মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

বিশ্বজুড়ে ৫৭০ কোটি ডোজ করোনা ভ্যাকসিন অগ্রিম বিক্রি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ আগস্ট, ২০২০, ২:৫৯ পিএম | আপডেট : ৩:৫০ পিএম, ১২ আগস্ট, ২০২০

যদিও রাশিয়া ছাড়া আরও কোন দেশ এখনও তাদের পরীক্ষাধীন করোনা ভ্যাকসিন ক্লিনিকাল পরীক্ষায় সম্পূর্ণ কার্যকারিতা ঘোষণা করেনি, তবে এর মধ্যেই সারা বিশ্বে বিকাশমান ভ্যাকসিনের ৫৭০ কোটি ডোজ অগ্রিম-অর্ডার দেয়া হয়েছে।

বর্তমানে তিনটি পশ্চিমা এবং দুটি চীনা প্রতিষ্ঠান কয়েক হাজার মানুষের উপরে তাদের পরীক্ষাধীন পাঁচটি ভ্যাকসিনের ফেজ-৩ হিউম্যান ট্রায়াল চালাচ্ছে। এর মধ্যেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মঙ্গলবার দাবি করেছেন যে, তাদের তৈরি ভ্যাকসিন ‘স্পুটনিক ভি’ সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করেছে এবং করোনাভাইরাস বিরুদ্ধে ‘দীর্ঘস্থায়ী প্রতিরোধ’ গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, সুইডিশ-ব্রিটিশ ফার্মাসিউটিক্যাল গ্রুপ অ্যাস্ট্রাজেনেকা’র সাথে কাজ করছে। তারা চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাদের ভ্যাকসিন সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিতে পারবে বলে আশাবাদী। মার্কিন বায়োটেক সংস্থা মোডার্না, মার্কিন জাতীয় ইনস্টিটিউটস অফ হেলথ (এনআইএইচ) এর সাথে কাজ করছে। তারাও চলতি বছরের নভেম্বরের মধ্যে তাদের ভ্যাকসিন আসতে পারে বলে জানিয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২১ সালের জানুয়ারির যুক্তরাষ্ট্রে একটি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন বিকাশ, উৎপাদন এবং বিতরণ করার জন্য ‘অপারেশন ওয়ার্প স্পিড’ চালু করেছেন। মার্চের শেষের দিকে জনসন এন্ড জনসনকে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলারসহ অন্যান্য ভ্যাকসিন বিকাশকারীদেরকে লাখ লাখ ডলার সহযোগিতা করা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অন্যান্য দেশের চেয়ে বেশি সংস্থাকে অর্থ বরাদ্দ করেছে এই আশায় যে, তারাই সবার আগে ভাইরাস প্রতিরোধের জন্য ভ্যাকসিন নিয়ে আসবে।

এখনও অবধি ওয়াশিংটন মোট সাতটি প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাকসিন বিকাশের জন্য অন্তত ৯৪০ কোটি ডলার বিতরণ করেছে। এগুলো হলো, জনসন এন্ড জনসন, মোডার্না, অক্সফোর্ড/অ্যাজট্রাজেনেকা, নোভাভ্যাক্স, ফাইজার/বায়োএনটেক, সানোফি/জিএসকে, মার্ক শার্প এবং দোহমে। এদের মধ্যে ৭০ কোটি ডোজ সরবরাহের জন্য পাঁচটির সাথে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

ব্রিটেন ব্রেক্সিটের কারণে, আলাদাভাবে চারটি প্রতিষ্ঠানের সাথে ২৫ কোটি ডোজের প্রি-অর্ডার নিয়ে আলোচনা করছে। জাপান আমেরিকার নোভাভ্যাক্স থেকে ২৫ কোটি ডোজসহ তিন সরবরাহকারী থেকে ৪৯ কোটি ডোজ প্রি-অর্ডার করছে। জাপানের ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট টেকেদা নোভাভ্যাক্স ভ্যাকসিনের গবেষণার জন্য অর্থায়ন করেছে। তারা এটি স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করবে। ব্রাজিল অনুরূপভাবে অ্যাস্ট্রাজেনেকা থেকে ১০ কোটি ডোজ অর্ডার করেছে এবং চীনের সিনোভ্যাকের সাথে অংশীদার হয়ে ১২ কোটি ডোজ ‘কোরোনাভ্যাক’ তৈরি করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

সিনোভাক ও সিনোফর্ম, দুই চীনা ভ্যাকসিন প্রার্থীর ক্লিনিকাল পরীক্ষা ভাল চলছে। তারা অল্প কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সাথে অংশীদারিত্বের ঘোষণা দিয়েছে। একটি ব্রাজিলের সাথে এবং অপরটি সম্ভবত ইন্দোনেশিয়ার সাথে। রাশিয়ার তৈরি নতুন ভ্যাকসিন ‘স্পুটনিক ভি’র ১০০ কোটি ডোজ পাওয়ার জন্য ২০ টি দেশ ইতিমধ্যে ১০০ কোটি ডোজের অর্ডার দিয়েছে। বিদেশী অংশীদারদের সাথে তারা পাঁচটি দেশে বছরে ৫০ কোটি ডোজ উৎপাদন করতে সক্ষম হবে।

ভারত, নরওয়ে, বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন এবং ওয়েলকাম ট্রাস্ট দ্বারা ২০১৩ সালে চালু হওয়া মহামারী প্রস্তুতি ইনোভেশনস (সিইপিআই) কোয়ালিশন ভবিষ্যতের ভ্যাকসিনগুলো ‘ন্যায়সঙ্গতভাবে সবার পাওয়ার অধিকার’ নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে। তারা দ্য ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্সের (গাভি) এর সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কয়েক ডজন উন্নয়নশীল দেশের জন্য অ্যাস্ট্রাজেনেকা থেকে ৩০ কোটি ডোজ পাওয়ার জন্য প্রি-অর্ডার করেছে।

বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন উৎপাদক প্রতিষ্ঠান সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (এসআইআই) এশিয়া এবং অন্যান্য দেশের জন্য কোটি কোটি ডোজ ভ্যাকসিন উৎপাদন করবে। নোভাভ্যাক্স এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকা পৃথকভাবে এসআইআইয়ের সাথে ভারত এবং নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশগুলির জন্য ১০০ কোটি ডোজ তৈরির চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যদি ক্লিনিকাল ট্রায়ালে তাদের ভ্যাকসিন কার্যকারিতা প্রমাণ করে। সূত্র: ইউকে ম্যাটিনস ২৪।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন