শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

বিধ্বস্ত লেবাননের ক্ষমতা নিচ্ছে সেনাবাহিনী

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ আগস্ট, ২০২০, ১:০৫ পিএম

লেবাননে গত ৪ আগস্ট ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর আন্দোলনের মুখে সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। এরপরও আন্দোলন অব্যাহত আছে দেশটির প্রেসিডেন্ট ও স্পিকারের পদত্যাগের জন্য। ফলে গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) দেশটির সংসদ জরুরি অবস্থা অনুমোদন করে। ফলে কার্যত ক্ষমতা যাচ্ছে সেনাবাহিনীর হাতে।

প্রায় ১০ মাস আগেও দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগে শুরু হওয়া গণবিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করতে হয়েছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরিকে। এতো অল্প সময়ের মধ্যে দুটি সরকারের পতনের ফলে এখন প্রশ্ন ওঠেছে দেশটির রাজনৈতিক ভবিষ্যত এখন কোন পথে?

নতুন মন্ত্রিসভা গঠন না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান সরকারই তত্ত্বাবধায়কের ভূমিকায় থাকছে। অনেকের আশঙ্কা, নতুন সরকার গঠন দীর্ঘায়িত হবে এবং সেই সময়টিতে দেশ অচল হয়ে থাকবে।

তবে এই জরুরি অবস্থা জারি করা নিয়ে সমালোচনা করছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো। কারণ, জরুরি অবস্থা বাকস্বাধীনতা, সমাবেশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বন্ধসহ বাড়িতে প্রবেশ করে যে কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা জন্য সেনাবাহিনীকে অনুমতি দেয়। যা সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে মনে করা হয়।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও বিভিন্ন সংগঠন জানায়, সামরিক আদালতে বিচারগুলো স্বাভাবিক বিচার প্রক্রিয়ার সঙ্গে খাপ খায় না। বিস্ফোরণের পর সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের দমাতে নিরাপত্তা বাহিনী কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করে এই সংগঠনগুলো।
এর আগে বিস্ফোরণের পরের দিন দুই সপ্তাহ জরুরি অবস্থা জারি করেছিল লেবাননের মন্ত্রীসভা। ওই বিস্ফোরণে ২০০ জনের বেশি মানুষ নিহত ও ৬ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে অভিজাতদের দুর্নীতি ও ঋণের বোঝার চাপে লেবাননের অর্থনীতি আগে থেকেই ভঙ্গুর। দেশটিতে ভয়াবহ মুদ্রাস্ফীতির কারণে ডলারের বিপরীতে দেশীয় মুদ্রার মান তলানিতে ঠেকেছে, নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীন এবং ব্যাংক ব্যবস্থাও প্রায় অচল।
অন্যদিকে বিস্ফোরণে আর্থিক অংকে বৈরুতের ক্ষয়ক্ষতি এক হাজার থেকে দেড় হাজার কোটি মার্কিন ডলার। নগরীর পুনর্গঠনেও কয়েক বছর লেগে যাবে। এসবের জন্য দেশটির এখন প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক সহায়তা প্রয়োজন।

আন্তর্জাতিক দাতাগোষ্ঠী সহায়তার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে। বিস্ফোরণের একদিন পর গত বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বৈরুত সফর করেছেন। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বুধবার জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীও বৈরুতে গেছেন।
অনেকেই মনে করেন সরকারের পদত্যাগ দেশকে আবার সেই সাদ হারিরির পদত্যাগের সময়কার অচলাবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে গেছে। অক্টোবরে হারিরর পতনের পর ফ্রেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় লেগে গিয়েছিল নতুন প্রধানমন্ত্রী দিয়াব আসতে।
কিন্তু বিপর্যয়ে দ্রুত মানুষের সহায়তায় সাড়া দেওয়াটাই কেবল নয় বরং লেবাননে দীর্ঘমেয়াদে শাসনব্যবস্থার ভবিষ্যতই এখন ঝুঁকিতে। ফলে সহসাই দেশটির রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আসছে না বলে ধরে নেয়া হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন