শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

কনস্যুলেট সেবা নিয়ে সউদী প্রবাসীদের বিড়ম্বনা বাড়ছে

রাষ্ট্রদূতের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার হুমকি !

শামসুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ২২ জুলাই, ২০২০, ২:৪০ পিএম

করোনা মহামারীতেও শ্রমবাজারের সর্বোচ্চ দেশ সউদী আরবে কনস্যুলেট সেবা নিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের বিড়ম্বনা দিন দিন বাড়ছে। সউদী আরব অনেক বড় দেশ বিধায় দূর দূরান্তের প্রবাসীদের নিকট সহজে পাসপোর্ট সেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য এটুআই প্রকল্পের আওতায় রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ ইডিসি নামক প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের অফিসের অদূরে শিগগিরই পাসপোর্ট সেবা দিতে ইডিসি কেন্দ্র চালু করা হচ্ছে। এতে করোনা মহামারীর দুর্দিনে অসহায় প্রবাসী কর্মীদের পাসপোর্ট হাতে পেতে অতিরিক্ত ৪০ রিয়াল এবং গাড়ী ভাড়া গুনতে হবে।

জেদ্দা থেকে গতকাল মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা শেখ ফজলুল কবীর ভিকু ও মাহামুদুল হাসান শামীম ইনকিলাবকে বলেন, এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব কারো হাতে তুলে দেয়ার আগে অবশ্যই তাদের রাজনৈতিক পরিচয় এবং অতীত ইতিহাস পুঙ্খানুপুঙ্খ রুপে যাচাই করা প্রয়োজন ছিল। জেদ্দার এই নতুন ইডিসি সেবাকেন্দ্রের দায়িত্ব এমন কিছু ব্যক্তির হাতে তুলে দেয়া হয়েছে যারা ইতোপূর্বে প্রথম এম আর পি পাসপোর্ট ইস্যুর সময় আইরিশ কোম্পানির সহযোগি এজেন্সি হিসেবে কাজ করেছে। এরাই হাজার হাজার রোহিঙ্গার হতে লক্ষ লক্ষ রিয়ালের বিনিময়ে বাংলাদেশের পাসপোর্ট তুলে দিয়েছিল। ইস্যুয়েন্স ব্যতিরেকে কয়েক হাজার পাসপোর্ট প্রবাসীদের মধ্যে বিলি করেছে। এই পাসপোর্টধারীরা এখন তাদের পাসপোর্টগুলো রিইস্যু করতে পারছে না। এ ধরণের কলংকজনক অতীত ইতিহাস থাকার পরেও কি কারণে রাষ্ট্রদূত তড়িঘড়ি একই কোম্পানির হাতেই পাসপোর্টের কাজ তুলে দিয়েছেন তা’ বোধগম্য নয়।

তারা বলেন, জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটে প্রায় ৮৫ জন কর্মকর্তা থাকার পরেও পাসপোর্টের মত স্পর্শকাতর সেবা কখনোই দ্বিতীয় পক্ষের মাধ্যমে প্রদান করা ঠিক হয়নি। এই দায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যক্তিরা ঢাকায় একটি বিতর্কিত রাজনৈতিক দলের পরিচালিত প্রতিষ্ঠানের জড়িত রয়েছে বলেও প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতারা অভিযোগ করেন।
ইতোপূর্বে জেদ্দাস্থ কনস্যুলেট প্রতি সপ্তাহে বিভিন্ন প্রদেশে পাসপোর্ট সেবা দিত। বর্তমানে ভারতসহ অন্যান্য দেশের দূতাবাস সেই সেবা দিলেও জেদ্দা কনস্যুলেট কোন রহস্যময় কারণে পাসপোর্ট ট্যুর বন্ধ রেখে এই প্রতিষ্ঠানকে প্রবাসীদের পাসপোর্ট সংগ্রহের কাজ দিয়েছে। প্রবাসীদের অভিযোগ আসলে ২০১৫ সালে তাদের দেয়া রোহিঙ্গাদের পাসপোর্টগুলো পুনরায় রিইস্যুর জন্যেই আবার ভিন্ননামে এই প্রতিষ্ঠানের সৃষ্টি করা হয়েছে। জেদ্দাস্থ কনসাল জেনারেল মো.ফয়সল আহমেদ পাসপোর্ট রিইস্যু সেবা বন্ধ করে দিয়ে গরীব প্রবাসীদের অতিরিক্ত টাকা সার্ভিস চার্জসহ ইডিসির মাধ্যমে পাসপোর্ট রিনিউ করতে নোটিশ জারি করেছেন। অভিযোগ উঠেছে জেদ্দাস্থ কনসাল জেনারেল নতুন ইডিসি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রবাসীদের পাসপোর্ট সেবা নেয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠছেন। আজ বুধবার জেদ্দাস্থ সিজি ফয়সল আহমেদের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেনি।

গত ৬ জুলাই জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দশ সহযোগি সংগঠন নিয়ে গঠিত মোর্চার প্রধান সমন্বয়ক মাহমুদ হাসান শামীমের নেতৃত্বে স্বাধীনতা বিরোধী জামাত এর পৃষ্ঠপোষক নিয়ে গঠিত অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের হাতে ইডিসি সেবাকেন্দ্রের দায়িত্ব দেয়ার প্রতিবাদে এক সংবাদ সম্মলনের আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলনে ইডিসি কেন্দ্র সাময়িক স্থগিত এবং তদন্ত করে স্বাধীনতা বিরোধী অসাধু ব্যবসায়ী চক্রের কাছে দেয়া দায়িত্ব বাতিলের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামান করা হয়।
রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ উল্লেখিত সংবাদ সম্মেলন আয়োজনকারী আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ স্মারক নং : বিইআর /এএমবি-১/২০২০ (১৬৭) জারি করেছেন। ঐ নোটিশে স্বাধীনতা বিরোধী অসাধু ব্যবসায়ীদের সর্ম্পকে অভিযোগের তথ্য প্রমাণাদি কনসাল জেনারেলের মাধ্যমে জমা দেয়ার নিদের্শ দেয়া হয়। রাষ্ট্রদূত সম্পূর্ণ এখতিয়ার বহির্ভূত চিঠি দেয়ায় সংবাদ সম্মেলন আয়োজক আওয়ামী লীগ নেতারা তার বিরুদ্ধে শিগগিরই আইনি পদক্ষেপ নেয়ার হুশিয়ারি দিয়েছেন। এ ব্যাপারে আজ বুধবার রিয়াদে রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ’র সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি দুই ঘন্টা পড়ে যোগাযোগ করতে বলেন।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন