টেকনাফে পুলিশের গুলিতে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হচ্ছে। র্যাব-১৫ এর সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) জামিল আহমদকে এই মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছিল।
তার স্থলে নতুন একজন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হচ্ছে। ফলে (১৩ আগষ্ট) বৃহস্পতিবার আসামিদের রিমান্ডে নেওয়ার কথা থাকলেও কারাগার থেকে না নিয়েই ফেরত গেছে র্যাবের একটি টিম।
র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক উইং কমান্ডার আজিম আহমদ সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। তিনি বলেন, কিছু সমস্যার কারণে এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হচ্ছে। আজ-কালের মধ্যে নতুন একজন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে। বিষয়টি আদালতকে অবহিত করা হবে। এরপর রিমান্ড মন্জুর করা আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবেও তিনি জানান।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার ৪ জন আসামিকে রিমান্ডে নেওয়ার কথা ছিল। সব কিছু ঠিক থাকলে তাদেরকে শুক্রবার রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় কক্সবাজার জেলা কারাগারে গিয়েছিলেন মামলার তদন্তকারী সংস্থা র্যাবের একদল সদস্য। তারা দীর্ঘক্ষণ জেল সুপারের অফিসে বসেছিলেন। পরে আসামিদের না নিয়ে ফিরে যান।
রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া ৪ আসামি কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন ও এএসআই লিটন মিয়াকে বৃহস্পতিবার রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা ছিল।
গত ৮ ও ৯ আগস্ট কক্সবাজার কারাগার ফটকে এই ৪ আসামি-কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন ও এএসআই লিটন মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পায় র্যাব।
ফলে তাদেরকে আরো ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দশ দিনের রিমান্ড চেয়ে ১০ আগস্ট আদালতে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব-১৫ এর সহকারী পুলিশ সুপার জামিল আহমদ। শুনানি শেষে আদালত তাদের প্রত্যেকের জন্য ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এই মামলায় টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলী ও এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতকে গত ৬ আগস্ট সাত দিনের রিমান্ড আদেশ দেন আদালত। তবে চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার ৭ আসামির কাউকে এখনো পর্যন্ত রিমান্ডে নেয়নি র্যাব।
গত ৩১ জুলাই পুলিশের গুলিতে খুন হন সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় তার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস পুলিশের ৯ জনকে আসামি করে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গত ৫ আগস্ট হত্যা মামলা দায়ের করেন।
অন্যদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে এর আগে রামু ও টেকনাফ থানায় ৩টি মামলা দায়ের করা হয়। এই ৩টি মামলায় আসামি করা হয়েছে সিনহার সঙ্গি সাহেদুল ইসলাম সিফাত ও শিপ্রা রাণী দেবনাথকে। ৪টি মামলারই তদন্তভার দেয়া হয়েছে র্যাবকে।
পুলিশের করা তিন মামলার তিন সাক্ষী সিনহা হত্যার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে তাদের গ্রেপ্তার করে র্যাব। তারা হচ্ছে টেকনাফ বারাছরার পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষী নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দিন ও মোঃ আয়াজ।
জিজ্ঞাসাবাদে র্যাব হেফাজতে নিয়ে যাওয়ার জন্য র্যাবের একটি দল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কারাগারে আসেন।
জেল কর্তৃপক্ষ তাদের র্যাব হেফাজতে দেওয়ার জন্য সব প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেও র্যাব তাদের ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের নির্দেশে রিমান্ডপ্রাপ্ত এ সাতজনকে নিয়ে যায়নি বলে জানান জেল সুপার মোকাম্মেল হক।
তবে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ জানান, রিমান্ডপ্রাপ্ত সাত আসামিকে রিমান্ডে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। যে কোনও সময় আসামীদেরকে রিমান্ডে নিয়ে যাওয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন