শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

হালাল পানাহার ইবাদত কবুলের শর্ত

মুফতি আবুল হাসান মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ | প্রকাশের সময় : ১১ আগস্ট, ২০২০, ১২:০২ এএম

একজন মুমিন বান্দাহকে বিশ্বাসের ক্ষেত্রে, ইবাদতের ক্ষেত্রে যেমন কিছু বিধি-বিধান এবং নিয়ম মেনে চলতে হয়, কিছু বিশ্বাস তাকে স্থাপন করতে হয়, কিছু ইবাদত তাকে করে যেতে হয়, ঠিক এমনিভাবে তার জীবন চলার যত উপকরণ সেগুলোর ক্ষেত্রেও নির্ধারিত বিধি-বিধানের মধ্যে তাকে চলতে হয়। এর ভেতরে তার খাবার-দাবার, তার থাকা, পোশাক-পরিচ্ছেদ এ জাতীয় যা কিছু আছে, যাকে এককথায় আমরা রিজিক বলি- সবই অন্তর্ভুক্ত।
রিজিক শব্দটা অনেক ব্যাপক। অনেকে রিজিক বলতে শুধু খাবার বোঝে। রিজিক শুধু খাবার না। এই যা কিছু বললাম, সব কিছু এর ভেতরে আছে। যত রকমের ব্যবহার, যত রকমের উপভোগ, জীবন চলার জন্য মানুষের যা কিছু প্রয়োজন সবই রিজিকের অন্তর্ভুক্ত। এ জন্য রিজিকের সাথে হালাল এবং হারামের কথা বলা হয়।

মালয়েশিয়ার এক মন্ত্রী মজার কথা বলেছিলেন। কথাটা সঠিক। কিছুদিন আগে কোনো কনফারেন্সে তিনি বলেছিলেন, আমরা খাবার খাওয়ার সময় হালাল খোঁজ করি- শুকর না গরু, তা যাচাই করি। শুকর হলে খাই না, গরু হলে, মুরগি হলে খাই। কিন্তু এ গরু আর মুরগি কিভাবে অর্জিত হয়েছে- বৈধ পন্থায় না অবৈধ পন্থায়, ওই পর্যন্ত আমরা হালাল-হারাম খোঁজ করতে যাই না। হালাল-হারামের শেষ স্তরটা দেখি। মুরগি কিনতে পারছি, এটা ঠিক আছে। মুরগিটার জবাই ঠিকমতো হয়েছে কি না, এটা কেউ কেউ খোঁজ করি, কিন্তু মুরগি যে পয়সা দিয়ে কিনল সে পয়সাটা হালাল, না হারাম ওটা আমরা দেখি না। হালাল এবং হারাম একেবারে উৎস থেকে শুরু হয় এবং শেষ পর্যন্ত ধাপে ধাপে চলে।

হালাল-হারামের বিষয়ে হাদিসে বলা হয়েছে যে, আল্লাহতায়ালা রাসূলদের যে নির্দেশ দিয়েছেন, মুমিনদেরকেও সে নির্দেশ দিয়েছেন। রাসূলদেরকে কী নিদের্শ দিয়েছেন, হে রাসূলগণ, আপনারা পবিত্র খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ করুন এবং নেক আমল করুন। লক্ষ্যণীয় যে, রাসূলদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন ‘পূতপবিত্র খান’ এবং এটা আগে বলেছেন। পরে বলেছেন, ‘নেক আমল করুন।’

ভোগ শব্দটা এখন খুব ব্যবহার হচ্ছে! আমার হাসিও আসে, দুঃখও লাগে। বাজেট পেশ করার সময় বলতে শোনা যায়, দেশ উন্নত হয়ে যাচ্ছে! উন্নত হয়ে যাচ্ছে!! কয়েক বছর থেকে খুব করে শোনা যাচ্ছে, ভোগ বাড়ছে! ভোগ বাড়ছে!! যেন ভোগ বাড়লেই উন্নতি হয়ে যায়। যেন মানুষ দুনিয়াতে শুধু ভোগের জন্য এসেছে। ভোগ বাড়লে মানুষের উন্নতি হয়ে যায় কিভাবে? হয়তো ভোগ বাড়ছে বলে বোঝাতে চাচ্ছেন যে, মানুষ বেশি কামাচ্ছে, আয় বেশি হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, ভোগটা বৈধ হচ্ছে কি না? খুব বেশি যারা ভোগ করছেন, তারা ক’জন শুদ্ধভাবে কামাই করে ভোগ করতে পারছেন? ক’জন অবৈধভাবে কামাই করে ভোগ করছেন? এ বিষয়গুলো ফরক করার দরকার আছে। একজন মুসলিমের জন্য, একজন মুমিনের জন্য, একজন মানুষের জন্য এ জিনিসগুলো পার্থক্য করার দরকার আছে।

ইসলামে কামাই করে খেতে মানুষকে বারবার উৎসাহিত করা হয়েছে। সাহাবায়ে কেরামের জিজ্ঞাসায় এসেছে, কোন খাবারটা ভালো, কোন কামাইটা ভালো। রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্ন ভাষায় বলেছেন, ‘নিজের উপার্জিত আয় ‘আতয়াব’, মানে অতি উত্তম, বেশি ভালো। অর্থাৎ ইসলাম মানুষকে অলস বসে থাকার, অন্যের ধন-সম্পদে নজর দেয়ার, বেকারভাতা গ্রহণ করার জন্য বসে থাকার এবং দান-সদকা নির্ভর থাকার প্রতি উদ্বুদ্ধ করেনি। এর বিপরীতটার প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছে। মানুষ কামাই করবে, খরচ করবে। এটার প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছে। শুধু উদ্বুদ্ধই করেনি, বাস্তবে দেখিয়ে দিয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
এমদাদুল হক ১১ আগস্ট, ২০২০, ৩:১৯ এএম says : 0
পানাহার হালাল না হলে কোনো ইবাদতই আল্লাহর কাছে কবুল হবে না
Total Reply(0)
জুয়েল ১১ আগস্ট, ২০২০, ৩:১৯ এএম says : 0
আল্লাহ আমাদেরকে এ বিষয়গুলো বোঝার এবং সে অনুযায়ী চলার তৌফিক দান করুক
Total Reply(0)
গোলাম কাদের ১১ আগস্ট, ২০২০, ১০:০০ এএম says : 0
এই বিষয়টা নিয়ে লেখার জন্য দৈনিক ইনকিলাব ও লেখককে অনেক অনেক মোবারকবাদ জানাচ্ছি
Total Reply(0)
জান্নাতুল নাঈম মনি ১১ আগস্ট, ২০২০, ১০:০১ এএম says : 0
হালাল ভাবে উপার্জন করে হালাল পানাহার করা আমাদের দায়িত্ব
Total Reply(0)
ডালিম ১১ আগস্ট, ২০২০, ১০:০২ এএম says : 0
আল্লাহ আমাদেরকে তার দেওয়া আদেশ নিষেধ মেনে চলার তৌফিক দান করুক
Total Reply(0)
shahidul islam ১১ আগস্ট, ২০২০, ১১:৪৯ এএম says : 0
right
Total Reply(0)
Md reza ১১ আগস্ট, ২০২০, ১১:০৩ পিএম says : 0
আল্লাহ আমাদের সবাই কে হালাল রুজি রোজকার করার তাওফিক দান করুন এবং পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করার তাওফিক দান করুন আমিন।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন