বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

৩০৫টি বাঁধ এখনো ঝুঁকিপূর্ণ

প্রতিবছর মেরামত খরচ কোটি কোটি টাকা

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ১৯ জুলাই, ২০২০, ১২:০১ এএম

প্রথম সুপার সাইক্লোন আম্পানে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলের বেড়িবাঁধ এলাকার মানুষ। এ ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবে দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পড়ে যায়। এর মধ্যে কয়েক মাস ধরে করোনা মহামারী চলছে। তার পরে গত ২৪ জুন থেকে বন্যা দেশের ১৮ জেলা প্লাবিত হয়েছে। নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে শত শত বাড়িঘর।

বন্যার পানি থেকে বাঁচতে লাখ লাখ মানুষ উঁচু স্থান এবং বেড়িবাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। দেশের ৫০০ এলাকায় ৩৬০টি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ রয়েছে। আর সাতক্ষীরা এলাকায় ঝুঁকিতে থাকা ৩৮০ কিলোমিটার এলাকায় জিও ব্যাগ দিয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া এবং ৫৫টি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ মেরামত করা হয়েছে। এখনো ৩০৫টি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ মেরামত কাজ শুরু হয়নি। প্রতিটি বাঁধ বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের প্রভাষক এনায়েত চৌধুরী ইনকিলাবকে বলেন, বন্যার কারণে অনেক বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব বাঁধের রক্ষণাবেক্ষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এ প্রসঙ্গে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম ইনকিলাবকে বলেন, দেশের ৫০০ এলাকায় ৫৫টি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের কাজ বর্ষা মৌসুমের আগেই মেরামত ও পুর্ননির্মাণ করা হয়েছে। বন্যা শেষ হলে বাকি কাজগুলো শুরু করা হবে।

নি¤œমানের কাজ করায় প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রতিবছর বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দিয়ে বাঁধগুলো কোনোরকমে মেরামত করা হয়। ২০০৮ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলার পর ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ সংস্কার করা হলেও সেগুলো টেকসই হয়নি। এখনো পুর্ননির্মাণ কাজ শেষ হয়নি ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের। দুর্বল বাঁধের কারণে বর্ষা মৌসুমেই পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে। গ্রীষ্ম মৌসুমেও মাঝেমধ্যে বাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানি অনেক এলাকায় স্থায়ী পানিবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে এসব বাঁধ জীর্ণশীর্ণ হয়ে পড়েছে। চলতি বন্যায় যেগুলো ভেঙে সহজেই প্লাবিত হতে পারে অনেক এলাকা।

জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক প্রকৌশলী এ. এম. আমিনুল হক ইনকিলাবকে বলেন, আম্পানে সবচেয়ে পর আমরা ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত করেছি। কয়েকটি জেলায় এখনো কাজ চলছে। অনেক ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা আছে। উপক‚লীয় এলাকায় ৪ হাজার ৭০০ কিলোমিটার বাঁধ রয়েছে। সব জায়গায়ই কিছু ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ রয়েছে। এমন জায়গা আছে যেখানে স্বাভাবিক জোয়ারেও বাঁধ ভেঙে যায়। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনার কাজ আমরা শেষ করেছি। তিস্তা নদী খননের জন্য চীনের সাথে একটি চুক্তি হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় উত্তরাঞ্চলের অনেক রয়েছে। সেগুলো মধ্যে, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, রংপুর, লালমনিরহাট, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল রয়েছে।

ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া ও ফুলগাজী উপজেলাধীন দক্ষিণ সতর নদীর ক‚ল ও মনিপুর এলাকা মুহুরী নদীর বাম তীর ভাঙন রক্ষা প্রকল্প। বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশ উপক‚লীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্প (১ম তীর সংরক্ষণ ভোলা জেলার দৌলতখান ও বোরহানউদ্দিন উপজেলায় মেঘনা নদীর ভাঙন হতে পোল্ডার তীর সংরক্ষণ প্রকল্প। পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলাধীন সাবেক নাজিরগঞ্জ ও দইখাতা ছিটমহল এলাকায় করতোয়া নদীর বাম তীর বরাবর নদী তীর সংরক্ষণ কাজ প্রকল্প লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলাধীন সাবেক ১১৯ নং বাঁশকাটা ছিটমহল এর ঘোষপাড়া, দয়ালটারী ও বেস্টারী এলাকায় ধরলা নদীর বাম ও ডান তীর বরাবর নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্প তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ শুরুই করতে পারেনি।

চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলায় হালদা নদীর উভয় তীরের ভাঙ্গন হতে বিভিন্ন এলাকা রক্ষাকল্পে তীর সংরক্ষণ কাজ প্রকল্পের কাজ, টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার উপজেলাধীন ধলেশ্বরী নদীর বাম তীরবর্তী গাছ-কুমুল্লী বারপানিয়া এবং নাগরপুর উপজেলার ঘোনাপাড়াসহ বাবুপুর-লাউহাটি প্রকল্প এলাকায় নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ, নোয়াখালী জেলার হাতিয়া ও সুবর্ণচর উপজেলাধীন স্বর্ণদ্বীপ (জাহাজ্যার চর) এ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহ মেঘনা নদীর ভাঙন হতে রক্ষাকল্পে জিওব্যাগ দ্বারা নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্প বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের কাজ, জামালপুর জেলার ইসলামপুর উপজেলায় যমুনা নদীর বামতীর রক্ষাকল্পে হারগিলা নামক স্থানে ক্রসড্যাম নির্মাণ প্রকল্প শহর রক্ষা প্রকল্পের কাজ, সিরাজগঞ্জ জেলায় যমুনা নদী হতে পুনরুদ্ধারকৃত ভূমির উন্নয়ন এবং প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চল রক্ষা প্রকল্প, জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ি উপজেলাধীন যমুনা নদীর বাম তীর সংরক্ষণের মাধ্যমে ভ‚য়াপুর-তারাকান্দি সড়ক রক্ষা প্রকল্পসহ অনেক প্রকল্পের কাজ শুরু করতে পারেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে বন্যা দেখা দিলেই নড়ে বসে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তার আগে কিছু করে না বলে সংশ্লিষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ তুলেছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
জুবাইদা ইসলাম ১৮ জুলাই, ২০২০, ১২:৪৮ এএম says : 0
আসুন আমরা সকলেই অসহায় বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াই।
Total Reply(0)
Nirbak Jamal ১৮ জুলাই, ২০২০, ১২:৪৮ এএম says : 0
বাংলাদেশ বলে কথা।
Total Reply(0)
Nirbak Jamal ১৮ জুলাই, ২০২০, ১২:৫০ এএম says : 0
দিনাজপুরের বিভিন্ন এলাকায় বাঁধ ভেঙে গেছে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে। কুড়িগ্রামের কাঁঠালবাড়ি, রাজারহাটের কালুয়া ও ফুলবাড়ীর গোড়কমণ্ডল এলাকায় বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
Total Reply(0)
হৃদয়ের ভালোবাসা ১৮ জুলাই, ২০২০, ১২:৫১ এএম says : 0
সারা দেশে কয়েক লাখ মানুষ এখন পানিবন্দী।
Total Reply(0)
তোফাজ্জল হোসেন ১৮ জুলাই, ২০২০, ১২:৫৬ এএম says : 0
করোনার মধ্যে বন্যার ভয়াল থাবা। হে আল্লাহ তুমি আমাদের একমাত্র রক্ষাকারী।
Total Reply(0)
দর্শন ই ইসলাম ১৮ জুলাই, ২০২০, ১২:৫৭ এএম says : 0
আল্লাহ ক্ষতিগ্রস্তদের হেফাজত করুন। মানুষের কি ভয়াবহ অবস্তা্
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন