এবারও পানির দরে চামড়া বিক্রি হচ্ছে। বিক্রি না হওয়ায় চামড়া ফেলে দেয়া হয়েছে ময়লার ভাগাড়ে। রোববার নগরীর হামজার বাগ, আতুরার ডিপো এলাকায় বিভিন্ন আড়তের সামনে পড়ে থাকা প্রায় তিন হাজার চামড়া সিটি কর্পোরেশনের ময়লার গাড়িতে তুলে ময়লার ভাগাড়ে ফেলা হয়।
অনেক এলাকায় আরও চামড়া বিনষ্ট হয়েছে। বিক্রি করতে না পেরে অনেকে চামড়া মাটির নীচে পুঁতে ফেলেছেন। সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে কেউ চামড়া বিক্রি করতে পারেননি। এতে করে এবারও মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত। দাম না পাওয়ায় হতদরিদ্র মানুষ এবারও বঞ্চিত হবেন। তবে আড়তদারেরা বলছেন, এবার তেমন বেশি চামড়া নষ্ট হয়নি, লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী পর্যাপ্ত চামড়া সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে।
নগরীর ৭ নং পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোবারক আলী ইনকিলাবকে বলেন, আড়তের সামনে প্রায় ৫ হাজার গরুর চামড়া ফেলে যান ব্যবসায়ীরা। দাম না পেয়ে তারা এসব চামড়া রাস্তায় রেখে চলে যান। পরে সেখান থেকে দ্ইু হাজার চামড়া একটি ট্যানারিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
বাকি প্রায় তিন হাজার চামড়া সিটি কর্পোরেশনের ময়লার গাড়িতে তুলে নিয়ে ডাম্পিং করা হয়েছে। লবণছাড়া এসব চামড়া নষ্ট হয়ে গেছে। পরিবেশ দূষিত হওয়ার আগেই এসব চামড়া অপসারণ করা হয়েছে।
আড়তদারদের বরাত দিয়ে তিনি জানান, কিছু মৌসুমি ব্যবসায়ী এসব চামড়া গ্রাম থেকে কিনে নিয়ে আসেন। তবে আড়তদাররা তার আগেই নগরী থেকে পর্যাপ্ত চামড়া সংগ্রহ করেন। গ্রামের কোরবানির চামড়া লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করতে বলা হয়। পরবর্তিতে এসব চামড়া সংগ্রহ করা হবে।
নগরীর আরও কয়েকটি এলাকায় রাস্তায় পড়ে থাকা চামড়া কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা অপসারণ করেছে বলে জানা গেছে। তবে কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, এবার গত বারের মতো চামড়া নষ্ট হয়। গত বছর কয়েক লাখ চামড়া রাস্তা থেকে সংগ্রহ করে ডাম্পিং করতে হয়েছিলো।
জানা গেছে গতবার দাম না পেয়ে লোকশান দেওয়ায় এবার মৌসুমি ব্যবসায়ীরা তেমন সক্রিয় ছিলেন না। আড়তদারেরা তাদের নিজস্ব লোকজন দিয়ে কোরবানিদাতাদের কাছ থেকে চামড়া সংগ্রহ করেন। তবে সরকার নির্ধারিত দাম পাননি কোরবানিদাতারা।
মৌসুমি ব্যবসায়ী ও আড়তদারের বলছেন, কয়েক বছর আগেও একটি কোরবানির গরুর চামড়ার দাম ২০০০-২২০০ টাকা এমনকি ৩ হাজার টাকাও ছাড়িয়ে যেত, সেই চামড়া এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়। গত ২৬ জুলাই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দেয়। তাতে ঢাকা থেকে প্রতি বর্গফুট চামড়া ৩৫ থেকে ৪০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ২৮ থেকে ৩২ টাকা হিসাবে লবণযুক্ত চামড়া সংগ্রহ করতে বলা হয়। এ বছর এটাই সর্বনিম্ন দাম বলে জানিয়েছেন এই ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্টরা।
চামড়া ব্যবসায়ীরা জানান সরকার নির্ধারিত দামে একটি বড় গরুর চামড়ার দাম ৯০০ টাকার উপরে আসে। অথচ তার অর্ধেক দামেও চামড়া বিক্রি হয়নি। চট্টগ্রামের আড়তদারেরা এবার চার থেকে সোয়া চার লাখ চামড়া সংগ্রহ করবেন বলে জানা গেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন