বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ভাসমান হাটে পেয়ারা বিক্রি : দরপতনে ক্ষতিগ্রস্ত উৎপাদকরা

বরিশাল ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ২৩ আগস্ট, ২০২০, ১২:০২ এএম

প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত ঝালকাঠির ভিমরুলীর পেয়ারার ভাসমানহাট জমে উঠলেও করোনা সঙ্কটে দরপতনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন উৎপাদকরা। তবে বাজার মূল্য কিছুটা মন্দা হলেও ক্রেতা-বিক্রেতার উপস্থিতিতে আশায় বুক বাঁধছেন পেয়ারার উৎপাদকরা। এবার ভিমরুলীতে নেই পর্যটকদের আনাগোনা। বিগত বছর দশেক ধরেই দেশ থেকে বিপুল সংখ্যক পর্যটক ছুটে আসতেন ঝালকাঠির ভিমরুলীর ভাসমান পেয়ারারহাট দেখতে। এমনকি মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও ভারতীয় হাই কমিশনারও গতবছর এ ভাসমান পেয়ারারহাট ঘুরে দেখে উচ্ছাস ধরে রাখতে পারেন নি।

ঝালকাঠি ও পিরোজপুরে সীমান্তবর্তী আটঘর-কুড়িআনার প্রায় ১ হাজার হেক্টরের বিশাল বাগান থেকে ভিমরুলীর ভাসমানহাটে পেয়ারার বিপনন হয়ে থাকে পুরো মৌসুমজুড়ে। নৌকায় করে চাষিরা এ হাটে পেয়ারা নিয়ে এসে নৌকাতে রেখেই তা বিক্রি করে থাকেন। আর সারাদেশ থেকে আসা পাইকাররা এখান থেকে পেয়ারা কিনে সড়ক ও নৌপথে নিজ নিজ মোকামে নিয়ে বিক্রি করে। স্বাদ ও গন্ধে আটঘর-কুড়িআনার পেয়ারার সুখ্যাতি দেশজুড়ে। এমনকি এ পেয়ারা কোলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরার আগরতলাতেও যাচ্ছে। কিন্তু এ বছর পেয়ারার দাম গতবছরে প্রায় অর্ধেক।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আকার ও মানভেদে এবার ভিমরুলীতে প্রতিমন পেয়ারা বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা থেকে সাড়ে ৩শ’ টাকার মধ্যে। যদিও কয়েক হাত ঘুরে তা খুচরা পর্যায়ে ৩০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হয়। কিন্তু প্রকৃত উৎপাদদের ভাগ্যে ১০ টাকাও জুটে না। করোনাভাইরাসের সংক্রমণে কেউই এবার ঝুঁকি নিয়ে বাগান কিনতে চাচ্ছে না। ক্রেতা বিক্রেতা সবার মধ্যেই এক ধরণের আতঙ্ক কাজ করছে।

তারপরও প্রতিদিন পেয়ারা কেনাবেচায় ভীমরুলী, আটঘর-কুড়িয়ানার ভাসমান বাজারে পেয়ারা চাষি ও পাইকারদের ভিড় থাকছেই। স্থানীয় ও বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিশেষ করে ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, চট্টগ্রাম, খুলনা, নোয়াখালী ও ফরিদপুর থেকে আসা বেপারীরা নৌকা থেকেই পেয়ারা কিনে ট্রলার অথবা ট্রাকে করে তাদের গন্তব্যে নিয়ে আবার খুচরা বিক্রাদের কাছে বিক্রি করছে। সকালে ভরপুর এ বাজার দুপুরের মধ্যেই খালি হয়ে যায়। আটঘর-কুড়িআনা এলাকায় মুকুন্দপুরী, লতা ও পুর্নমÐল জাতের পেয়ারা খেতে মিষ্টি ও অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সম্পন্ন। আটঘর, শতদশকাঠি, কাফুরকাঠি, ভীমরুলি, জিন্দাকাঠি, ডুমরিয়া, খাজুরিয়া, বাউকাঠি, বেতরা, হিমানন্দকাঠি, পোষন্ডা, রমজানকাঠি, সাওরাকাঠি, কাচাবালিয়া গ্রামে প্রতিবছরই দেড় থেকে দু’হাজার টন পেয়ারা উৎপাদন হয়ে থাকে।

শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে ঝালকাঠির ব্রান্ডিং পণ্য পেয়ারার ভরা মৌসুম। ঝালকাঠির ১২টি গ্রামের প্রায় এক হাজার হেক্টর এলাকায় এ অঞ্চলের প্রধান অর্থকারী ফসল পেয়ারা চাষ শত বছরের ঐতিহ্য। প্রতিদিন পেয়ারা চাষিরা খুব ভোরে বাগান থেকে ছোট-ছোট নৌকায় করে ৩-১০ মন করে পেয়ারা এহাটে বিক্রি করছে।
দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশ, পেয়ারা, আমড়াসহ আরো কয়েকটি কৃষিপণ্য বিদেশে রফতনির লক্ষ্যে এ অঞ্চলে একটি রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল গড়ে তোলার দাবি দীর্ঘদিনের। এক সময়ে ইপিজেডের চেয়ারম্যানসহ উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ এলাকাটি ঘুরে ইতিবাচক মাতামত দিলেও পরবর্তীতে তা আর আলোর মুখ দেখেনি।
এ বিষয়ে ঝালকাঠির রমজানকাঠি কারিগরি ও কৃষি কলেজের বিভাগীয় প্রধান কৃষিবিদ ড. চিত্ত রঞ্জন সরকার বলেন, ‘পেয়ারা চাষ খুব লাভজনক হয়ে ওঠেছে। এ বছর বৃষ্টির কারণে পেয়ারা বাজারে আসতে ১৫ দিন বিলম্ব হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন