শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

আর্মেনিয়া-আজারবাইজান সীমান্ত সংঘর্ষে আরও ১২ জন নিহত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ জুলাই, ২০২০, ৪:০১ পিএম

সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া সীমান্তে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আরও ১২ জন নিহত হয়েছে। উভয়পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশ, অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘন ও গোলাবর্ষণের অভিযোগ করেছে। দেশ দুটির উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তে গত রোববার থেকে দুপক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়ে মঙ্গলবার তৃতীয় দিনে গড়ায়।
আর্মেনীয় নৃগোষ্ঠী অধ্যুষিত আজারবাইজানের নাগোর্নো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে এই দুই সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে, তবে এবারের সংঘর্ষের ঘটনাটি ওই বিরোধপূর্ণ অঞ্চল থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার উত্তরে আর্মেনিয়ার তাভুশ অঞ্চলে ঘটেছে। আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, সংঘর্ষে তাদের সাতজন সৈন্য নিহত ও আরও পাঁচজন আহত হয়েছেন। আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তাদের চার সৈন্য ও দুই পুলিশ কর্মকর্তা সংঘর্ষে আহত হয়েছেন।
আজারবাইজানের উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী কেরেম ভেলিয়েভ জানিয়েছেন, আজারবাইজান সেনাবাহিনীর একজন মেজর জেনারেল ও একজন কর্নেলসহ সাত সৈন্য নিহত হয়েছেন। শত্রুপক্ষের ওপর ‘ধ্বংসাত্মক আঘাত’ হানা হয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ ‘উসকানি’ দেয়ার জন্য আর্মেনীয় নেতৃত্বকে অভিযুক্ত করেছেন।
অপরদিকে আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আর্মেনিয়া সেনাবাহিনীর একজন মেজর ও একজন ক্যাপ্টেনসহ চার সৈন্য নিহত হয়েছেন।
এদিকে প্রতিবেশী এই দেশ দুইটির সংঘর্ষকে ঘিরে বিশ্ব বাজারে তেল ও গ্যাস সরবরাহের করিডর হিসেবে ব্যবহৃত দক্ষিণ ককেশাস অঞ্চল অস্থিতিশীল হয়ে ওঠার হুমকিতে পড়তে পারে, এমন সম্ভাবনার কারণে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের সংঘর্ষ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলও উদ্বিগ্ন।
রাশিয়া দুই পক্ষকে অস্ত্রবিরতিতে যাওয়ার ও সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে। মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভূমিকা পালনে মস্কো প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ।
সামরিক জোট ন্যাটো সংঘাত আরও ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে দেশ দুটিকে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিজেপ তায়িপ এরদোয়ান বলেছেন, আজারবাইজানের সঙ্গে তুরস্কের শক্তিশালী ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক মিত্রতা থাকায় এবং উভয় দেশ যৌথ জ্বালানি প্রকল্পে যুক্ত থাকায় আজারবাইজানের বিরুদ্ধে কোনো হামলা হলে তুরস্ক দেশটির পাশে দাঁড়াবে বলে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সহিংসতার নিন্দা করে তাৎক্ষণিকভাবে শক্তির ব্যবহার বন্ধের জন্য দুই পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। তারা উভয়পক্ষের মধ্যে শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তির জন্য নেয়া ‘উদ্যোগে সক্রিয়ভাবে শামিল থাকবে’ বলে জানিয়েছে।
১৯৯৪ সালে দুই পক্ষের মধ্যে অস্ত্রবিরতি হলেও আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া ধারাবাহিকভাবে পরস্পরের বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ করে আসছে। নাগোর্নো-কারাবাখের এ পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক মহলের জন্যও উদ্বেগের বিষয়। কারণ পাইপলাইনে করে বিশ্ব বাজারে তেল ও গ্যাস সরবরাহের করিডর হিসেবে ব্যবহৃত এই অঞ্চলটিকে অস্থিতিশীল করে তোলার হুমকি তৈরি করে এই অঞ্চলকে ঘিরে প্রতিবেশী দেশ দু’টির দ্বন্দ্ব।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন