মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

রিমান্ডে র‌্যাবকে দিচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

নতুন তদন্তকারী কর্মকর্তা এএসপি খায়রুল ইসলাম

কক্সবাজার ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৫ আগস্ট, ২০২০, ১২:০০ এএম

অবশেষে সিনহা মো. রাশেদ হত্যা মামলায় পুলিশের চার সদস্য ও এই ঘটনায় পুলিশের দায়ের হত্যা মামলার তিন সাক্ষীকে রিমান্ডে নিয়েছে র‌্যাব। গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টায় কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে র‌্যাবের একটি বহর তাদের নিয়ে যায়। জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিচ্ছ বলে জানা গেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই সেই তথ্য প্রকাশ করছে না র‌্যাব।
সিনহা হত্যা মামলার এই সাত পুলিশ আসামি হলেন, কনস্টেবল সাফানুল করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন ও সহকারী উপ-পরিদর্শক লিটন মিয়া। আর পুলিশের মামলা তিন সাক্ষী মো. আয়াছ, নুরুল আমিন ও নাজিম উদ্দিন।

র‌্যাব সূত্রে জানা গেছে, আলোচিত মেজর (অব) সিনহা হত্যা মামলায় প্রথম রিমান্ড শুনানিতে ‘আত্মসমর্পণ’ করা টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ, এসআই লিয়াকত ও এএসআই নন্দদুলালের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত এবং অন্য চার আসামিকে দুইদিন করে জেলগেইটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেয়। অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত ১০ আগস্ট তাদের রিমান্ড আবেদন করা হয়। ১২ আগস্ট তাদের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

অন্যদিকে সিনহা হত্যা মামলায় পুলিশের দায়ের করা তিন সাক্ষী মো. আয়াছ, নুরুল আমিন ও নাজিম উদ্দিনকে মেজর সিনহা হত্যা ঘটনায় পবিরারের দায়ের করা মামলা আসামি করেছে র‌্যাব। গত ১১ আগস্ট এই তিনজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। ওই দিনই আদালতে তাদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। পরে ১২ আগস্ট শুনানিতে তাদের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড আবেদনের দুইদিন পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিজেদের হেফাজতে নিলো র‌্যাব। তবে ওসি প্রদীসহ তিনজনকে এখনো রিমান্ডে নেয়া হয়নি। তারা বর্তমানে কক্সবাজার জেলা কারাগারে রয়েছে।

এদিকে টেকনাফে সেনাবাহিনীর মেজর (অব) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় নতুন তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নতুন আইও হচ্ছেন মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম। তিনি র‌্যাবে কর্মরত বাংলাদেশ পুলিশের একজন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার।
৩১ জুলাই রাতে নিহত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানের বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌসের করা জিআর : ৭০৩/২০২০, যার টেকনাফ থানার ৯/২০২০ নম্বর মামলায় গতকাল ১৩ আগস্ট তাকে তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এরআগে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) জামিল আহমেদ মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

জানা গেছে, আইও হিসাবে নতুন নিয়োগ পাওয়া সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম একজন মেধা সম্পন্ন দূরদর্শী ও বিচক্ষণ কর্মকর্তা। অতীতে বেশকিছু চাঞ্চল্যকর মামলার আইও হিসাবে তিনি সুনাম ও সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। ইতোমধ্যেই নতুন আইও র‌্যাবের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম নেতৃত্বে রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া আসামি বরখাস্ত হওয়া ৪ পুলিশ সদস্য কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন ও এএসআই লিটন মিয়া। এছাড়া সন্দেহজনক তিন আসামি টেকনাফের বাহারছরার মারশবনিয়া এলাকার নাজিম উদ্দিন নাজু›র পুত্র নুরুল আমিন, নজির আহমদের পুত্র নিজাম উদ্দিন ও জালাল আহমদের পুত্র মোহাম্মদ আয়াছকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আইও এর হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

গত ৮ ও ৯ আগস্ট কক্সবাজার কারাগার ফটকে ৪ আসামি-কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন ও এএসআই লিটন মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পায় আইও। ফলে তাদেরকে আরো ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করলে ১২ আগস্ট শুনানি শেষে তাদের প্রত্যেকের জন্য ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালতের বিজ্ঞ বিচারক তামান্না ফারাহ্।
ঈদের আগের দিন গত ৩১ জুলাই রাতে পুলিশের গুলিতে খুন হন সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হলে তার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস গত ৫ আগস্ট পুলিশের ৯ সদস্যকে আসামি করে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (টেকনাফ) এর আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

অন্যদিকে, পুলিশ ও নুরুল আমিন নামক একজন আসামির পক্ষে এর আগে রামু ও টেকনাফ থানায় পৃথক ৪টি মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশের করা ওই মামলার তিন আসামিকে সিনহা হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকা সন্দেহে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ড নিয়েছে র‌্যাব।
এদিকে মেজর সিনহা হত্যাকান্ডে গঠিত তদন্ত কমিটি আগামীকাল রোববার মেজর সিনহা নিহত হওয়ার ঘটনাস্থল টেকনাফ বাহারছরা শামলাপুরে গণশুনানির আয়োজন করেন। গণশুনানিতে অংশ গ্রহণের জন্য এলাকাবাসীকে উপস্থিত হওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (18)
মাইনুল হক ১৫ আগস্ট, ২০২০, ১২:৩৫ এএম says : 2
আশ করি পুলিশের উপর থেকে মানুষের ভূল ধারনা সরে যাবে ।
Total Reply(0)
মোঃ দুলাল মিয়া ১৫ আগস্ট, ২০২০, ৩:০৩ এএম says : 0
ঠিক আছে। নিরপক্ষ হতে হবে।
Total Reply(0)
Ahmed Bin Hilal ১৫ আগস্ট, ২০২০, ৩:৩২ এএম says : 0
পুলিশ যদি পুলিশের অপরাধ মামলার তদন্ত করে,, তাহলে নিরোপেক্ষতার প্রশ্ন থেকে গেলো না??
Total Reply(0)
ইমা অর্থপর ১৫ আগস্ট, ২০২০, ৩:৩৫ এএম says : 0
আদালত ৭ দিনের রিম্যান্ড মঞ্জুর করার পরও কেন ওসি প্রদীপ এবং এস আই লিয়াকতকে রিম্যান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা সম্ভব হয়নি এটা Rab কে জাতির সামনে খোলসা করা উচিত।
Total Reply(0)
Akon Alim ১৫ আগস্ট, ২০২০, ৩:৩৬ এএম says : 0
র্যাব থেকে পুলিশের কাছে তদন্ত ভার দেয়ার অর্থকি ? এটা কি প্রশ্ন বিদ্ধ নয়?
Total Reply(0)
Hasan Mo Nir ১৫ আগস্ট, ২০২০, ৩:৩৬ এএম says : 0
প্রদিপ লিয়াকত কে কেনো রিমান্ডে নিচ্ছে না
Total Reply(0)
MD TuTul ১৫ আগস্ট, ২০২০, ৩:৩৭ এএম says : 0
আমাদের দাবি শিবরা কেউ সাতদিনের রিমান্ডে নেওয়া হোক
Total Reply(0)
Md Javed ১৫ আগস্ট, ২০২০, ৩:৩৭ এএম says : 0
ওরা সাময়িক বরখাস্ত? না কি স্থায়ী বরখাস্ত।
Total Reply(0)
Piyash Khan ১৫ আগস্ট, ২০২০, ৩:৩৮ এএম says : 0
মেজর সিনহা হত্যাটি আমার কাছে accident এর মত মনে হয়েছে যার কারণ দায়িত্বহীনতা। তবে সেটিকে কেন্দ্র করে পুলিশ যেভাবে আচরণ করছে সেটি অবশ্যই নিন্দনীয়। বাংলাদেশ পুলিশ যদি এ ঘটনাটির ন্যায় বিচারে সার্বিক সহায়তা করে তবে তাদের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে না বরং তাদের প্রতি জনগণের আস্থা বৃদ্ধি পাবে।
Total Reply(0)
Monzu Alom ১৫ আগস্ট, ২০২০, ৩:৩৯ এএম says : 0
দেশের মানুষের বেতর এখন ভয় ভীতি কাজ করে !! শত মানুষের সামনে মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে! কিন্তু মানুষ বাঁধা দিচ্ছে না !! কিন্তু তারা সংখ্যায় ও বেশি না ! সু শাসন নিশ্চিত করতে হবে ! আদালত আছে কিন্তু ন‍্যায় বিচার নাই! আইন গরীবের বেলায় !
Total Reply(0)
আসার আলো ১৫ আগস্ট, ২০২০, ৩:৪১ এএম says : 0
বাংলাদেশের মানুষ যদি নিরাপদে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারতো তাহলে লাখ লাখ অভিযোগ জমা হতো
Total Reply(0)
Md Najmul Hasan ১৫ আগস্ট, ২০২০, ৩:৪১ এএম says : 0
পুলিশের পাওয়ার কমাতে হবে। পোষাক গায়ে দেয়ার পর এদের মাথা ঠিক থাকে না।
Total Reply(0)
ফাহাদ ১৫ আগস্ট, ২০২০, ৭:০৯ এএম says : 0
আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাচ্ছি
Total Reply(0)
Emdad ১৫ আগস্ট, ২০২০, ৭:২৬ এএম says : 0
Prodep o leakot ke remand de nai keno
Total Reply(0)
Nannu chowhan ১৫ আগস্ট, ২০২০, ৮:৪৯ এএম says : 0
Pulishke dolio koron korar fole aj eai desher jonogon aj tar khesharot dichse manobik shadhinotar, eai shovbo jogote kon desher pulish eaivabe niriho manushke ottachar jel jolum dhorshon hotta tader ghor bari loot pat kore manushke bari theke ber kore deowa,tarporo tader bichar hoyna?
Total Reply(0)
Kamrul ১৫ আগস্ট, ২০২০, ১০:১৯ এএম says : 0
পশুদের (কুকুর) কিছু বৈশিষ্ট্য আছে,তার মধ্যে অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এই যে, ঝগড়ার শুরু বা যেকোনো পর্যায়ে এক কুকুর যদি লেজ নিচু করে দেয় তাহলে অন্য কুকুর তাকে আর আঘাত করে না। কারণ সে সারেন্ডার করেছে। ডাক্তারদের শপথ এ একটি শপথ এও যে, ডাক্তারের নিজের কোন শক্র ও যদি তার কাছে চিকিৎসা নিতে আসেন তবে তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ছাড়া অন্য কোনো চিকিৎসা তাকে দেয়া যাবেনা যেটা রূগীর শরীরের জন্য ক্ষতিকর। সব বাহিনীর সদস্যদের এটা শিক্ষা দেয়া হয় যে সারেন্ডারকারীকে হত্যা না করা। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানে ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন যখন আটকা পড়লেন তখন এবং পরবর্তীতে তার নিজ দেশে ফিরে যাওয়া পর্যন্ত সবকিছুই আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে----?
Total Reply(0)
Habib ১৫ আগস্ট, ২০২০, ১২:২০ পিএম says : 0
প্রদিপ এর কঠিন শাস্তি না হলে েএই বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্তরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠবে
Total Reply(0)
Mohammed Shah Alam Khan ১৫ আগস্ট, ২০২০, ১১:৪৭ পিএম says : 0
সিনহা হত্যা মামলা দিন দিন গোলকধাদার পথে ধাবিত হচ্ছে। একদিকে তদন্তের আইও পরিবর্তন আবার গণশুনানির আয়োজন বিষয়টা কেমন যেন লেজেগোবরের অবস্থা হয়েছে মনে হয়। দেখাযাক কোথাকার জল কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়। জ্ঞানীজনেরা বলছেন, সিনহাকে হত্যাকরা হয়েছে এতে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই। তারা ব্যাখা করে বলেন, একজন লোক যখন আত্মসমর্পণ করে পুলিশের সামনে পুলিশের নির্দেশে বিনা অস্ত্রে হাত উচুকরে মাথানিচু করে দাঁড়ায় তখন কোন আইনেই পুলিশ তাঁকে গুলী করতে পারেনা। কিন্তু এখানে পুলিশ সিনহাকে আত্মসমর্পণ অবস্থায় গুলি করেছে মানে তাঁকে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যা করা হয়েছে। এরপরও এই হত্যা মামলা নিয়ে কেন এত খেলার অবতারনা করা হচ্ছে এটা বুঝা যাচ্ছেনা বলে নিন্দুকেরা অভিমত পোষন করছেন। নিন্দুকেরা আরো বলছেন, দেশের উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন পদধারিরা প্রদীপ বাবুকে বাচানোর জন্যেই এতসব পায়তারা করছেন, তাদের প্রচেস্টা কোনভাবে প্রদীপবাবুকে রক্ষা করা যায় কিনা...... সাধারন জনগণ এদের কাছে অসহায় হয়ে পরেছে এটাই ফুটে উঠছে বলে নিন্দুকদের মন্তব্য। আল্লাহ্‌ই এখন পারেন সাধারন জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে দেশের পুলিশদেরকে জাতীর জনকের সময়ের মতোকরে নিয়ন্ত্রণে আনতে। আমিন
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন