শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

রাজধানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত রত্নার স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৭ আগস্ট, ২০২০, ১:৫৯ পিএম

একটি স্বপ্ন। অদম্যকে জয় করা। অধরাকে কাছ থেকে দেখা। আর সেই স্বপ্ন জয় করতেই দিনমান ব্যস্ততা। নিজেকে তৈরি করা। একের পর এক টার্গেট ঠিক করাই ছিল তার। প্রথমে কিলিমানজারো পর্বত জয়। তারপর দ্বিতীয় উচ্চতম পর্বত মাউন্ট কেনিয়া অভিযান। সব ঠিক থাকলে দু’ বছর পর মাউন্ট এভারেস্ট। ২০২২ সালে পৃথিবীর শীর্ষ চূড়ায় পা রাখবেন। কিন্তু সব স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেল। সম্ভাবনাময় রত‌নাকে কেড়ে নিল সড়ক দুর্ঘটনা। রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানা এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নেয় সম্ভাবনাময়ী রতœাকে। আজ সকাল পৌনে ৯টার দিকে গণভবন সংলগ্ন এলাকায় সাইক্লিং করতে গেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে শেরেবাংলা নগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ জানান, দুর্ঘটনার সময় রত্মা সাইক্লিং করছিলেন। তিনি গণভবন সংলগ্ন সড়কের পূর্ব দিক থেকে পশ্চিমে যাচ্ছিলেন। এসময় একটি গাড়ি পেছন থেকে ধাক্কা দিলে তিনি গুরুতর আঘাত পান। আশঙ্কাজনক অবস্থায় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে মেডিকেলে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
জানা গেছে, পুরো নাম রেশমা নাহার রত্না। যুক্ত ছিলেন শিক্ষকতার সঙ্গেও। ধানমন্ডির আইয়ুব আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক ছিলেন। থাকতেন মিরপুরে সরকারি কোয়ার্টারে। শিক্ষা ও সংস্কৃতির নানা কার্যক্রমের পাশাপাশি পর্বত অভিযাত্রী হিসেবেও বিভিন্ন ধরণের ট্র্যেকিং সম্পন্ন করেছেন। যুক্ত ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বিভিন্ন শিক্ষামূলক কার্যক্রমেও। পর্বতারোহণে তাঁর বিপুল উৎসাহ ছিল। প্রথমে দার্জিলিংয়ে তেনজিং নরগে মাউন্টেনিয়ারিং ইন্সটিটিউট থেকে বেসিক কোর্স সম্পন্ন করেন এবং তারপর হিমাচলের মাউন্টেনিয়ারিং ইন্সটিটিউট থেকে উচ্চতর কোর্সও সম্মন্ন করেছেন। ইতিমধ্যেই রতœা ছয় হাজার মিটার পর্যন্ত ট্রেকিং সম্পন্ন করেছেন। ধাপে ধাপে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শিখরে পা রাখার স্বপ্ন ছিল রতœার। সেজন্য নিয়ম করে সাইকেল নিয়ে বের হতেন। প্রতিদিনের মতো আজও রমনায় জগিং, হাতিরঝিল এলাকায় সাইকেল চালিয়ে মিরপুরের বাসায় ফিলছিলেন। কিন্তু বিজয় স্মরণী পাড় হয়ে চন্দ্রিমা উদ্যান সংলগ্ন এলাকায় গেলে পেছন থেকে দ্রুতগামী গাড়ি তার সকল স্বপ্নকে চিরতরে মিলিয়ে দেয়। এই রকম একটি সম্ভাবনাময় জীবনের অকাল পরিণতিতে আত্মীয় স্বজন, বন্ধুমহল সকলের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন