করোনাভাইরাসের কারণে চলতি বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্থগিত হতে যাচ্ছে, এমনটা কয়েকদিন থেকে আভাস দিচ্ছিল খোদ আয়োজক দেশ অস্ট্রেলিয়াও। অবশেষে গত সোমবারই আইসিসি থেকে আসে আনুষ্ঠানিক ঘোষনা। এর আগে পাকিস্তানের আয়োজনে হতে যাওয়া এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টিও স্থগিত হয়ে যায়।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্থগিত করে দিয়ে সেই একই সময়ে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়ায় বেজায় চটেছেন সাবেক পাকিস্তানি পেসার শোয়েব আখতার। এই দু’টি বৈশি^ক আসর স্থগিত করে কেবল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের স্বার্থ দেখা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। এক ইউটিউব শোতে হাজির হয়ে পাকিস্তানি গতিতারকা জানান ক্রিকেটের বৃহত্তর স্বার্থে এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপ দুটি টুর্নামেন্টই আয়োজন করা উচিত ছিল, ‘অবশ্যই এশিয়া কাপ আয়োজন করা উচিত ছিল। ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি হতে পারত, দারুণ সুযোগ ছিল। কিন্তু না হওয়ার পেছনে অনেক কারণ আছে, বিস্তারিত বলতে চাই না।’
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্থগিত করে এই স্লটে আইপিএল হতে যাচ্ছে, এমনটা শোনা গিয়েছিল কয়েকদিন থেকে। বিশ্বকাপ স্থগিতের পরই বিসিসিআই জানিয়ে দেয়, বিশ্বকাপের ওই সময়েই এবারের আইপিএল হতে যাচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। শোয়েবের অভিযোগ এতে দেখা হয়েছে কেবল বিসিসিআইর স্বার্থ, ‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও হওয়া দরকার ছিল। কিন্তু আমি আগেই বলেছি, তারা তা হতে দেবে না। বিশ্বকাপ জাহান্নামে যাক, আইপিএলের ক্ষতি করা যাবে না। এই হচ্ছে মানসিকতা।’
বিশ্বকাপ স্থগিত করা নিয়ে আয়োজক দেশ অস্ট্রেলিয়ার সমালোচনাও করেছেন শোয়েব। আয়োজক বোর্ডের কর্তারাই বিশ্বকাপ স্থগিতের কথা আগেভাগে বলে দিচ্ছিলেন। এতে অজি বোর্ডের নতজানু নীতি দেখতে পেয়েছেন শোয়েব। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে তোপ দাগাতে রীতিমতো ২০০৮ সালে ফিরে গিয়েছেন তিনি। সেবার অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়েছিল ভারত। সিরিজের এক ম্যাচে অলরাউন্ডার অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসকে ভারতীয় অফ স্পিনার হরভজন সিং ‘বানর’ বলেছিলেন বলে গুরুতর অভিযোগ উঠে। বর্ণবাদি মন্তব্যের জন্য হরভজনকে তিন টেস্ট নিষিদ্ধও করা হয়। ওই শাস্তির পর ভারত সিরিজ না খেলেই দেশে ফেরার হুমকি দিলে বদলে যায় পরিস্থিতি। হরভজন বর্ণবাদি নয়, স্রেফ কটু কথা বলেছিলেন বলে জানায় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। তার শাস্তিও উঠে যাওয়ায় সিরিজও অব্যাহত থাকে। শোয়েবের তীর তাই ওই ঘটনার দিকেও, ‘তারা (ভারত) কখনো মেলবোর্নে সহজ উইকেট পায়, আবার কখনো আরেকজনকে বানর ডেকেও নিস্তার পেয়ে যায়। কারণ সিরিজ বয়কটের হুমকির ভয়। আপনি অস্ট্রেলিয়ানদের বলব কোথায় তোমাদের নৈতিকতা? তারা বলল, সিরিজ খেলবে না, আর আপনারা ওই ভয়ে বলে দিলেন বর্ণবাদি আচরণ হয়নি। এই আপনাদের নীতি? স্টাম্প মাইকে কিছু শুনতে পেলেন না?’
করোনার ঝুঁকির কারণে সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠেয় এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টি এক বছর পিছিয়ে গেছে। বিশ্বকাপ টি-টোয়েন্টি হওয়ার কথা ছিল অক্টোবরে। বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট আয়োজনের পরিস্থিতি না থাকায় সেটিও পিছিয়ে গেছে ২০২২ সাল পর্যন্ত। মাঝে ২০২১ সালে অবশ্য ভারতে আরেকটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আছে। পিছিয়ে যাওয়া এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের ফাঁকা সময়টা পেয়ে আইপিএল আয়োজন করতে যাচ্ছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। ভারতের করোনা পরিস্থিতি আইপিএল আয়োজন উপযোগী নয়, তাই সংযুক্ত আরব আমিরাতে হবে এবারের আইপিএল। ভারতীয় বোর্ডের এই ঘোষণা আসে বিশ্বকাপ স্থগিত হওয়ার ঘোষণার পর পরই। যেন আইসিসির ঘোষণার অপেক্ষায় ছিল বিসিসিআই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন