বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

জাবির বাজেটে এবারও গুরুত্ব পায়নি শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট খাতগুলো

জাবি সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৪ আগস্ট, ২০২০, ৩:০৪ পিএম

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ২শ ৭৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদতি হয়েছে। এ বছর করোনা মহামারীর কারণে বার্ষিক সিনেট অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়নি। যার কারণে এবারের বাজেট গত ২৫ জুন অনুষ্ঠিত এক বিশেষ সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এমনটাই জানানো হয়েছে সিনেটরদেরদেরকে দেয়া এক চিঠিতে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে বার্ষিক সিনেট সভা জুন মাসে করা সম্ভব হয়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে শুরু হওয়ার পর সিনেট সভা আহ্বান করা হবে।’

এই বছরের বাজেটের আকার গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ১৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। অপরদিকে প্রতিবারের মত এবারের বাজেটেও শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট খাতগুলো গুরুত্ব পায়নি। শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট খাতগুলোর মধ্যে ছাত্রবৃত্তি ও ফেলোশীপ বাবদ বরাদ্দ ১.৭৬%, গ্রন্থাগারে বরাদ্দ ১.৩৫% দেওয়া হয়েছে। যা শিক্ষার্থীদের চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল।

এছাড়া গবেষণা খাতে নামে মাত্র বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা মোট বাজেটের মাত্র ১.৪৮ শতাংশ। বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণাবন্ধব বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলতে যে পরিমান বাজেট দেওয়া দরকার তার সামন্য পরিমানও বরাদ্দ দেয়া হয়নি বলে মনে করছেন বাজেট বিশ্লেষকরা।

এদিকে এই করোনার মহামারী সময়ে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করার দাবি থাকলেও এই খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে মাত্র ৩ কোটি ৭১ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। যা মোট বাজেটের মাত্র ১.৩৪%- যার মধ্য থেকে চিকিৎসা কেন্দ্রের কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদি, ঔষধপত্র ও অন্যান্য আনুষাঙ্গিক খরচ বহন করা হবে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘যে পরিমান বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তার সিংহভাগই চলে যাবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাতা বাবদ। তাই এই অর্থ দিয়ে করোনার এই সংকটকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের চাহিদা কোনভাবেই পূরণ করা সম্ভব নয়।’

অন্যদিকে ২৭৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকার এ বাজেট বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) ২৫৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা অনুদান দেবে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব সূত্রে আয় হবে ২৮ কোটি টাকা।

এদিকে গত ২৫ জুন অনুষ্ঠিত সিন্ডকেট সভায় ২০১৯-২০ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটও অনুমোদিত হয়েছে। সংশোধিত বাজেটের আকার ২শ ৭৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা। সংশোধিত বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ ২৫ কোটি ৩৫ হাজার টাকা। সর্বমোট ক্রমপুঞ্জিভূত বাজেট ঘাটতির পরিমাণ দাড়াবে ৫১ কোটি ২০ লাখ ৩২ হাজার টাকা ।

বাজেটে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে বাজেটের ৩২.৯৮%। অবসরকালীন সুবিধা বাবদ বরাদ্দ ১৪.৪০%, বিবিধ ব্যায় ৭.৪৫%, প্রশাসনিক ব্যায় মোট বাজেটের ১২.০৩%।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতি (জাবিসাস) আয়োজিত কয়েকটি অনলাইন সংলাপে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নেতা, শিক্ষক ও সিনেটররা গবেষণা খাত, স্বাস্থ্য খাত, লাইব্রেরী, খেলাধুলা, টিএসসি কেন্দ্রীক সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর জন্য ও শিক্ষাবৃত্তি ইত্যাদি ক্ষেত্রে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানান। পাশাপাশি তারা করোনার এই সংকটকালীন সময়ে অনলাইন ক্লাস করার জন্য আর্থিক সংকটে থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য প্রণোদনা দেয়ারও দাবি জানান। কিন্তু বাজেটে এসব দাবি উপেক্ষিত হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

অন্যদিকে সিনেটররা বলছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাইলে অনলাইনের মাধ্যমে সিনেট অধিবেশনটা করতে পারতো। কিংবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত করে সিনেট সভা করতে পারতো। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তা না করে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাজেট অনুমোদন দিয়েছে, যা সিনেটরদেরকে বিস্মিত করেছে।’

বাজেটের বিষয় জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হককে একাধিকার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন