শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সুপার ড্রাইভওয়ে

কক্সবাজার থেকে সাতক্ষীরা উপকূলীয় বেড়িবাঁধজুড়ে অর্থায়নে চীনের সাথে আলোচনা চলছে : পাউবি মহাপরিচালক

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৬ আগস্ট, ২০২০, ১২:০৪ এএম

দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বেড়িবাঁধ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। এ কারণে ঝুঁকিতে আছে উপক‚লীয় ২৫ জেলার প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ। সেই ঝুঁকি মোকাবেলায় নতুন মেগা প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। বাঁধ টেকসই করতে নকশায় পরিবর্তন আনা হচ্ছে। আর বাঁধ নির্মাণের পর রক্ষণাবেক্ষণের জন্যও নেওয়া হবে নতুন পরিকল্পনা। এজন্য কক্সবাজার থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত সুপার ড্রাইভওয়ে নির্মাণ করা হবে। এ প্রসঙ্গে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে উপক‚লীয় এলাকায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে আট হাজার কোটি টাকার চারটি প্রকল্প প্রণয়ন করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে এসব প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। শেষ হবে দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক প্রকৌশলী এ এম আমিনুল হক গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, উপকূলীয় এলাকায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে কয়েকটি প্রল্প প্রণয়ন করা হয়েছে। তার মধ্যে কক্সবাজার থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত সুপার ড্রাইভওয়ে নির্মাণ প্রকল্পের পরিকল্পনা করা হয়েছে। যে কোনো সময় এ প্রকল্পের প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে। অর্থ পাওয়া গেলে প্রকল্পের বাস্তবায়ন করা শুরু করা হবে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে চীনের অর্থায়নে তিস্তা নদী খননের বিষয়টি চুড়ান্ত করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে উত্তরাঞ্চলে বন্যায় আর ক্ষয়ক্ষতি হবে না এবং মানুষ পানিবন্দি থাকবে না। তিনি বলেন, সুপার ড্রাইভওয়ে প্রকল্প ছাড়াও ব্র²পুত্র এবং যমুনা নদীর বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য চীনের সাথে আলোচনা চলছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রায় ১৭ হাজার কিলোমিটার বাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে উপক‚লীয় অঞ্চলের পাঁচ হাজার ৭৫৭ কিলোমিটার বাঁধের পুরোটাই ঝুঁকিপূর্ণ। ২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলার পর গত ডিসেম্বরে উপক‚লে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’। এরপর ২০ মে আঘাত হানে আম্ফান। এসব দুর্যোগ খুলনার কয়রা, পাইকগাছা ও দাকোপ, সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনি এবং বাগেরহাটের মোংলাসহ অন্যান্য উপজেলা লন্ডভন্ড করে দেয়। প্রায় ১৫০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় বিস্তীর্ণ এলাকা। উপক‚লের মানুষ শুরু থেকেই বলে আসছে, তাদের ত্রাণের প্রয়োজন নেই; দরকার টেকসই বাঁধ।

পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে উপকূলীয় এলাকায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে আট হাজার কোটি টাকার চারটি প্রকল্প প্রণয়ন করা হয়েছে। এর মধ্যে খুলনার ১৪ নম্বর পোল্ডারে ৯৫৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা, ৩১ নম্বর পোল্ডারে এক হাজার ২০১ কোটি ১২ লাখ টাকা, সাতক্ষীরার ৫ নম্বর পোল্ডারে তিন হাজার ৬৭৪ কোটি তিন লাখ এবং ১৫ নম্বর পোল্ডারে ৯৯৭ কোটি ৭৮ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। মেগা প্রকল্প সম্পর্কে পানি সম্পদ উপমন্ত্রী জানান, ওই চারটি প্রকল্পের বাইরে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণে আরো কয়েকটি প্রকল্প প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া বাঁধ সুরক্ষায় কক্সবাজার থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত সুপার ড্রাইভওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। শুধু বেড়িবাঁধ নয়, পুরো উপকূলের উন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে হাওর উন্নয়ন বোর্ডের মতো উপকূলীয় উন্নয়ন বোর্ড গঠনের বিষয়টি বিবেচনাধীন।
সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের নির্বাহী সদস্য পলাশ আহসান বলেন, বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জরুরি তহবিল গঠন এবং বাঁধ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকারকে সম্পৃক্ত করতে হবে। ওয়াপদা বাঁধের ১০০ মিটারের মধ্যে চিংড়ি বা কাঁকড়ার ঘের তৈরিতে সরকারের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা দ্রুত কার্যকর করতে হবে। নিয়মিত ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে উপকূলের নদ-নদীর পানির প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
Karim ৬ আগস্ট, ২০২০, ৮:২৩ এএম says : 0
বাঁধ নির্মাণের নামে সরকারি টাকার লুটপাট ও সাধ্য যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে ‌
Total Reply(0)
কামাল ৬ আগস্ট, ২০২০, ৮:২৪ এএম says : 0
বাংলাদেশ নির্মাণ খাতে যেসব প্রকল্পে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয় তারমধ্যে বাদ অন্যতম ফলে প্রতিবছর নিত্যনতুন বাঁধ নির্মিত হয় এবং পরের বছর তা ভেঙে যায় সেই বাদ পুনঃ নির্মাণ ও সংস্কারের নামে আবার নতুন টাকা বরাদ্দ হয় এভাবেই চলুক পাঠ এটা বন্ধ করতে হবে‌
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন