৪র্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী আলী হাসান আমরিন (১২)। করোনা সংকটের কারণে গত রমজানের ঈদে দাদু বাড়ি আসা হয়নি তার। এবার কোরবানীর ঈদের আগের দিন (৩১ জুলাই) শুক্রবার সকালে বাবা-মায়ের সঙ্গে গ্রামে আসতে পেরে অনেক উচ্ছাসিত ছিল ছেলেটি। আসার পর থেকে দিনভর কোরবানীর জন্য তাঁর বাবার কেনা গরুটি বার বার আমরিন দেখছিল প্রতিবেশী শিশুদের সঙ্গে। লকডাউন পেরিয়ে অনেকদিন পর গ্রামে আসতে পেরে আনন্দ আর খেলাধুলায় এভাবে কাটছিল তার পুরোদিন। বিকেলে সে অন্যান্য শিশুদের সঙ্গে খেলতে খেলতে বাড়ির সামনের পুকুর ঘাটে পা পিছলে পড়ে গিয়ে মারা যায়।
হৃদয় বিদারক এই ঘটনাটি শুক্রবার সন্ধ্যায় ঘটে চট্টগ্রামের রাউজানের বাগোয়ান ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পাঁচখাইন বড় পীর শাহ (রহ.) দরগাহ এলাকার আব্দুস সোবহান মেম্বারের বাড়িতে। শিশুটি ওই বাড়ির ব্যবসায়ী মুহাম্মদ মুরাদের ২ সন্তানের মধ্যে এক মাত্র ছেলে। তার বাবা মুরাদ নগরীর ষোলশহর বিবিরহাটের পার্টস ব্যবসায়ী। তিনি পরিবার নিয়ে চাক্তাই রাজাখালী এলাকায় থাকেন। আমরিন নগরীর একটি ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলে ৩য় শ্রেণীতে পড়ত।
পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানাগেছে শুক্রবার বিকেল থেকে দীর্ঘক্ষণ তার খোঁজ না পেয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বাড়ির সামনের পুকুরে খোঁজ করে ভাসমান অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা। দ্রুত স্থানীয় একটি বেসরকারী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এঘটনায় পুরো পরিবার গ্রাম জুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া। কিছুতেই কেউ মেনে নিতে পারছেনা ছেলেটার এমন মৃত্যুর ঘটনা।
বাগোয়ান ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল খালেক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাটি এলাকায় ঈদের আনন্দকে বিষাদে পরিণত করেছে। একইদিন রাত ১২টায় তার নামাজে জানাযা শেষে স্থানীয় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন