মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের দখলে ঢাকা-বোনপোল সড়কের সড়ে ৩ কি.মি.

উচ্ছেদ অভিযান শুরু

গোপালগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ জুলাই, ২০২০, ৬:৫০ পিএম

ঢাকা-বেনাপোল মহাসড়কের গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার কালনা-ভাটিয়াপাড়া অংশের সাড়ে ৩ কিঃ মিঃ থেকে বালু ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদে অভিযান শুরু হয়েছে।
আজ রোববার ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ওই বালু ব্যবসায়ীদের রাস্তার পাশে উচ্ছেদের কাজ শুরু হয়। এছাড়া সড়কের পাশে চাতালে বালু আনার পাইপ ভ্রাম্যমান আদালতের লোকজন কেটে দিয়েছে। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন কাশিয়নী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বিার আহমেদ । এসময় গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথের উপ নির্বাহী প্রকৌশলী সাকিরুল ইসলাম সাথে ছিলেন।
এ সড়কের দু’ দুইপাশ দখল করে শতাধিক ব্যবসায়ী বালু রাখায় সড়কটির ৩ কিঃ মিঃ যানবাহন চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। অসংখ্য বালু বোঝাই ট্রাক চলাচলের কারণে সড়কটি ভেঙ্গে দেবে গেছে। এতে সড়কটিতে ছোটবড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। পানি- মাঁটি মিলে কাদাঁয় সড়কটি মরন ফাঁদে পরিনত হয়েছে। ওই সড়ক দিয়ে পেনাপোল, যশোর, নড়াইল, খুলনা সহ ১০ জেলায় চলাচলকারী যানবাহন ও যাত্রী সাধারনের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সড়কে দেবে গিয়ে বিকল হয়ে পড়েছে অসংখ্য যানবাহন । বালু ব্যবসায়ীরা এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় কর্তৃপক্ষ বার বার পদক্ষেপ গ্রহণ করেও তাদের উচ্ছেদে ব্যর্থ হয়েছে। রোববার সড়ক বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসনের যৌথ অভিযানে করেছে এতে ওই এলাকার অন্তত ১০ টি বালুর চাতাল অপসারন করেছে ।
গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, কালনা-ভাটিয়াপাড়া সাড়ে ৩ কিলোমিটার সড়কে ২০১০ সালে দরপত্র আহবানের মাধ্যমে সর্বশেষ কাজ করা হয়। অত্যন্ত ব্যস্ততম ওই সড়কটির সংস্কারের কাজ প্রতি বছর করেন সড়ক ও জনপথ বিভাগ । কিন্তু অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা সড়কটির দু’পাশে বালু রাখার কারনে টিকিয়ে রাখা যাচ্ছিনা বলে জানান ওই বিভাগের কর্মকর্তারা। দুই পাশে রাখা বালুর পানিতে সড়কের সার্বক্ষনিক কাদাঁয় কর্দমাক্ত হচ্ছে । সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে । অন্যদিকে রোদের সময় বালু বাতাসে মিশে সড়কে চলাচল যানবাহনসহ পায়ে হাটতে জনসাধর চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ।
এ সড়কে চলাচলকারী কাশিয়ানী উপজেলার বুধপাশা গ্রামের হাবিব শেখ (৫২) , নড়াইল জেলার লোহগড়া উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামের অলিয়ার মোল্লা (৪৮) বলেন, ভাটিয়াপাড়া মোড় থেকে কালনা ঘাট পর্যন্ত রাস্তার দু’ পাশে বড় চাতাল করে মোটা পাইপের সাহায্যে বালু মজুদ করে বালূ ব্যবসায়ীরা । পাইপ দিয়ে তীব্র গতিতে পানি বের হওয়া কারনে রাস্তার মাটি ভেঙ্গে যাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা রাস্তার দু’ পাশে বালুর পাহার করে রেখেছে। তাদের লোকজন এক্সাভেটর ( বেকু) দিয়ে ট্রাকে বালু ভর্তি করছে। রাস্তার দু’ পাশে চাতাল গুলোতে বালুর স্তর সড়কে থেকে অনেক উচু। ওই সব চাতাল থেকে বালুর পানি রাস্তায় এসে জমা হচ্ছে । ওই পানির কারনে রাস্তার অনেকাংশ ভেঙ্গে ডেবে গেছে। অনেক স্থানে কাদাঁ সৃষ্টি হয়েছে । এর মধ্যে জঙ্গলমুকুন্দপুর এলাকার আধা কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা বিরাজ করছে। এখানে ঝুঁকি নিয়ে হেলেদুলে চলছে যানবাহন। চলতে গিয়ে বিকল হযে পড়ে আছে অনেক যানবাহন । কখনো কখনো ঘটছে দূর্ঘটনা। সড়ক বিভাগ থেকে কিছু বালু ও ইটের খোয়া ফেলে বেশ কয়েকবার খানাখন্দ ঠিক করে। কিন্তু দু’এক দিন পর একই অবস্থার সৃষ্টি হয়।
কাশিযানীর জঙ্গলমুকন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা রনজু শেখ বলেন, এ সড়কে চলাচল করতে আমাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। বৃষ্টি হলে সড়কটি কাদা ও পানিতে একাকার হয়ে যায়। চলচল করা যায়না। রোদ হলে বাতাসে বালু ওড়ে। আমরা এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চাই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সড়ক থেকে বালু ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদে অভিযান শুরু করেছেন। আমরা তার এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। এ অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে।
গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথের উপ নির্বাহী প্রকৌশলী ( কাশিয়ানী দ্বায়ীত্বে) সাকিরুল ইসলাম বলেন, এ সড়কটির ভাটিয়াপাড়া-কালনা অংশে প্রায় ১শ বালুর চাতাল আছে । উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ১০ টি বালুর চাতাল সড়ক থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। দু’এক দিন পর আবার এ অভিযান চালানো হবে । এ উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদ বলেন , এ সড়কটি র্দীঘদিন যাবত সাধারন মানুষের জন্য মরন ফাঁদে পরিনত হয়েছে । কিছু কিছু বালুর ব্যবসায়ী এই সড়কটির এমন বেহাল দশা করেছে । তাই আমার এখানে বালুর চাতাল উচ্ছেদে অভিযান শুরু করেছি। এরজন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। # মোঃ অহেদুল হক, ১৮.০৭.২০২০

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন