বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ফ্লাইওভার চালু হলেও কমেনি যানজট

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে

কামাল আতাতুর্ক মিসেল | প্রকাশের সময় : ১৭ আগস্ট, ২০২০, ১২:০০ এএম

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়েতে (বাইপাস) যানজট নিরসনের জন্য ফ্লাইওভার চালু হলেও কমেনি যানজট। ওই সড়কে যানজট এখন নিত্যদিনের সঙ্গী। বিগত দিনে করোনার কারণে সড়কে যানবাহনের সংখ্যা কম থাকলেও ঈদুল আযহার ছুটির পর সড়কে যানবাহনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এখন যানজটের ভয়াবহতা বাড়তে শুরু করেছে। যানজট থাকার কারণে যাত্রীদের যেন ভোগান্তির শেষ নেই। যানজটে আটকা পড়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। যেখানে যেতে সময় লাগার কথা ২০ মিনিট, সেখানে লাগছে দেড় থেকে ২ ঘণ্টা।

এ দীর্ঘ যানজটের প্রধান কারণ হিসেবে জানা গেছে, যেখানে সেখানে যাত্রী ওঠানামা, চালকরা নিয়ম না মেনে গাড়ি চালানো, সড়কে অবৈধভাবে গাড়ি পার্কিং ও লোড-আনলোড করা, হাইওয়ে পুলিশের দায়িত্বে অবহেলা। বিশেষ করে মঙ্গলবার গাউছিয়া কাপড়ের বাজার ও বৃহস্পতিবার গোলাকান্দাইল হাট বসার কারণে এ দুই দিন যানজটের মাত্রা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। নিত্যদিনের এ যানজটের কারণে ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী থেকে শুরু করে সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে।

সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, রাজধানী থেকে দেশের সিলেট বিভাগ ও ঢাকা বিভাগে আসা যাওয়ার একমাত্র সড়কপথ হলো ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক। অপরদিকে দেশের উত্তরাঞ্চল থেকে দক্ষিণাঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের পণ্য আনা-নেয়া সড়কপথে আমদানি ও রফতানি করতে একমাত্র সড়কপথ এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস)। এ সড়কে বিভিন্ন ধরনের পণ্যবাহী যানবাহনের চাপ থাকে সবসময়। কিন্তু ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ও এশিয়ান হাইওয়েতে (বাইপাস) যানজট নিরসনে ভুলতা ও গোলাকান্দাইল এলাকায় তিনতলা বিশিষ্ট ফ্লাইওভার নির্মাণাধীন।

গত বছরের ১৬ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ওই ফ্লাইওভারের এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস অংশ) উদ্বোধনের পর চালু করলেও ভুলতা এলাকায় গড়ে ওঠা মার্কেটগুলোর সামনে মহাসড়কের ফুটপাথ দখল করে দোকানপাট নির্মাণ, খানা-খন্দক ছাড়াও এশিয়ান হাইওয়ে বাইপাস সড়কের বিভিন্ন স্থানে উচু নিচু, কাঞ্চন সেতুর টোলপ্লাজায় টোল আদায়ে ধীরগতির কারণে যানজট লেগেই থাকছে।

এছাড়াও রূপগঞ্জের গাউসিয়া মার্কেটকে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ পাইকারি কাপড়ের মার্কেট হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ মার্কেটে পাইকারি ও খুচরাসহ প্রায় ৩ হাজার দোকান রয়েছে। মালামাল আনা নেয়ার জন্য এখানে প্রতিদিন শত শত গাড়ি এখানে পার্কিং রাখা হয়। গাউসিয়া মার্কেটের কোন নিজস্ব পার্কিং ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়েই চালকদেরকে গাড়ি সড়কে রাখতে হচ্ছে। সড়কের উপরে গাড়ি রাখার কারণে সড়কের অর্ধেকটা দখল হয়ে যায় পার্কিং প্লেস। অন্যান্য গাড়ি তখন চলাচল করতে পারে না।

এতে করে এ সড়কে চলাচলরত মালবাহী ও গণপরিবহণের যাত্রী পরিবহনে ব্যবহৃত যানবাহনগুলো আটকে গিয়ে চরম বিপাকে পড়ছে। শুধু তাই নয়, এ যানজটের প্রভাব পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দা ও জনসাধারণের ওপর। একই সড়কের পাশেই কাঞ্চন বাজার। এছাড়া দেখা গেছে, গাউসিয়া মার্কেটের সামনে কয়েক হাজার ফুটপাথে দোকান থাকার কারণে সাধারণ মানুষকে রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে অনেক সময় যাত্রীদেরকে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে দীর্ঘ যানজটের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
এই সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী বাসচালক কামরুজ্জামান দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, গোলাকান্দাইল চৌরাস্তা এলাকা দিয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে বাইপাস সড়কটি ক্রস করেছে। বাইপাস সড়কের যানবাহনগুলো ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে প্রবেশ করলে ওই চৌরাস্তায় চাপ পড়ে। এতে করে এখনও নিত্যদিনের যানজটে পড়তে হচ্ছে যাত্রী সাধারণের। এছাড়া পুরো ফ্লাইওভার এরিয়ায় ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির সামনের এক পাশে সড়ক পারাপারের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে। আর এ পারাপারের স্থান দিয়ে শত শত পথচারী পারাপার হওয়ায় গাড়ি চালাতে হয় ধীর গতিতে। এ কারণেও যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

জাহিদ হাসান নামের এক যাত্রী দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক মোটামুটি প্রশস্ত হলেও এশিয়ান হাইওয়ে সড়কটির প্রস্থ অনেকটা কম। যার ফলে এশিয়ান হাইওয়ে সড়কে কোন প্রকার যানবাহন বিকল হয়ে পড়লেই তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। ভুলতায় বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আব্দুল জলিল ইনকিলাবের কাছে অভিযোগ করে বলেন, প্রতিদিনই এই সড়কে দীর্ঘ যানজটের ফলে প্রায় তাদের অফিসে যেতে অতিরিক্ত সময় লাগছে। সময়মতো অফিসে না পৌঁছাতে পারলে তার উপরস্থ কর্মকর্তার কাছে জবাবদিহি করতে হয়। এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কের অংশের ফ্লাইওভারটি চালু হলেও এলোপাথাড়ি গাড়ি চলাচলের কারণে এখনও যানজটে পড়ে ভোগান্তির শিকার হতে হয় তাদের।

এ বিষয়ে পূর্বাঞ্চলের হাইওয়ে পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, করোনার মধ্যেও ঈদুল আযহার পর হঠাৎ করেই ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে সড়কে যানবাহনের অনেকটা চাপ বেড়ে গেছে। তাই দূরপাল্লার যাত্রী সাধারণ ও পণ্যবাহী বিভিন্ন যানবাহন যাতে যানজটে আটকে পড়ে ভোগান্তিতে না পড়েন সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখা হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন