শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

জামায়াত-গণবাহিনীর সাথে ঐক্য নয় : কাদের সিদ্দিকী

প্রকাশের সময় : ৬ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করায় জামায়াতে ইসলামী এবং ৭৫ এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরিবেশ তৈরির জন্য গণবাহিনীর সাথে কোন ধরনের রাজনৈতিক কর্মকা- করবেন কৃষক শ্রমিক জনতালীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম। তিনি বলেছেন, আমি বঙ্গবন্ধুর জন্য রাজনীতি করি যতদিন বাঁচবো তার জন্যই রাজনীতি করে যাবো। চলমান জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঐক্য হওয়া দরকার। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ঐক্য হয়েছে আসলে বাস্তবিক কোন ঐক্য হয়নি।
গতকাল শুক্রবার মতিঝিলস্থ দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার দেশের বিরাজমান পরিস্থিতিতে বিএনপি চেয়ারপার্সন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন কাদের সিদ্দিকী। ওই বৈঠক নিয়েই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
জাতীয় ঐক্য গঠনের প্রচেষ্টা দরকার উল্লেখ করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐক্যের ডাক দিয়েছিলেন, কিন্তু ঐক্য হয়নি। জাতীয় ঐক্যে যেমন জামায়াত থাকবে না তেমনি বঙ্গবন্ধু সরকারকে উচ্ছেদ করতে চাওয়া গণবাহিনীও থাকবে না।
যারা বঙ্গবন্ধুর পিঠের চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বানাতে চেয়েছিল, সেই গণবাহিনীর সঙ্গে থাকতে পারিনি বলে শেখ হাসিনার সঙ্গে থাকতে পারিনি। সব ঝেড়ে ফেলে দিয়ে ৭১ এ বঙ্গবন্ধুর মত জাতিকে এক করার চেষ্টা করতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সমালোচনা করতে চাই না, কিন্তু তারা ভালো কাজ যে করছে সেটাও বলব না। তাদের হাত থেকে যেভাবে জঙ্গিরা মারা যাচ্ছে তাহলে তারা শেখ হাসিনার নিরাপত্তা দিবেন কীভাবে? বঙ্গবন্ধুকে হারিয়েছি, তার কন্যা শেখ হাসিনাকে হারাতে চাই না।
আমি খালেদাকে বলেছি, আপনি জামায়াতকে ছেড়ে প্রধানমন্ত্রীকে বার বার শতবার ঐক্যের কথা বলা দরকার। তাকে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানান। যদি তিনি ব্যর্থ হন তাহলে ঐক্যের দায়িত্ব আপনার (খালেদা জিয়া) কাঁধেই বর্তাবে। আপনি যদি ঐক্য করতে পারেন তাহলে আপনি নন্দিত হবেন, নয়তো নিন্দিত হবেন। আপনিও যদি ঐক্য করতে ব্যর্থ হন, তাহলে সেই দায়িত্ব অন্য কেউ নিবে।
তিনি বলেন, খালেদার আহ্বানে সেখানে আলোচনা করতে গিয়েছিলাম, কোনো ঐক্য করতে যাইনি। ওনি জাতীয় ঐক্যের কথা বলেছেন, আমি বলব এটা ভালো উদ্যোগ। ঐক্যের জন্য আমরা তাকে কিছু প্রস্তাব দিয়েছি।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, ৭১ এ বঙ্গবন্ধু যেমন এ দেশের জন্য ছিলেন অবিসংবাদিত নেতা, বর্তমানে শেখ হাসিনাও প্রধান জাতীয় নেতা। তবে একেবারে খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে নয়। শেখ হাসিনাকে বাদ দিয়ে যেমন বর্তমানে বাংলাদেশ অবাস্তব, তেমনি খালেদাকে বাদ দিয়েও অসম্ভব। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের এই ক্রান্তিকাল থেকে মুক্তির চেষ্টা করা উচিৎ। আমি চাই মানুষের ঐক্য। তাই মানুষের প্রতিনিধিত্ব করা রাজনৈতিক দলগুলোকে বাদ দিয়ে ঐক্য হয় না।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে কাল বলেছি, বঙ্গবন্ধু আমার ভালোবাসা, আমার অস্তিত্ব। তাকে ছাড়া আমি রাজনীতি করব না। জামায়াতকে নিয়ে রাজনীতি করব না। খালেদাকে নেতৃত্ব দিতে হলে তাকে স্পষ্ট করে বলতে হবে জামায়াত নেই। বঙ্গবন্ধুকে অবহেলা করলে, গালাগালি করলে আমরা থাকব না। ১৫ আগস্ট জাতির জনকের মৃত্যুর দিনে প্রকৃত জন্মদিন হলেও পালন করা চলবে না।
খালেদা জিয়াকে যেসব প্রস্তাব দেয়া হয়েছে সেই প্রসঙ্গে খালেদার বক্তব্য কী? সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা প্রস্তাব দিয়েছি, নিশ্চই সব প্রস্তাব সবাই মানবে না, আবার কিছু প্রস্তাব না মানলে কারো সাথেই বনিবনা হবে না।
বৃহস্পতিবার খালেদার সাথে বৈঠক নিয়ে সরকার দলের অনেক নেতাই নিষেধ করেছেন জানিয়ে, তিনি বলেন, কথা দিয়েছি তাই গিয়েছিলাম। তাকে বলেছি, আপনি ঘর থেকে বের হন। সবাই আপনার কাছে আসবে আর আপনি ঘর থেকে বের হবেন না তা হবে না।
তিনি বলেন, সরকার বলছে, সাম্প্রতিক সকল জঙ্গি হামলার তথ্য তাদের কাছে ছিল। তার পরেও যেহেতু সেসব প্রতিরোধ করতে পারেনি সেহেতু সরকার ব্যর্থ হয়েছে।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন দেশে শান্তি আছে কিন্তু দেশে শান্তি নাই। দেশের স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থেকেই বোঝা যায় দেশে শান্তি নাই।
আবাসিক এলাকা থেকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদ অভিযানের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, এক হলি আর্টিজানে হামলার পর আপনি ওই এলাকার সব প্রতিষ্ঠান ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিচ্ছেন সেটা ঠিক না। আবাসিক এলাকায় কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠা যেমন ঠিক না, আবার হওয়ার পর সব একসাথে গুড়িয়ে দেয়াও ঠিক না। আস্তে আস্তে ব্যবস্থা নিন। এভাবে বাঙালিকে ভয় পাইয়ে দেয়া ঠিক হবে না।
সংবাদ সম্মেলন কাদের সিদ্দিকীর সহধর্মনী ও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য নাসরিন সিদ্দিকী, দলের মহাসচিব হাবিবুর রহমান তালুকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, যুব আন্দোলনের আহ্বায়ন হাবিব উন নবী সোহেল, ছাত্র নেতা রিফাত আহমেদ দ্বীপ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন