বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

আচমকা অভিযানের ছক করা হয়

অপারেশন গিডিওন-২

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৬ আগস্ট, ২০২০, ১২:০৪ এএম

এই কনসার্টের আগে নিজেকে ভেনেজুয়েলার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট বলে ঘোষণা করেছেন বিরোধী নেতা হুয়ান গোয়াইদো। প্রেসিডেন্ট মাদুরোর সরকারকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ৫০টির বেশি দেশ হুয়ান গুয়াইদোর প্রতি সমর্থন দিয়েছেন। হুয়ান গুয়াইদো আশা করছিলেন, রিচার্ড ব্র্যানসনের স্পন্সর করা কনসার্ট যে ত্রাণ বহর পাঠানোর পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছিল, সেটি তাকে ক্ষমতায় বসাতে সাহায্য করবে। কিন্তু এই ত্রাণ বহর সীমান্তেই থামিয়ে দেয়া হয়। সেখানে সহিংসতা শুরু হয়। এপ্রিলের শেষে যে বিদ্রোহের চেষ্টা হয়েছিল, সেটাও বিফল হয়। কাজেই হুয়ান গুয়াইদোর সমর্থকরা তখন ছক কাটতে থাকেন, কিভাবে আচমকা সামরিক অভিযান চালিয়ে নিকোলাস মাদুরোকে ক্ষমতা থেকে সরানো যায়। এজন্যে প্রথম প্রশিক্ষণ শিবিরটি স্থাপন করা হয় জুন মাসে কলম্বিয়ার মাইকাও শহরে। ভেনেজুয়েলার পার্লামেন্টের এক নির্বাসিত সদস্য হারনান এইলম্যান গত মাসে করোনাভাইরাসে মারা যাওয়ার আগে এই প্রশিক্ষণ শিবিরের বর্ণনা দিয়েছিলেন বিবিসিকে এক সাক্ষাৎকারে। ‘সেখানে লোকজন শারীরিক প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল, নানা ধরণের জ্ঞান অর্জন করছিল। কিন্তু আমাদের অনেক অর্থনৈতিক সঙ্কট ছিল। মাঝে মধ্যে আমরা দিনে মাত্র দুবার খাবার দিতে পারতাম। আমরা যেখানে যখন সম্ভব চাঁদা তুলছিলাম। আমি আমার গাড়ি এবং অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রি করে দিয়েছিলাম।’ এই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে প্রচুর অর্থের দরকার ছিল। তখন সামনে এগিয়ে আসলেন জর্ডান গাউড্রু। যুক্তরাষ্ট্রে তিনি ততদিনে ভেনেজুয়েলার নির্বাসিত বিরোধী নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফেলেছেন। জুলাই মাসে কলম্বিয়া সফরে গেলেন জর্ডান গাউড্রু। সেখানে তার পরিচয় হলো জেনারেল ক্লাইভার আলকালার সঙ্গে, যিনি এই প্রশিক্ষণ শিবিরের প্রতিষ্ঠাতা। জেনারেল ক্লাইভার আলকালা প্রেসিডেন্ট মাদুরোর পূর্বসুরি ইউগো শ্যাভেজের খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট মাদুরোর সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতি ঘটে। তখন তিনি দেশ থেকে পালিয়ে নির্বাসনে যান। প্রেসিডেন্ট মাদুরোকে সরাতে হাত মেলালেন এই দুজন। হারনান এইলম্যান এই সাক্ষাতের স্মৃতিচারণ করছিলেন। ‘আমরা আমাদের পরিকল্পনা নিয়ে কথা বললাম। আমরা ভেনেজুয়েলার ক্ষমতার শীর্ষের কিছু ব্যক্তিকে একটা অভিযান চালিয়ে ধরে ফেলবো, তারপর যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেব। তখন হুয়ান গুয়াইদো অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেবেন, তারপর ভেনেজুয়েলায় নির্বাচন হবে।’ জর্ডান গাউড্রু বললেন, অর্থ জোগাড় করার দায়িত্ব তার। এর পরবর্তী বৈঠকগুলো হলো যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামিতে। এবারের বৈঠকে হুয়ান গুয়াইদের প্রেসিডেনশিয়াল কমিশনের লোকজনও ছিল। এই কমিশনে কাজ ছিল কিভাবে প্রেসিডেন্ট মাদুরোকে ক্ষমতা থেকে ফেলে দেয়া যায়, গোপনে তার নানা উপায় খুঁজে বের করা। ‘আমরা প্রায় ২২ ধরনের সম্ভাব্য পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তাভাবনা করলাম। এর মধ্যে এক তৃতীয়াংশ পরিকল্পনাতেই ছিল শক্তি প্রয়োগের কথা,’ বলছেন ভেনেজুয়েলার এক কট্টর দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক কৌশলবিদ জে. জে. রেনডন। ‘আমরা সিলভারকর্প ছাড়া আর কোন সামরিক ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলিনি। তবে আমরা তাদের যাচাই করে দেখেছি। এমনকি আমরা ফরেন লিজিয়নের কথাও ভেবে দেখেছি।’ জর্ডান গাউড্রু বলেছিলেন এরকম একটা সামরিক অভিযানের পেছনে অর্থ ঢালতে রাজী অনেক ব্যবসায়ী। তারা ভেবেছিল, প্রেসিডেন্ট মাদুরোকে অপসারণের পর হুয়ান গুয়াইদো যখন ক্ষমতায় আসবেন, তখন তারা ব্যবসায়িক ফায়দা তুলতে পারবেন। সূত্র: বিবিসি।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন