ঈদের দিনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত, ফাতেহা পাঠ, দোয়া-মোনাজাত, নেতাকর্মীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেই ঈদের দিন অতিবাহিত করতেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ঈদ উপলক্ষে নিজ দলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি বিশিষ্টজন, শুভাকাক্সক্ষী, কূটনৈতিকদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করতেন তিনি। কিন্তু গত আড়াই বছরে ৬টি ঈদে বন্ধ রয়েছে চিরাচরিত সেই রীতি। দীর্ঘ প্রায় দুই বছরেরও বেশি কারাবন্দি থাকায় ২০১৮ ও ২০১৯ সালের দুটি করে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা কাটে কারাগারেই। তবে এবার গত ২৫ মার্চ জামিনে মুক্ত হলেও করোনাপরিস্থিতি এবং শারীরিক নানা অসুস্থতার কারণে ঈদুল ফিতর ও আজকের ঈদুল আযহাতেও নেতাকর্মীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেননি।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারামুক্তি পাওয়ার পর থেকেই গুলশানের বাসভবন ফিরোজাতেই রয়েছেন। করোনাপরিস্থিতির মধ্যে তিনি চিকিৎসার জন্য জামিন পেলেও এখনো প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব হয়নি। তাঁর একজন ব্যক্তিগত চিকিৎসক জানান, বেগম খালেদা জিয়ার যে অসুস্থতা তার চিকিৎসা বাসায় সম্ভব না। হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে হবে। কিন্তু মুক্ত হওয়ার আগে থেকেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে দেশে সবকিছু স্থবির ছিল। এখনো এই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এমন পরিস্থিতিতে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই এখন পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় হাসপাতালের দেয়া প্রেসক্রিপশনেই চিকিৎসা চলছে।
বিএনপির এক শীর্ষ নেতা জানান, ম্যাডামের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির কথা চিন্তা করেই দলের নেতাকর্মীদের সাথে সাক্ষাৎ করানো হচ্ছে না। এছাড়া করোনা পরিস্থিতি এখনো ক্রমবর্ধমান। প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, মৃত্যুর সারিও প্রতিদিন দীর্ঘ হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে নেতাকর্মীরা এবার ঈদেও খালেদা জিয়ার সাক্ষাত পাচ্ছেন না বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে এবারের ঈদেও দলীয় চেয়ারপারসনের সঙ্গে (খালেদা জিয়া) নেতাকর্মীদের সাক্ষাতের কোনো সুযোগ হচ্ছে না। তিনি বলেন, গত ঈদুল ফিতরের দিন যেভাবে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঘরোয়া পরিবেশে ঈদ পার করেছেন, এবারও একইভাবে ঈদের দিন পার করবেন খালেদা জিয়া।
স্থায়ী কমিটির এজন্য নেতা জানান, সকাল পর্যন্ত স্থায়ী কমিটির নেতাদের সাথে সাক্ষাতের বিষয়ে বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে কোন বার্তা আসেনি। তবে তারা আশা প্রকাশ করছেন বেগম জিয়া শীর্ষ নেতাদের সাথে সাক্ষাৎ করতে পারেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা আগের মতই। তার চিকিৎসা যেটা হওয়া দরকার তা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না করোনা পরিস্থিতির মধ্যে। এছাড়া বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে সরকার। এমন অবস্থায় তার সঙ্গে দেখা করার বিষয়টি একান্তই নির্ভর করছে ম্যাডামের উপর। তাই এখন কিছু বলা যাবে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন