কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। শনিবার ধরলা নদীর পানি ব্রীজ পয়েন্টে বিপদসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার এবং নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
জেলার ৫৬টি ইউনিয়নের ৬ শতাধিক গ্রামের প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। এক মাসেরও বেশী সময় বন্যার কবলে পড়া মানুষগুলো খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, গবাদী পশু খাদ্য সংকট এবং তাদের স্যানিটেশন সমস্যা প্রকট হয়ে উঠেছে। গত ২৪ ঘন্টায় নদী ভাঙনের শিকার হয়ে সারডোব, সাহেবের আলগা, থেতরাইসহ বিভিন্ন এলাকায় আরো শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়েছে। অনেকেই বাঁধে আশ্রয় নিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মো: হাবিবুর রহমান জানান, গত ১ মাসে পানিতে ডুবে ২১জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে শিশু ১৭ জন। জেলায় বন্যা কবলিতদের স্বাস্থ্য সেবার ৮৫টি মেডিকেল টিম কাজ করছে বলে জানান তিনি।তবে মেডিকেল টিমের সদস্যদের খুঁজে না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে বানভাসীদের।
উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের বতুয়াতুলির চরের মুসা মিয়া জানান, বন্যা এতো দীর্ঘ হবে সেটা কল্পনাও করতে পারিনি। পানি সামান্য কমার পরও আবারো বৃদ্ধি পায়। কাজকর্ম নেই। ঘরে খাবার নেই। বউ, বাচ্চা নিয়ে খেয়ে না খেয়ে আছি। কোন ত্রাণ পাইনি। ত্রাণ না পেলে আর বাঁচার উপায় থাকবে না।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, জেলার প্রধান তিনটি নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন। বাঁধ ও স্পার রক্ষায় ১৯টি পয়েন্টে ভাঙ্গন রোধে কাজ চলছে সাধ্যমত। এ পর্যন্ত ৩১ কিঃ মিটার বাঁধ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এর মধ্যে রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নে তিস্তা নদীর ভাঙন রোধে বুড়িরহাট ও গাবুর হেলান স্পার ভাঙন রোধে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাস কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার জানা গেছে, দ্বিতীয় দফা বন্যায় এ পর্যন্ত ১৯০ মে. টন চাল, ৯ লাখ টাকা. ৬ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। আর ঈদের পূর্বেই সোয়া ৪লাখ মানুষের হাতে পৌঁছে দেয়া হবে ভিজিএফ এর ১০কেজি করে চাল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন