বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সাহাবউদ্দিন হাসপাতালে নাটের গুরু ফয়সাল

বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য চোরাইপথে আসতো চীনের র‌্যাপিড কিট

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ জুলাই, ২০২০, ১২:০০ এএম

রাজধানীর সাহাবউদ্দিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রতারণার মূল নায়কই হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফয়সাল আল ইসলাম। তার নির্দেশেই বিভিন্ন কৌশলে প্রতারণা করতেন হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার, নার্স, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। শুধু তাই নয়, করোনা সঙ্কটেও রোগীদের সাথে প্রতারণার কৌশল নির্ধারণ করতে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন তিনি। ওই বৈঠকের পর থেকেই করোনা রোগীদের ভুয়া রিপোর্ট দেয়া শুরু হয়। এছাড়াও চোরাচালানের মাধ্যমে চীন থেকে র‌্যাপিড কিটও এনেছেন তিনি। রিমান্ডে থাকা ফয়সাল ও তাদের সহযোগিদের কাছ থেকে এমন তথ্য বেরিয়ে আসছে। তবে এ ঘটনায় তাদের কারা সহযোগিতা করছেন তাদের নামও বলছেন তারা।

পুলিশ জানায়, গত রোববার সাহাবউদ্দিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অভিযান চালায় র‌্যাব। এ সময় হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আবুল হাসনাত ও স্টোরকিপার শাহরিজ কবিরকে আটক করা হয়। পরদিন সোমবার দিনভর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ওই দিন মধ্যরাতে হাসপাতালের এমডি ফয়সাল আল ইসলামকে বনানী থেকে আটক করা হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন র‌্যাবের নায়েব সুবেদার ফজলুল বারী। ওই মামলায় গত মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম আশেক ইমামের আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও গুলশান থানার এসআই মশিউর রহমান। শুনানি শেষে তাদের বিরুদ্ধে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল রিমান্ডে নিয়ে তাদের দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এ সময় তারা চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য দিয়েছেন। তবে তদন্তের স্বার্থে এসব তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে না বলে জানান সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা।

তদন্ত সূত্রে জানা যায়, গতকাল দিনভর হাসপাতালের এমডি ফয়সাল আল ইসলাম, সহকারী পরিচালক ডা. আবুল হাসনাত ও স্টোরকিপার শাহরিজ কবিরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এ সময় ফয়সাল বার বার প্রতারণার বিষয়টি এড়িয়ে যান। তবে বাকি দুইজনই প্রতারণার কথা স্বীকার করেছেন। এমনটি প্রতারণার বিভিন্ন কৌশলই পুলিশের কাছে বলেছেন তারা। শুধু তাই নয়, হাসপাতালের এমডি ফয়সালের নির্দেশেই প্রতারণা ও জালিয়াতির কাজ করা হতো বলে জানান তারা।

সূত্র আরো জানায়, ফয়সালের নির্দেশে হাসপাতালের কর্মকর্তরা চোরাচালানের মাধ্যমে চীন থেকে র‌্যাপিড কিট আনেন। ওইসব র‌্যাপিড টেস্ট কিট ব্যবহারের মাধ্যমে ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করেতেন ডাক্তার ও নার্সরা। এভাবে জালিয়াতি করে হাসপাতালটি বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নেয়া। এক পর্যায়ে তাদের বিরুদ্ধে করোনায় ভুয়া রিপোর্ট ও অতিরিক্ত বিল বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠায় হাসপাতালের মূল সার্ভার থেকে দুর্নীতির তথ্যগুলো মুছে দেয়ার নির্দেশ দেন সেই ফয়সাল। পরে সেই তথ্যগুলো মুছে ফেলা হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও গুলশান থানার এসআই মশিউর রহমান দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। টানা পাঁচ দিন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তা হলে এ ঘটনার সাথে কে বা কারা জড়িত, তাদের সবার নাম জানা যাবে। পরে তাদেরও গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
উল্লেখ্য, এক বছর আগে সাহাবউদ্দিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়। সম্প্রতি লাইসেন্স নবায়ন করতে হাসপাতল কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ নির্ধারিত ফি জমা দিয়েছে। মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়টি এখনও প্রক্রিয়াধীন। মূলত এ কারণেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে ১৫ দিনের সময় চায়। না হয় হাসপাতালটি সিলগালা করা হতো বলে জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক আশিক বিল্লাহ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Abu Bakkar Siddique ২৩ জুলাই, ২০২০, ১:৩১ এএম says : 0
এটাই হওয়ার কথা।জনস্বাস্থ্যের মতো স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান যখন উপেক্ষিত হয়,দূর্নীতি তখন সীমাহীন হওয়াই স্বাভাবিক।
Total Reply(0)
Anis Farrokh ২৩ জুলাই, ২০২০, ১:৩১ এএম says : 0
চলতে থাকুক। তবে উপরের গুলো না ধরলে কোনও কাজ হবেনা।
Total Reply(0)
Amin Mohammad ২৩ জুলাই, ২০২০, ১:৩২ এএম says : 0
ক্রস ফায়ার তুমি কোথায় হারিয়ে গেলা?
Total Reply(0)
Humayun Kabir Jiku ২৩ জুলাই, ২০২০, ১:৩২ এএম says : 0
মানুষের মৌলিক চাহিদার ভেতর অন্যতম স্বাস্থ্য ও শিক্ষা,আর এই দুইটা নিয়ে যারা ব্যবসা করে তাদেরকে প্রকাশ্য ফায়ারিং স্কোয়াডে নিয়ে গুলি করা উচিত।
Total Reply(0)
Prodip Roy ২৩ জুলাই, ২০২০, ১:৩৩ এএম says : 0
এভাবে কতজন কে গ্রেপ্তার করবেন? যাকেই দায়িত্ব দিবেন সেই চুরি করবে। কারন সবাই তো চোর।
Total Reply(0)
Sonjoy Bishnu ২৩ জুলাই, ২০২০, ১:৩৩ এএম says : 0
এই সব দূর্নীতি বাজ দের চেহারা বা পোস্টেড ছবি দেখলে মনে হয় এরা বিরাট ব্যক্তিত্ত সম্পন্ন।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন