়ে ভীষণ আতংকে রয়েছেন বাবা-মায়েরা।

নাগেশ্বরীর হাছনাবাদ ইউনিয়নের চন্ডিপুরএলাকার মালেক, সোহান ও রহমান জানান, চারদিকে পানি গরু নিয়ে সড়কে এসেছি। জমানো খড় দিয়ে চালাচ্ছি। কিন্তু কতদিন এভাবে কাটবে। গরু-ছাগল নিয়ে ভীষন বিপদে আছি। সদরের ভোগডাঙ্গা পাটেশ্বরী এলাকার কৃষক মজিবর, কাচুদ্দি, শমসের ও জয়নাল জানান, উঁচ ুভিটায় বীজতলা লাগিয়েছি। পানি ওঠায় সেগুলোও বিনস্টের পথে। এভাবে পানিআটকে থাকলে পরিবার পরিজন নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।
জেলাপ্রশাসক মো: রেজাউলকরিম জানিয়েছেন, পানিবন্দী মানুষ কে উদ্ধারে প্রয়োজনীয় নৌকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া জেলায় ৪৩৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তত রাখা হয়েছে। ৪০০ মে. টন চাল, ১১ লাখ টাকা ও ৩ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার উপজেলা পর্যায়ে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন