জিএম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি (সাতক্ষীরা) থেকে
সরকার স্কুল অনুমোদনের জন্য যেসব শর্ত রেখেছে তার মধ্যে অন্যতম শর্ত হচ্ছে খেলার মাঠ থাকা। সরকারের শর্ত পূরণ করতে আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য বিদ্যালয় সংলগ্ন বৃহৎ মাঠের ব্যবস্থা রয়েছে, কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্য সেখানে খেলা নয়Ñ মাছ চাষ করা হচ্ছে! ৭৬ নং আনুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টার ইউনিয়নের একটি স্বনামধন্য স্কুল। স্কুলটিতে ৩৯১ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। স্কুল শুরুর আগে ও পরে স্কুল ও মাঠ ছাত্রছাত্রীদের কলকাকুলিতে ভরে ওঠে। এলাকার শত শত ছেলেমেয়েদের স্কুল সময়ে মুক্ত আবহাওয়া প্রাপ্তি, জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, ক্রীড়া-বিনোদন ও বৈকালিক অবকাশের জন্য বৃহত্তর স্থান নিয়ে (১.৮৮ একর জমি, স্কুল ভবন ও মাঠ মিলে) একটি মাঠ স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো সেখানে বর্তমান সময়ে খেলার কোনো সুযোগ নেই বরং হাঁটু পানিতে কিংবা তারও বেশি পানিতে মাছ চাষ করা হচ্ছে। বাধ্য হয়ে প্রতিদিন জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের অনুষ্ঠান স্কুলের দ্বিতীয় তলায় কোনো রকমে সেরে নিতে হচ্ছে। পুরো মাঠটি এখন পানিতে টইটম্বুর করছে। মাঠের মধ্যে নেটের জাল উল্টো মশারির মতো করে স্থাপন করে তার মধ্যে মাছের রেণু চাষ করা হচ্ছে। রেণু বড় হওয়ার সাথে সাথে (চালাই পোনা) ব্যাপারীদের কাছে বিক্রয় করে দেয়া হয়। স্থানীয়রা মাঠে মাছ চাষ করলেও স্কুলকে কোনো অর্থ দেয় না। বরং মাছের জন্য খাদ্য ব্যবহার করে পানি নষ্ট ও পরিবেশ বিনষ্ট করে চলেছে। এভাবে বর্ষা মৌসুমে মাছ চাষের ক্ষেত হিসাবে স্কুল মাঠ ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ফলে স্কুলের স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘিœত হওয়ার পাশাপাশি এলাকার খেলাধুলা ও মুক্ত অবকাশের জন্য ব্যবহৃত মাঠটি ব্যবহারের সুযোগ বঞ্চিত হয়ে শিশু ও যুব সম্প্রদায় মনোকষ্টে রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, মাঠের পানি নিষ্কাশনের জন্য সুব্যবস্থা না থাকায় বর্ষা মৌসুমে মাঠটি জলাবদ্ধতার শিকার হয়ে থাকে। পানিতে মাঠটি তলিয়ে থাকে বিধায় মাঠটি মাছ চাষের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন জানান, স্কুলের মাঠের পানি নিষ্কাশন হতো দক্ষিণ এলাকা দিয়ে। সেখানে ঘরবাড়ি হয়ে যাওয়ায় পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে ৫/৬ বছর যাবত স্কুলের মাঠ ২ ফুট/আড়াই ফুট পানিতে তলিয়ে থাকে। ফলে পুরো বর্ষা মৌসুম এবং পরবর্তীতে পানি শুকিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত মাঠটি ব্যবহার করা যায় না। এ নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর আলম লিটন চেষ্টা করলেও নিরসন সম্ভব হয়নি বলে তিনি জানান। এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধŸতন কর্তৃপক্ষ ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন