বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

পাঁচ মাস পর আরডিসি নাজিম উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত

ডিসির শুনানী চলছে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ আগস্ট, ২০২০, ১২:০০ এএম

গত রোববার কুড়িগ্রাম জেলার সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীন ব্যক্তিগত শুনানিতে অংশ নিয়েছেন। এখনো তার বিষয় কোন সিদ্ধান্ত আসেনি। মধ্যরাতে সাংবাদিক আটকের ঘটনায় আরডিসি নাজিম উদ্দিনকে প্রায় পাঁচ মাস পর সাময়িক বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুন ফোনে ইনকিলাবকে বলেন, সবকিছু বিচার-বিশ্লেষণ করেই সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সাবেক ডিসি গতরোববার ব্যক্তিগত শুনানিতে অংশ নিয়েছেন। শুনানী এখনো ছলছে। তার বিষয় সিদ্ধান্ত আনেনি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ গুলো গুরুতর। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা চলমান। তাকে কোথাও পদায়ন করা হলে তিনি আরও অনেক ঘটনা ঘটাতে পারেন। প্রশাসন তার কাজে আরও বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে পারে।
গত ১৩ মার্চ মধ্যরাতে বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলামের বাড়িতে ঢুকে তাকে ধরে নিয়ে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত এক বছরের কারাদন্ড দেয়। তার বাড়িতে আধা বোতল মদ এবং গাঁজা পাওয়ার অভিযোগ আনা হয়। এভাবে মধ্যরাতে বাড়ি থেকে একজন সাংবাদিককে ধরে এনে সাজা দেওয়ার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। গণমাধ্যমে এ ঘটনা ফলাও করে প্রচার হলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনায় পরদিন ঘটনাস্থলে যান অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) আবু তাহের মো. মাসুদ রানা। তার প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন, আরডিসি নাজিম উদ্দিন ও সহকারী কমিশনার রিন্টু বিকাশ চাকমা ও এসএম রাহাতুল ইসলামকে প্রত্যাহার করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়। বিভাগীয় কমিশনারের তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে তাদের কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়। ইতিমধ্যে তারা চারজনই কারণ দর্শানো নোটিসের জবাব দিয়েছেন।
নাম প্রকশে অনিচ্ছু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের শৃখলা শাখার এক যুগ্মসচিব বলেন, কুড়িগ্রাম জেলার সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীন ব্যক্তিগত শুনানিতে অংশ নিয়েছেন। তার বিষয়ে কোন সিদ্ধান্তহয়নি। শুনানী শেষে হয়তো ব্যবস্থা নিবে মন্ত্রণালয়।
গত রোববার জনপ্রশাসন সচিবের দপ্তরে ব্যক্তিগত শুনানিতে অংশ নিয়েছেন কুড়িগ্রামের সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীন। সেখানে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন বলে জানা গেছে। তিনি কারণ দর্শানো নোটিসের জবাবেও নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছিলেন। গত ২৫ জুন অভিযোগের জবাব দিয়েছেন তিনি। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, মধ্যরাতে সাংবাদিক আটক ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সময় তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন। মোবাইল ফোনে আসা মিস কল নম্বরে পরের দিন সকালে ফোন ব্যাক করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিবের কাছ থেকে প্রথম ঘটনা শুনেছেন। সাজা দেওয়ার ঘটনায় নিজের সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। তিনি জানিয়েছেন, তিনি কোনো মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেননি। মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য তিনি কোনো মৌখিক বা লিখিত নির্দেশনা দেননি। এ বিষয়ে তিনি অবগত ছিলেন না।
অন্যদিকে নাজিম উদ্দিন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে মধ্যরাতে সাংবাদিক আটকের সময় সেখানে উপস্থিত না থাকার দাবি করেছেন। যদিও তার ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমার কারণ দর্শানো নোটিসের জবাবে। ঘটনাস্থলে তার উপস্থিতির কথা বিভিন্ন গণমাধ্যমেও প্রকাশ হয়েছে। নাজিম উদ্দিন জানান, তিনি কোনো ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেননি। মধ্যরাতে সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে ধরে নিয়ে যাননি বা তার সঙ্গে ‘শিষ্টাচারবহির্ভূত’ আচরণ করেননি। বৈরিতা না থাকায় তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের কোনো কারণ ছিল না বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।কক্সবাজারের সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে কর্মরত থাকাকালে তার বিরুদ্ধে ওঠা বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিক নফু মাঝিকে কান ধরে ওঠবস করানোর ঘটনাটিকেও কারণ দর্শানো নোটিসে সংযুক্ত করা হয়। এ অভিযোগও অস্বীকার করেন তিনি। এর আগে সহকারী কমিশনার রিন্টু বিকাশ চাকমা ও এসএম রাহাতুল ইসলামও কারণ দর্শানো নোটিসের জবাব দিয়েছেন এবং ব্যক্তিগত শুনানিতে অংশ নিয়েছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন