শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ব্যর্থতা আর দুর্নীতি-লুটপাটে বেসামাল সরকার অস্থির হয়ে পড়েছে: রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ জুলাই, ২০২০, ১:০১ পিএম

সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থতা আর সর্বগ্রাসী দুর্নীতি-লুটপাটে বেসামাল মিডনাইট সরকার দেশে-বিদেশে বিতর্কিত হয়ে পড়ায় অস্থির হয়ে পড়েছে বলে মনে করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী
আজ শুক্রবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি এখন মানসিকভাবে বিপন্ন। বিএনপি নিজেরাই জনরোষের ভয়ে আতঙ্কে আছে। করোনার বেপরোয়া চালকের মতো তারা রাজনীতিতেও বেপরোয়া আচরণ করছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্যর প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, তার এই কথার জবাব দিয়ে তার গুরুত্ব বাড়ানোর দরকার আছে বলে বিএনপি মনে করেনা। তার এই কথায় প্রতিয়মান হয় যে, সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থতা আর সর্বগ্রাসী দুর্নীতি-লুটপাটে বেসামাল মিডনাইট সরকার দেশে-বিদেশে বিতর্কিত হয়ে পড়ায় অস্থির হয়ে পড়েছে। তাদের চারদিকে অন্ধকার ঘনিয়ে আসছে। নিজেদের আয়নায় এখন কেবল জনগণের দল বিএনপিকে কল্পনা করছেন তারা। কাদের সাহেবের কথাটা হবে “আওয়ামীলীগ জনরোষের আতঙ্কে আছে।” কিন্তু তিনি উল্টো দিকে ঘুরিয়ে ফেলেছেন কথাটা। নিজেদের অবস্থাটা এখন অন্যের ভিতরে দেখতে চাচ্ছেন। অনুভব বা অনুমান করছেন যে, তাদের কি ভয়াবহ অবস্থা। আর বিএনপি আতঙ্কিত হবে কেন? বিএনপি কি চাল চুরি, তেল চুরি, ত্রান চুরি, করোনার টেস্ট কিট দুর্নীতি, ব্যাংক লোপাট, রাজকোষ চুরি, শেয়ার বাজার লুন্ঠন, রাতের অন্ধকারে জনগনের ভোট ডাকাতির কাজে লিপ্ত ছিল কি ? দেশব্যাপি উল্লেখিত চুরি ও ডাকাতি ও লুটের সাথে আপনাদের জড়িত থাকাটা শুধু দেশিয় গনমাধ্যম না আন্তর্জাতিক গনমাধ্যমেও প্রচার হচ্ছে। সুতরাং জনরোষের ভয়ংকর আতংকের মধ্যে আপনারা এখন প্রলাপ বকছেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, হুমকি-ধামকি, হামলা-মামলা, জেল-জুলুমের ভয় উপেক্ষা করেও আমরা অব্যাহতভাবে সরকারের অনিয়ম দুর্নীতি দুর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে কথা বলার চেষ্টা করছি, অনিয়মগুলো চোখে আঙ্গুল দিয়ে ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছি। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, গত ২২ মে স্পষ্ট করেই সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, 'করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কম দেখিয়ে নিজেদের কাগুজে সাফল্য দেখানোর চেয়ে বেশি জরুরী করোনা ভাইরাস টেস্ট নিয়ে দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন। কারণ, করোনা ভাইরাস টেস্টের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক বিশ্বে বাংলাদেশ বিশ্বাসযোগ্যতা হারালে ভবিষ্যতে নাগরিকদেরকে অত্যন্ত চড়া মূল্য দিতে হতে পারে'। কিন্তু এই সরকার কোনো কথাই কানে নেয়ার চেষ্টা করছেনা অথবা শুনেও না শুনার ভান করছে। বরং আমরা দেখছি, সরকারের একটাই কাজ, কারণে অকারণে শুধু বিএনপির বিরোধিতা করা।


সারাক্ষণ আতঙ্কে কাটে আপনাদের দিন-রাত। চারদিকে আপনাদের অপকর্মের স্তুপ এতো বিকট আকার ধারণ করেছে যে, বিএনপিকে গালমন্দ করা ছাড়া এই মুহুর্তে আপনাদের স্টকে আর কিছু নেই। তাই প্রলাপ বকেন আর বিএনপিকে নিয়ে সমালোচনা করেন। সারা বিশ্বে এখন আলোচিত দুর্নীতিবাজ সরকার হলো ভোট ডাকাতির মাধ্যমে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী আওয়ামী লীগ। যত অপকর্ম করছে আওয়ামীলীগ আর জনরোষের ভয় দেখাচ্ছেন বিএনপিকে। কি হাস্যকর কথা ! যদি সৎ সাহস থাকে তবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। তখন দেখা যাবে কারা জনরোষে পড়ে।

তিনি বলেন, বিএনপি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় নেই ক্ষমতায় নেই একযুগ। গণতন্ত্র হত্যা করে, জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে, দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে নানা অপকৌশলে বিএনপিকে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখা হয়েছে, বিএনপিকে দুর্বল করতে বছরের পর বছর ধরে সরকার রাষ্ট্রীয় যন্ত্রকে বিএনপির বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে, বিএনপির শত শত নেতাকর্মীকে গুম-খুন অপহরণ করা হয়েছে। বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে শুরু করে সারাদেশে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিএনপির বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে র‌্যাব পুলিশকে লেলিয়ে দেয়া হয়েছে। এতো কিছু করার পরও বিএনপিকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করা যায়নি। আর যায়নি বলেই, ওবায়দুল কাদের কিংবা হাসান মাহমুদদেরকে প্রতিদিন নিয়ম করে বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে হলেও জনগণের সামনে তাদের অস্তিত্ব জানান দিতে হয়।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, গত এপ্রিল মাসে ওবায়দুল কাদের সাহেব করোনা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে এক ভিডিও বার্তায় বলেছিলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্বক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি মনিটর করছেন। নির্দেশনা দিচ্ছেন, তদারকি করছেন'। জনগণ জানতে চায়, প্রধানমন্ত্রী যদি করোনা পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক মনিটর করেন তাহলে ভুয়া প্রতিষ্ঠান 'জেকেজি হেলথ কেয়ার এবং রিজেন্ট হসপিটাল' করোনা 'টেস্ট ও ট্রিটমেন্টে'র অনুমতি পেলো কেমন করে ? মরণঘাতী করোনা পরিস্থিতি নিয়ে যখন সারাবিশ্বে এর প্রতিরোধ ও প্রতিকার নিয়ে কাজ করছে, তখন এমন একটি জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে নেয়া সিদ্ধান্ত সম্পর্কে, প্রধানমন্ত্রী জানেন না, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানেন না তাহলে জানবেটা কে ? কার জানা উচিত? জনগণের প্রশ্ন, দেশটা আসলে চালায় কে? এমন পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে চাইলে জনগণের স্বার্থ রক্ষায় গোটা সরকারেরই খোলনলচে পাল্টাতে হবে। অর্থাৎ প্রধামন্ত্রীসহ এই সরকারের পদত্যাগ করতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন