শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ঘাতকচক্র বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও তাঁর স্বপ্ন ও আদর্শের মৃত্যু ঘটাতে পারেনি: প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ আগস্ট, ২০২০, ৯:৩১ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এবং উন্নয়ন ও গণতন্ত্র বিরোধী চক্রের যেকোনো অপতৎপরতা ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করার জন্য সবাইকে প্রস্তুত থাকার আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ঘাতকচক্র বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও তাঁর স্বপ্ন ও আদর্শের মৃত্যু ঘটাতে পারেনি।

শেখ হাসিনা জাতির পিতা হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করার আহাবান জানিয়ে বলেন, “আসুন, আমরা জাতির পিতা হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করি। তাঁর ত্যাগ এবং তিতিক্ষার দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনাদর্শ ধারণ করে সবাই মিলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলি। জাতীয় শোক দিবসে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালন উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন ১৫ আগস্টের সকল শহিদকে এবং মহান আল্লাহ্তায়ালার দরবারে তাদের রূহের মাগফিরাত কামনা করেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এই দিনে ঘাতকরা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে।

জাতির পিতার সহধর্মিনী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব, তিনপুত্র ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল, দশবছরের শিশুপুত্র শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর সহোদর শেখ আবু নাসের, কৃষকনেতা আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মণি ও তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মণি, বেবী সেরনিয়াবাত, সুকান্ত বাবু, আরিফ, আব্দুল নঈম খান রিন্টুসহ পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে ঘৃণ্য ঘাতকরা এ দিনে হত্যা করে।

জাতির পিতার সামরিক সচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিলও নিহত হন। ঘাতকদের কামানের গোলার আঘাতে মোহাম্মদপুরে একটি পরিবারের বেশ কয়েকজন এদিন হতাহত হন।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাঙালি জাতি পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে ছিনিয়ে এনেছিল আমাদের মহান স্বাধীনতা। সদ্য স্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে বঙ্গবন্ধু যখন সমগ্র জাতিকে নিয়ে সোনার বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রামে নিয়োজিত, তখনই স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধীচক্র তাকে হত্যা করে।

এই হত্যার মধ্য দিয়ে তারা বাঙালির ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করার অপপ্রয়াস চালায় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঘাতকদের উদ্দেশ্যই ছিল অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রাষ্ট্র কাঠামোকে ভেঙে আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে ভূলুণ্ঠিত করা। এই জঘন্য হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত স্বাধীনতা বিরোধী চক্র ‘৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করে। তারা ইনডেমনিটি অর্ডিনেন্স জারি করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথকে বন্ধ করে দেয়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে মার্শাল ল’ জারির মাধ্যমে গণতন্ত্রকে হত্যা করে। সংবিধানকে ক্ষত-বিক্ষত করে। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করে। বৈদেশিক দূতাবাসে চাকুরি দেয়। স্বাধীনতা বিরোধী-যুদ্ধাপরাধীদের নাগরিকত্ব দেয়। রাষ্ট্রক্ষমতার অংশীদার করে। রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে পুনর্বাসিত করে। পরবর্তী বিএনপি-জামাত সরকারও একই পথ অনুসরণ করে। ’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে দীর্ঘ ২১ বছর পর সরকার গঠন করে। অতীতের জঞ্জাল সরিয়ে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ এই ৫ বছরে দেশে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের এক নবদিগন্তের সূচনা হয়’। তিনি বলেন “আমরা জাতির পিতার হত্যার বিচার শুরু করি। কিন্তু বিএনপি-জামাত জোটসরকার ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে এই হত্যার বিচারকাজ বন্ধ করে দেয়।”

শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের জনগণ ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে পুনরায় বিপুল ভোটে বিজয়ী করে। রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে পূর্ববর্তী সরকারগুলোর রেখে যাওয়া অচলাবস্থা এবং বিশ্বমন্দা কাটিয়ে আমরা দেশকে দৃঢ় অর্থনৈতিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করার কাজ শুরু করি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত সাড়ে ১১ বছরে আমরা দেশের প্রতিটি সেক্টরে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জন করেছি। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ‘রোল মডেল’। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। বর্তমান প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের মহামারীর মধ্যেও আমাদের সরকার ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার লক্ষ্য নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা জাতির পিতার হত্যার বিচারের রায় কার্যকর করেছি। জাতীয় চার নেতার হত্যার বিচার সম্পন্ন হয়েছে। একাত্তরের মানবতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করা হচ্ছে। জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে আমাদের সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করছে। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতাদখলের সুযোগ বন্ধ হয়েছে।

সূত্র: বাসস

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
Saifur Rahman Shakil ১৫ আগস্ট, ২০২০, ৩:৩৮ পিএম says : 0
‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর ৪৫তম শাহাদত বার্ষিকীতে বিনম্র শ্রদ্ধা’
Total Reply(0)
Evaan Akash ১৫ আগস্ট, ২০২০, ৩:৪৩ পিএম says : 0
ছাপ্পান্ন ছাজার বর্গমাইল চওড়া যার বুক, আঠারোটা গুলি দিয়ে কি মেরে ফেলা যায় তাঁকে ?? মুজিব রবে চেতনায়, মুজিব রবে বাঙ্গালির অস্তিত্বে।
Total Reply(0)
Kibria Hasan Pathan ১৫ আগস্ট, ২০২০, ৩:৪৪ পিএম says : 0
বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি
Total Reply(0)
আক্তার হোসেন সেলিম ১৫ আগস্ট, ২০২০, ৩:৪৪ পিএম says : 0
ঘাতকের ঘৃনিত বুলেটে-পিতা তোমার রক্তাক্ত পাঞ্জাবীটা--আজও আমায় অশ্রুসিক্ত করে,, বিনম্র শ্রদ্ধা রইলো,,
Total Reply(0)
কৌশিক সরকার ১৫ আগস্ট, ২০২০, ৩:৪৬ পিএম says : 0
কোটি বাঙালির হৃদয়ে ভালো থাকবেন, আলো হয়ে থাকবেন আরো হাজার বছর। জয় বাংলা
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন