শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

রামগতি-কমলনগরে জংলা বাঁধ দিয়ে মেঘনার ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা ইসলামী আন্দোলনের

রামগতি (লক্ষ্মীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১০ আগস্ট, ২০২০, ৪:২০ পিএম

মেঘনার ভাঙন প্রতিরোধে বাঁশ, গাছ ও গাছের ডালপালা দিয়ে ‘জংলা বাঁধ’ নির্মাণ করছেন লক্ষ্মীপুরের রামগতি-কমলনগর উপজেলা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতাকর্মীরা।
ইতিমধ্যে প্রায় ২ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করেছে দলটির নেতাকর্মীরা। সম্প্রতি লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার নাছিরগঞ্জ বাজারসংলগ্ন মেঘনার পাড়ে এই জংলা বাঁধ দেন তারা।দীর্ঘ তিন যুগ ধরে লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগর উপজেলায় মেঘনার ভয়াবহ ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু ভাঙন প্রতিরোধে কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। উপায় না দেখে নিজেদের বসতভিটা রক্ষায় নদীতে বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেন চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। গত কয়েকদিন থেকে সাড়ে তিন শতাধিক নেতা কর্মী ও ওলামারা মিলে স্বেচ্ছাশ্রমে কমলনগর উপজেলার নাছিরগঞ্জ বাজারে বাঁধের কাজ শুরু করেন। বাজারের দক্ষিণ ও উত্তর পাশে মেঘনার তীরে তিন কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের।ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতা মাওলানা নোমান সিরাজী জানান, তারা তাদের দলীয় নেতাকর্মী ও এলাকার ওলামা মাশায়েখদের নিয়ে সম্পুর্ণ স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশ, গাছ ও গাছের ডালপালা দিয়ে বাঁধটি নির্মাণ করছেন। এ কাজে সমাজের বিত্তশালীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
পরে এই বাঁধ নির্মাণকাজ পরিদর্শনে আসেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মোবারক হোসেন। এ সময় তাঁরা এলাকাবাসীর এ উদ্যোগে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।বাঁধ নির্মাণের উদ্যোক্তা লক্ষ্মীপুর-৪ রামগতি- কমলনগর আসনের হাতপাখা প্রতিকের প্রার্থী ও ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতী শরীফুল ইসলাম জানান, নদীভাঙনে চর কালকিনি প্রায় বিলীন। শেষমেশ বিলীন হতে চলছে নাছিরগঞ্জ বাজার। এতে এলাকাবাসী দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। নিরুপায় হয়ে তাঁরা এ বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেন। ঐ এলাকায় তার দলের সহযোগী সংগঠনের প্রায় সাড়ে তিনশ নেতাকর্মী এ কাজে অংশ গ্রহন করেন।বিভিন্ন স্থান থেকে ঝোপঝাড়, গাছপালা সংগ্রহ করে বাঁধ নির্মাণ করছেন। এখন বাঁধ নির্মাণকাজে সহায়তার জন্য এগিয়ে এসেছেন এলাকার সাধারণ মানুষ, ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরাও।এলাকাবাসী জানান, সদর উপজেলা থেকে রামগতি পর্যন্ত ৩৭ কিলোমিটারের মধ্যে ৫ কিলোমিটার এলাকায় নদীর তীর রক্ষা বাঁধ রয়েছে। কিন্তু অরক্ষিত ৩২ কিলোমিটার এলাকা ধীরে ধীরে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। জনপ্রতিনিধিরা নদীশাসনের কাজ করার কথা বললেও বাস্তবে তা হচ্ছে না। গত ঈদুল ফিতরের দুই দিন আগে চরফলকন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এর আগে বিদ্যালয় ভবনটির অর্ধেক নদীতে ভেঙে পড়ে।
অন্যদিকে রামগতি উপজেলার চর রমিজ ইউনিয়নের বয়ারচরের টাংকি বাজার এলাকায় একটি বিশাল ঝাউবাগান ছিল। ওই বাগানটি সব সময় পর্যটনমুখর ছিল। ২০১৯ সালের শেষের দিকে পুরো ঝাউবাগানটি মেঘনার বুকে বিলীন হয়ে যায়।
চর মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউছুফ আলী জানান, বসতভিটা হারিয়ে তিন যুগে কয়েক লাখ মানুষ নিঃস্ব হয়েছেন। ভাঙন প্রতিরোধে প্রকল্পের কাজ শুরু করার জন্য আন্দোলন–সংগ্রাম করেও কোনো কাজের কাজ হয়নি। তাই নিজেদের বসতভিটা ও গ্রামকে রক্ষা করতে এলাকার আলেম ওলামারা নিজেদের অর্থে ও স্বেচ্ছাশ্রমে জংলা বাঁধের উদ্যোগ নেয়।ইউএনও মোহাম্মদ মোবারক হোসেন বলেন, ‘জংলা বাঁধটি পরিদর্শন করেছি। আলেম ওলামা ও এলাকাবাসীর সম্মিলিত উদ্যোগে এ কাজটি চলছে। মেঘনার ভাঙন রোধে একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আশা করি এটি একনেকে পাশ হলে কাজ শুরু হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
মুহাম্মদ আবদুল আহাদ ১১ আগস্ট, ২০২০, ২:৩২ পিএম says : 0
ধন্যবাদ ইসলামী আন্দোলন কে
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন