চালকের অদক্ষতা ও উদাশীনতা সহ নদীর নাব্যতা সংকটে ঢাকা থেকে বরিশাল মুখি দুটি বেসরকারী যাত্রীবাহী নৌযানের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন যাত্রী অহত হয়েছে। ভোলা ও বরিশালের মধ্যবর্তি ইলিশা পয়েন্ট এলাকার সরু চ্যানেলের ঐ সংঘর্ষে এমভি সুন্দরবনÑ১০ ও এমভি মানামী নামের নৌযান দুটির ব্যপক ক্ষতি হয়েছে।
বুধবার রাত ৯টার দিকে ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে নৌযান দুটি বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ২টার দিকে মেঘনার ইলিশা পয়েন্ট এলাকা অতিক্রমকালে ঐ সংঘর্ষে দুটি নৌযানেরই ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বৃহস্পতিবার নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের চীফ নটিক্যাল সার্ভেয়ার ছাড়াও বিআইডব্লিউটিএ’র দায়িত্বশীল কর্মকর্তাগন পরিদর্শন করে দুটি নৌযানেরই যাত্রা স্থগিত করেছেন।
একাধীক সূত্র জানিয়েছে, ঢাকাÑবরিশাল নৌপথের মিয়ার চরের কাছে দিন পাঁচেক আগে একটি পণ্যবাহী নৌযান ডুবে যাওয়ায় চ্যানেলটি বন্ধ ঘোষনা করায় বিকল্প নৌপথে নৌযোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। মিয়ারচর চ্যানলের পরিবর্তে বর্তমানে যাত্রীবাহী সব লঞ্চগুলোকে ভোলার ইলিশা লাল বয়া পয়েন্ট ব্যাবহার করতে হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ২টার দিকে সুন্দরবন-১০ নৌযনটি ইলিশা লাল বয়া পয়েন্ট অতিক্রম করে উলানিয়ায় প্রবেশকালে নাব্যতা সংকটে আগে থেকেই এমভি মানামীর মাস্টারকে সতর্ক করা হয়। সুন্দরবন লঞ্চের মাস্টার এর ভাষ্যমতে তার সতর্কতা উপেক্ষা করে মানামী ওভারটেক করার পর ডুবোচরে আটকে পরে। সে সময় তিনি মানামীর ঠিক পেছন থেকে ইলিশা লাল বয়া পয়েন্ট থেকে উলানিয়ার দিকে মোর ঘুরছিলেন।
মানামী’র মাস্টারও একই সময় সজোরে পেছনে চালিয়ে চরামুক্ত হয়ে সুন্দরবন-১০’এর পেছনের বাম পাশে আছড়ে পরে। এমনকি মানামী পেছনের চলার সময় একাধিকবার সতর্ক করার পরেও তা উপেক্ষার কারনে এই দূর্ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেন সুন্দরবন-১০ লঞ্চের মাস্টার মো. মজিবর রহমান। করোনার কারনে যাত্রী কম থাকায় কোন প্রানহানী হয়নি বলেও জানান তিনি। তবে এ সংঘর্ষে সুন্দরবন-১০’এরই ক্ষতির পরিমান ১০ লক্ষ টাকা বলে দাবী করেন নৌযান কতৃপক্ষ।
অপরদিকে মানামী নৌযানের মাস্টার সুন্দরবন-১০’এর অভিযোগ অসত্য দাবী করে ভোলার ইলিশার লাল বয়া পয়েন্ট অতিক্রমকালে নদীর নাব্যতার কারনে তার লঞ্চ চরে আটকা পরার কথা জানান। এসময় ডান পাশ থেকে কাটিয়ে যাওয়ার মত যথেষ্ট স্থান থাকা সত্বেও সুন্দরবন-১০ লঞ্চটি মোর ঘুরতে গিয়ে এমভি মানামীর পেছনের ডান পার্শের নিচের অংশে আঘাত করে বলে অভিযোগ করেন।
এ ব্যপারে বিঅইডব্লিউটিএ’র নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপ-পরিচালক মো. আজমল হুদা মিঠু সরকার জানান, নদীর নাব্যতার কারনে দুর্ঘটনার পরিস্থিতি তৈরি হয়ে থাকতে পারে। তবে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে বলে জানিয়ে কারো অনিয়ম বা ত্রুটি প্রমানিত হলে নৌ-নিরাপত্তা আইনের আওতায় ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন