শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

জীবিকাহীন ৭০ শতাংশ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ আগস্ট, ২০২০, ১২:০০ এএম

দেশের ১২ জেলায় বিদেশ ফেরত কর্মীদের ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, গত ফেব্রুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে বিদেশ ফেরতদের প্রায় ৭০ শতাংশই জীবিকাহীন। তারা অর্থ ও স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) পরিচালিত র‌্যাপিড অ্যাসেসমেন্ট অব নিডস অ্যান্ড ভালনারেবিলিটিস অব ইন্টার্নাল অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল রিটার্ন মাইগ্র্যান্টস ইন বাংলাদেশ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় আইওএম।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, একেকজন অভিবাসী গড়ে তার পরিবারের তিন সদস্যকে সহায়তা প্রদান করে থাকেন। সেক্ষেত্রে অপরিকল্পিত ও বৃহৎ সংখ্যক জীবিকাহীন অভিবাসী কর্মীদের ফেরত আসার ফলে সারাদেশে রেমিট্যান্স নির্ভর জনগোষ্ঠীর ওপরও বিরূপ প্রভাব পড়ছে।
সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে মোট এক হাজার ৪৮৬ জন বিদেশ ফেরত অভিবাসী কর্মীকে নিয়ে পরিচালিত জরিপের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে আইওএম। গত মে ও জুলাই মাসে ১২টি উচ্চ অভিবাসন প্রবণ জেলায় এ জরিপ পরিচালনা করা হয়। করোনা মহামারির দরুণ কাজ না থাকায় বিদেশ থেকে নিজ জেলায় ফিরে আসতে বাধ্য হন অভিবাসী কর্মীরা। মোট ৬৪ শতাংশ আন্তর্জাতিক অভিবাসী উল্লেখ করেন যে, করোনার প্রাদুর্ভাবে দেশে তথ্য ও স্বাস্থ্যসেবা পেতে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় তাদেরকে। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ২৯ শতাংশ বলেছেন, দেশত্যাগ করতে বলায় তারা বাংলাদেশে ফেরত এসেছেন। ২৩ শতাংশ জানান, তারা করোনা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন এবং পরিবারের কাছে ফেরত আসতে চেয়েছেন। ২৬ শতাংশ প্রত্যাগত কর্মী জানান, তাদের পরিবার তাদেরকে ফেরত আসতে বলায় ফিরে এসেছেন তারা। ৯ শতাংশ জানান, তাদেরকে বলা হয়েছে সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হবে। ফলে আটকে পড়ার ভয়ে তারা ফেরত এসেছেন।
সাক্ষাৎকার প্রদানের সময় ৫৫ শতাংশ কর্মী জানান, তাদের ওপর ঋণের বোঝা রয়েছে। তাদের মধ্যে ৫৫ শতাংশ পরিবার ও বন্ধুর কাছে ঋণগ্রস্ত, ৪৪ শতাংশ ক্ষুদ্র, ঋণপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠান (এমএফআই), স্বনির্ভর দল এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে ঋণগ্রস্ত। ১৫ শতাংশ পাওনাদারদের কাছে ঋণগ্রস্ত। পরিবার এবং বন্ধুদের কাছ থেকে ঋণ গ্রহণকারীদের ৮৬ শতাংশ বিনা সুদে ঋণ নিয়েছেন, অন্যদিকে এমএফআই, এনজিও এবং বেসরকারি ব্যাংকসমূহ থেকে গৃহীত ৬৫ শতাংশকে ঋণের জন্য সুদ বহন করতে হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ। মহাজন বা সুদে টাকা ধার দেন এমন ব্যক্তিদের কাছ থেকে নেয়া ঋণের ক্ষেত্রে ৬২ শতাংশ ঋণগ্রহিতাকে সুদ গুণতে হচ্ছে ৫০ থেকে ১৫০ শতাংশ। আইওএম’র বাংলাদেশ মিশন প্রধান গিওরগি গিগাওরি বলেন, করোনায় সবচেয়ে বিপদাপন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে অভিবাসীকর্মীরা। বৈশ্বিক চলাচলের ওপর আরোপিত নতুন নিষেধাজ্ঞা এবং করোনা মহামারি সৃষ্ট মন্দার ফলে বিরূপ প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশের অভিবাসী কর্মী এবং রেমিট্যান্স নির্ভর জনগোষ্ঠীর ওপর।
সাক্ষাৎকারে ৭৫ শতাংশ জানান, তারা আবার অভিবাসনে আগ্রহী। তাদের মধ্যে ৯৭ শতাংশই করোনা প্রাদুর্ভাবের আগে যে দেশে কাজ করতেন সেই দেশেই পুনরায় অভিবাসনে ইচ্ছুক। অপরদিকে, ৬০ শতাংশ অংশগ্রহণকারী আরো ভালো বেতনের চাকরি নিশ্চিতে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আগ্রহী। বাংলাদেশ এবং আঞ্চলিক পর্যায়ের জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, আন্তর্জাতিক ও বেসরকারি এবং স্থানীয় সংস্থা, এবং শিক্ষা সংস্থার অংশীদারগণ এই ব্রিফিংয়ে অংশ নেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন