সন্তানের জন্য একজন পিতা সবকিছুই করতে পারেন। চেষ্টা করেন বাবা হিসেবে সব দায়িত্ব পালন করতে। হোক সেটা নিজের শেষ সম্বল বিক্রি করে হলেও। তাইতো এবার দুই ছেলের অনলাইন ক্লাসের জন্য স্মার্টফোন কিনতে পরিবারের মূল উপার্জনের সেই উৎসকেই বিক্রি করতে বাধ্য হলেন বাবা। ঘটনাটি হিমাচলপ্রদেশের জ্বালামুখীর গামার গ্রামের।
ভারতের হিমাচল প্রদেশের জ্বালামুখীর গুমার গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। গরু বিক্রি করে দেয়া ওই ব্যক্তির নাম কুলদীপ কুমার। কুলদীপের দুই সন্তানের মধ্যে অন্নু পড়ে চতুর্থ শ্রেণিতে আর দিপ্পু দ্বিতীয় শ্রেণিতে। ছেলেদের পড়ালেখা চলমান রাখতে তার কাছে বিক্রি করার মতো আর কিছুই ছিল না।
লকডাউন পরিস্থিতিতে কাজকর্ম নেই, দুধ বেচেই কিছু আয় হত কুলদীপের। ছেলেদের পড়াশোনা চালাতে তাকেই বিক্রি করে দিতে হল, কান্নাভরা চোখে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন কুলদীপ। গত একমাস ধরে হাজার ছয়েক টাকা জোগাড়ের জন্য কী না করেছেন তিনি! ব্যাংকে লোন নেওয়ার আবেদন করেছিলেন, মহাজনদের কাছে ধার চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর আর্থিক হাল দেখে কেউই ঋণ দেওয়ার ঝুঁকি নেয়নি। এদিকে হাতে ৫০০ টাকাও নগদ নেই, ৬ হাজার টাকা কোথা থেকে জোগাড় হবে সেই ভেবে রাত্রে ঘুম হত না দুই ছেলের বাবা কুলদীপের। তাহলে কি ছেলেদের পড়াশোনা বন্ধ করে দিতে হবে? অনেক ভেবে শেষ পর্যন্ত পরিবারের আয়ের একমাত্র উৎস, গরুই বিক্রি করে দিলেন তিনি!
ভাঙাচোরা মাটির বাড়ির মালিক গরিব কুলদীপ কুমারের বিপিএল তালিকায় নাম ওঠেনি। কোনও সরকারি প্রকল্পের সাহায্য পান না। কুলদীপ জানান, ভাঙা বাড়িটা সারাতে বহুবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করেও ফল হয়নি। সহায় সম্বলহীন কুলদীপের শুধু একটাই আশা, দুই ছেলে পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াবে, ঘুচবে অভাব, দারিদ্র। তাই যেনতেন প্রকারে তাদের পড়া চালিয়ে যেতে পরিবারের একমাত্র আর্থিক সম্বলকে বিক্রি করে দিতেও পিছপা হলেন না বাবা।
তবে ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর স্থানীয় বিধায়ক রমেশ ধাওয়ালা বলেছেন, ছেলেদের পড়ানোর জন্য গরু বিক্রি করে দিতে হয়েছে এর চেয়ে দুঃখের কিছু নেই। কুলদীপকে আর্থিক সহায়তা করতে বিডিও-র সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানান ওই বিধায়ক।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন