শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বাবার লাশ আর সাদা হাতাকাটা গেঞ্জিই একমাত্র স্মৃতি

সাংবাদিকদের ডিএসসিসি মেয়র তাপস

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ আগস্ট, ২০২০, ১২:০০ এএম

১৫ আগস্ট ঘাতকের বুলেটের আঘাতে সপরিবারে শহীদ হন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেদিন অন্যসব শিশুদের মতো ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে সেই বাড়িতে বাবা শেখ ফজলুল হক মনি ও মা আরজু মনি’র কোলে ঘুমিয়ে ছিলেন দুই শিশু শেখ ফজলে নূর তাপস ও শেখ ফজলে শামস পরশ। কিন্তু ঘাতকের বুলেটের আঘাত থেকে এই দুই শিশু প্রাণে বেঁচে গেলেও শহীদ হন পিতা শেখ ফজলুল হক মনি ও মা আরজু মনি।

সেই বিভীষিকাময় কালো রাত্রির স্মৃতির বিষয়ে ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস সাংবাদিকদের বলেন, তখন আমার বয়স ছিল পৌনে চার বছর। আমি এবং আমার বড় ভাই রাতে বাবা-মায়ের সঙ্গে একই খাটে ঘুমিয়ে ছিলাম। সেই হত্যাকান্ডের কোনও স্মৃতি আমার নেই। এমনকি বাবা মায়ের সঙ্গেরও কোনও স্মৃতি ঠিক মনে পড়ে না। আমার আবছা একটি স্মৃতি মনে পড়ে। সেটা হলো- বাবার লাশ। তিনি সাদা হাতকাটা একটি গেঞ্জি পরা ছিলেন। গলায় একটি খতের দাগ ছিল এবং উনাদের দুজনকে যখন নিয়ে যাওয়া হয় নিচে রক্ত জমাট ছিল। এর বেশি কিছু স্মরণ করতে পারি না। অন্যান্য দিনের মতো সেদিনও আমরা ঘুমিয়ে ছিলাম। যখন গুলির শব্দে আমাদের ঘুম ভাঙে আমরা চিৎকার করি। বাবা মাকে ডাকি। তাদের খুঁজি। আমি এবং আমার বড় ভাই কোনও দিন বাবা মাকে পাইনি। সেই দুর্বিষহ সময়টার কথা যখনই চিন্তা করি তখন বেদনা বাড়ে। বিশেষ করে আগস্ট মাসটা যখন আসে মনটা ভারী হয়ে উঠে। ১৫ আগস্ট আসলে আমাদের কষ্টের দিন কাটে।

তিনি বলেন, জীবন বাঁচানোর জন্য আমাদেরকে অন্যান্য জায়গায় আশ্রয় নিতে হয়েছে। পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে। বাসা ছেড়ে দিতে হয়েছে। সেই দিনকার বিষয়টা যদি বলি তারা হামলা করে হত্যা করে চলে যায় ঠিকই কিন্তু পরক্ষণে তারা আবার ফিরে আসে এবং আবার আক্রমণ করে আমাদেরকে জীবন বাঁচানোর জন্য পালিয়ে যেতে হয়। আমাদের চাচাদেরও পালিয়ে যেতে হয়। বাসার পাশে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের বাসা ছিল তারা আমাদেরকে আশ্রয় দেন। যার কারণে আমরা প্রাণে বেঁচে যাই।

ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, অনেক কষ্ট, যন্ত্রণা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে আমাদের সময় কেটেছে। দাদি আমাদের দুই এতিম ভাইকে লালন-পালন করেছেন। আমাদের সান্ত¡না দিয়ে বলা হতো, বাবা-মা বিদেশে কাজে গেছেন। কয়েকদিন পর তারা চলে আসবেন। এভাবেই দিন যাচ্ছিল। একটা সময় বুঝলাম, বাবা-মা আর কোনও দিন আসবেন না।

তিনি বলেন, আমি মেয়র নির্বাচিত হওয়ায় ঢাকাবাসীর সেবা করার যে সুযোগ হয়েছে সেটা যদি করতে পারি সেটাই হবে বড় প্রাপ্তি। তাদের আত্মা তখনই শান্তি পাবে আমরা যদি জনগণের জন্য কিছু করতে পারি।
ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, বাবা মায়ের কথা সব সময়ই মনে পড়ে। বিশেষ করে একটি সন্তানের কোনও অর্জন প্রাপ্তির সময় কিন্তু তাদের সান্নিধ্য সন্তান চায়। আমরা কিন্তু সেটা পাইনি। সব সময়ই একটা শূন্যতা থাকতো।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Mohammed Shah Alam Khan ১৫ আগস্ট, ২০২০, ১১:১৪ পিএম says : 0
ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস তাঁর স্মৃতি চারনে যেভাবে বলেছেন একজন পৌনে চার বছরের ছেলের পক্ষে যতটুকু স্মৃতি সেই কালো রাতের থাকতে পারে ততটুকুই তিনি বলেছেন। তাঁর এই কয়টা কথাই আমার এই শেষ বয়সের মনে এমন দাগ কেটেছে সেটা ভাষায় রূপায়িত করার ক্ষমতা আমার নেই। আমি আল্লাহ্‌র দরবারে আমার সরাসরি নেতা যুব লীগের পিতা মণিভাইয়ের ছেলে তাপসের মঙ্গল কামনা করছি। আল্লাহ্‌ তাপসকে জনগণের খেদমত করার সুযোগ দিন সাথে সাথে আমি তাঁর (তাপসের) দীর্ঘায়ু কামনা করছি। আমিন
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন