বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সমৃদ্ধ গ্রামীণ অর্থনীতি

রফিকুল ইসলাম সেলিম | প্রকাশের সময় : ২৬ আগস্ট, ২০২০, ১২:০২ এএম

ধান, শাক সবজিসহ ফসলের ভালো ফলন হয়েছে। বাড়ছে মৎস্য ও পশুপালন। তাতে সমৃদ্ধ হচ্ছে চট্টগ্রামের গ্রামীণ অর্থনীতি। করোনায় দেশে খাদ্য ঘাটতি বা সঙ্কটের আশঙ্কায় অনেকে চাষাবাদে মনোনিবেশ করেছেন। বেড়েছে মৎস্য, গবাদিপশু, দুগ্ধ ও মুরগির খামারের সংখ্যা।
সংক্রমণ ঠেকাতে টানা সরকারি ছুটিতে অনেকে গ্রামে চলে যান। তারা গ্রামে ফিরে কৃষিকাজ করেছেন। ফলে কৃষি উৎপাদন বেড়েছে। করোনার সময় বিশেষ করে পবিত্র রমজানে শাক-সবজি আর মাছ গোশতের সরবাহ স্বাভাবিক ছিলো। পোল্ট্রি খাতও ভালভাবে টিকে আছে। সংক্রমণের ঝুঁকিতে বাড়ছে পুষ্টির জোগান। কোরবানি ঈদে চট্টগ্রামে প্রায় সাড়ে সাত লাখ গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে, যার প্রায় পুরোটাই জোগান দিয়েছেন স্থানীয় কৃষক ও খামারিরা।

চট্টগ্রামে যেখানে পুকুর জলাশয় সেখানে মাছের চাষ। এখাতে নতুন নতুন বিনিয়োগ হচ্ছে। পতিতজমি আবাদের হার বাড়ছে। বন্যামুক্ত থাকায় কৃষিতে স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে। আউশ ঘরে উঠছে, আমনের আবাদ চলছে পুরোদমে। ব্যস্ত গ্রামের কৃষকরা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মো. মঞ্জুরুল হুদা বলেন, করোনায় এই অঞ্চলের কৃষিতে তেমন প্রভাব পড়েনি। বরং কৃষি শ্রমিকের সংখ্যা বেড়েছে। লকডাউনে অনেকে নিজেদের পতিত জমিতে চাষাবাদ করেছেন। ওই সময় কৃষিপণ্য পরিবহন ও বাজারজাতকরণে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার ফলে কৃষক যেমন সবজির দাম পেয়েছেন তেমনি ভোক্তা পর্যায়ে সরবরাহ স্বাভাবিক ছিলো। এতে খাদ্য নিরাপত্তা বাড়ছে।

কৃষি বিভাগের প্রণোদনাসহ খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কায় চাষাবাদ বাড়ছে। এবার এই অঞ্চলের ৫ জেলায় গত বারের চেয়ে বেশি এক লাখ ২৩ হাজার ৭৭৮ হেক্টর জমিতে আউশ আবাদ হয়েছে। গতবার আবাদ হয় ৯৮ হাজার হেক্টরে। শুরুতে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় আবাদ বিঘিœত না হলে আরো বেশি জমিতে আউশ চাষ হতো বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, এবার রের্কড ৫ লাখ ৬৪ হাজার ৪৪৩ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ চলছে। ইতোমধ্যে ৬৫ শতাংশ জমিতে আবাদ শেষ হয়েছে। শস্যভান্ডার হিসাবে পরিচিত চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় শাক-সবজির ব্যাপক ফলন হয়েছে।

জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক বলেন, করোনায় এই অঞ্চলে পশু পালনের হার বিশেষ করে নতুন নতুন খামার গড়ে উঠেছে। চাষি এবং গৃহস্থরা গবাদিপশু পালনে মনোযোগী হয়েছেন। চার হাজার ৭৭৮টি গরুর খামারের পাশাপাশি তিন হাজার ৫০০ দুগ্ধ খামারে উৎপাদিত গোশত ও দুধ এই অঞ্চলের মানুষের চাহিদা মেটাচ্ছে। করোনার মধ্যেও অনেক খামার গড়ে উঠেছে। গেল কোরবানিতে প্রায় সাড়ে সাত লাখ গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে। এর বিরাট অংশের যোগান এসেছে চট্টগ্রাম থেকে। এতে গ্রামীণ অর্থনীতিতে অর্থের প্রবাহ বেড়েছে। সরকারিভাবে খামারিদের প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা লাভলি বলেন, করোনায় মৎস্য খাত আরো সমৃদ্ধ হয়েছে। লকডাউনের সময় মাছ বিক্রি কমে যাওয়ায় অনেকে হতাশা ব্যক্ত করেছেন। তবে এখন সবকিছু স্বাভাবিক হওয়ায় সে হতাশা কেটে গেছে। চট্টগ্রামে নতুন নতুন মৎস্য খামার গড়ে উঠেছে। খামারিদের উৎসাহিত করতে নানা প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। তাতে দিনে দিনে মৎস্য খাত আরো সমৃদ্ধ হচ্ছে। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে গ্রামের অর্থনীতিতে।
খাদ্য নিরপত্তা নিশ্চিতে বরারই ভূমিকা রাখছেন প্রান্তিক চাষিরা। ফসলের দাম পেলে তারাও বিপ্লব ঘটাতে পারেন বলে মনে করেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন