শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে খাদ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থাকে প্রাধান্য দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ আগস্ট, ২০২০, ১২:০১ এএম

যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের রাজনৈতিক অর্থনীতির সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন হিসেবে অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের লক্ষ্য নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে জনগণকে একটি মর্যাদাপূর্ণ জীবন যাপনে সক্ষমতা দানের জন্য খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি এবং ক্ষতিগ্রস্থ যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনর্গঠনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে সফলভাবে একটি রাষ্ট্র বিনির্মান কৌশল গ্রহণ করেছিলেন।

পাকিস্তানে বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়ে দেশে ফেরার পরপরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অর্থনীতি পুনর্গঠন ও যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করেন। তিনি এক্ষেত্রে তার দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগান।

দুর্দশাগ্রস্ত মানুষকে সামাজিক ও অর্থনৈতিক মুক্তি এনে দিতে একটি ক্ষুধা ও দরিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন নিয়ে বঙ্গবন্ধু যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও খাদ্য উৎপাদনের উপর প্রাধান্য দেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রকাশিত স্মরনিকায় জুলিয়ান ফ্রান্সিস তার ‘থিংকিং অ্যাবাউট অ্যান্ড রিমেম্বারিং বঙ্গবন্ধু’ আর্টিকেলে লিখেন ‘তখন খাদ্য উৎপাদন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার সংস্কার করাই ছিল সবচেয়ে জরুরি। এই দুটির প্রয়োজনীয়তা ছিল সবচেয়ে বেশি। কারণ দেশের বিভিন্ন স্থানে খাদ্য সরবরাহে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ছিল অপরিহার্য। এটা লক্ষণীয় যে বঙ্গবন্ধু প্রশাসন শরণার্থীদের খুবই সুশৃঙ্খলভাবে দেশে ফিরিয়ে আনে।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় কমিটি এই স্মারক গ্রন্থটি প্রকাশ করে। সুনামধন্য ব্রিটিশ এনজিও অক্সফাম এর সাবেক কর্মকর্তা জুলিয়ান ফ্রান্সিস ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানী হানাদারদের ভয়ে প্রাণ বাঁচাতে ভারতে আশ্রয় গ্রহণকারী বাংলাদেশী শরণার্থীদের মাঝে কাজ করেন।
তিনি বলেন, তিনি ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর নির্মম বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞ সম্পর্কে অবগত। তিনি আরো বলেন, ‘পরে ভারতীয় সীমান্ত এলাকায় শরণার্থী শিবিরগুলোতে আমি অক্সফামের ব্যাপক ত্রাণ কর্মকাÐে যুক্ত ছিলাম। সেই সময়ে ৬ লাখ বাংলাদেশী নারী, পুরুষ ও শিশুকে ত্রাণ দেয়া হচ্ছিল।’

ফ্রান্সিস বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি বাংলাদেশে আসেন এবং বঙ্গবন্ধুর সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। ১৯৭১ সালে ভারতে নির্বাসিত বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ এ সময় বঙ্গবন্ধুর সাথে ফ্রান্সিসের সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে দেন।

তিনি বঙ্গবন্ধুকে বলেছিলেন যে, অক্সফামের মতো ছোট সংগঠন বাংলাদেশের পুনর্গঠন ও উন্নয়নে কি ধরনের সাহায্য করতে পারে সে সম্পর্কে তিনি বঙ্গবন্ধুর পরামর্শ চান। ফ্রান্সিস বলেন, তখন বঙ্গবন্ধু তার মুখ থেকে পাইপ সরিয়ে আমার দিকে ধোঁয়া ছেড়ে বলেন, ‘হে যুবক আপনি কিভাবে এখানে এলেন?’ আমি তাকে বললাম যে, আমি কোলকাতা থেকে সড়কপথে এখানে এসেছি। তখন তিনি বললেন, ‘আপনি তাহলে আমার চেয়ে বেশি এই দেশকে দেখেছেন। কারণ নয় মাস আমি কারাগারে আটক ছিলাম। তাই দয়া করে আপনিই আমাকে বলুন আমার দেশের কি প্রয়োজন? আপনি কি দেখলেন?’

ফ্রান্সিস বলেন, বঙ্গবন্ধুর সাথে ওই বৈঠকের পর অক্সফাম তিনটি ট্রাকবাহী ফেরি সংগ্রহ করে নিয়ে এলো এবং আরো অনেকগুলো মেরামতে সহায়তা করল।###

 

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন