শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

‘হোম অফিস আর নয়’

করোনার মধ্যেই অর্থনীতি সচলের উদ্যোগ

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ৭ আগস্ট, ২০২০, ১২:০১ এএম

সবাই সার্বক্ষণিক অফিস করবেন : মন্ত্রিপরিষদ সচিব


করোনাভাইরাস মহামারিতেই লকডাউন তুলে ৭৫ শতাংশ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বাড়িতে বসে অফিস করার নিয়ম করা হয়েছিল। কারোনার মধ্যেই দেশের অর্থনীতিতে সচল করতে সেই নিয়ম তুলে দিয়েছে সরকার। সরকারের নীতি বাস্তবায়ন, বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ দ্রæত বাস্তবায়ন এবং প্রশাসনকে আরো গতিশীল করতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা এর আওতায় পড়বে না। সরকারি সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আগের মতো সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত অফিস করতে হবে বলে প্রতিটি মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

এ ব্যাপারে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, এ বিষয়ে সকল মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ওই নির্দেশনা পেয়ে অনেক মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে তা মৌখিকভাবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জানিয়ে দিয়েছে। বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের শতভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী সার্বক্ষণিক অফিস করছেন। অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোতেও সবাই একসঙ্গে অফিস করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অফিস করতে বলা হলেও বয়স্ক, অসুস্থ ও সন্তানসম্ভবাদের আগের মতোই অফিসে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

গত মার্চের শুরুতে দেশে করোনাভাইরাসের বিস্তার শুরু হলে পরিস্থিতি দিন দিন অবনতির দিকে যেতে থাকে। এ অবস্থায় গত ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। এরপর ধাপে ধাপে সাত দফায় ছুটি বাড়ানো হয়। টানা ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটি শেষে গত ৩১ মে অফিস খোলা হয়। তখন থেকে সীমিত পরিসরে অফিস শুরু হয়। এ সময় মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জারিকৃত ১৩ দফা নির্দেশনা কঠোরভাবে অনুসরণ করা হয়। সরকারের এ নির্দেশনার পর কিছু শীর্ষ কর্মকর্তা নিয়মিত অফিস করলেও বেশিরভাগ কর্মকর্তা বাসায় বসেই অফিসের কাজ চালিয়ে নিচ্ছিলেন। শাখার কর্মচারীরা গুরুত্বপূর্ণ ফাইল অনেক কর্মকর্তার বাসায় নিয়েও স্বাক্ষর করিয়ে আনতেন। এছাড়া বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ কর্মকর্তাদের ডিউটি রোস্টার করে দেয়। সেই রোস্টার অনুযায়ী একেক দিন একেক কর্মকর্তা অফিসে উপস্থিত হতেন। তিনি বিভিন্ন বিভাগের কাজের মধ্যে সমন্বয় করতেন।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন তখন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ২৫ শতাংশের বেশি যেন একসঙ্গে অফিসে উপস্থিত না থাকেন সেই নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সেভাবেই বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সরকারি দপ্তরে এতদিন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছিল। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে গত ২৬ মার্চ থেকে চলা টানা ৬৬ দিনের লকডাউন ওঠার পর ৩১ মে থেকে সীমিত পরিসরে অফিস খোলার পাশাপাশি গণপরিবহন চলাচালের অনুমতি দেয় সরকার। লকডাউন শেষে গত ৩১ মে থেকে অফিস চালুর পর মৌখিক নির্দেশনায় সরকারি দপ্তরগুলোতে একসঙ্গে ২৫ শতাংশের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অফিসে অবস্থান করতে নিষেধ করা হয়েছিল। এরপর অফিস আর বন্ধ করা হয়নি। ফলে এখনও মৌখিক নির্দেশনা দিয়ে সবাইকে নির্ধারিত সময়ে অফিসে অবস্থান করতে বলা হয়েছে।

গতকাল সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মন্ত্রণালয়ে প্রায় সব কর্মকর্তাই উপস্থিত রয়েছেন। কর্মচারীদের সংখ্যা সীমিত হলেও কর্মকর্তারা হাজির হয়েছেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন, তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রায় সব কর্মকর্তাই উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুন ফোনে ইনকিলাবকে বলেন, সব কর্মকর্তাকে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত অফিস করতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মৌখিকভাবে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে আমাদের মন্ত্রণালয়ের সব কর্মকর্তাকে সেই নির্দেশনা মৌখিকভাবে জানিয়ে দিয়েছি, সকল অফিসারদের অফিসে থাকতে বলেছি। এখন অফিসারদের প্রতি নির্দেশ হলো- সকল অফিসার ৯টা-৫টা অফিস করবেন।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. লোকমান হোসেন মিয়া ইনকিলাবকে বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে নির্দেশনা পাওয়ার আমাদের মন্ত্রণালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত অফিস করছেন। কাজ থাকলে কেউ কেউ বিকাল ৫টার পরেও কাজ করছেন। আমরা করোনার মধ্যেও দিন রাত কাজ করেছি।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত ১২ দফা নির্দেশনা অনুসরণ করে এ বিভাগের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়মিত অফিসে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ করা হলো। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকেও এক অফিস আদেশে নিয়মিত অফিসে উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন