বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

প্রদীপ লিয়াকত নন্দ আবারও রিমান্ডে

বিচার দাবিতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের মানববন্ধন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন পিছিয়ে যাচ্ছে

কক্সবাজার ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৯ আগস্ট, ২০২০, ১২:০১ এএম

মেজর (অব.) সিনহা হত্যা মামলা প্রত্যক্ষদর্শী এপিবিএন চেকপোস্টের তিন সদস্যের দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি মতে সেদিন ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলি ও এস আই নন্দদুলাল এপিবিএন চেকপোস্টের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিলেন। কেন তারা সেদিন এপিবিএন চেকপোস্টের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিলেন এবং কার নির্দেশে নিয়েছিলেন তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাব বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে মেজর (অব.) সিনহা মোঃ রাশেদ খান হত্যা মামলায় টেকনাফের বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলী, এসআই নন্দদুলাল রক্ষিতের তৃতীয় দফায় তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। দ্বিতীয় দফায় চার দিনের রিমান্ড শেষে শুক্রবার (২৮ আগস্ট) বেলা সোয়া ৩টার দিকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট টেকনাফ-৩ আদালতে আসামিদের হাজির করা হয় তাদের। এসময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র‌্যাব-১৫ এর সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) খায়রুল ইসলাম অধিকতর তথ্যের স্বার্থে চার দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তামান্না ফারাহ ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আসামীদের।

অপরদিকে, আসামিদের পুনঃরিমান্ডের বিরোধীতা এবং জামিন আবেদনে অংশ গ্রহণ করেন চট্টগ্রাম থেকে আসা তিন আইনজীবী। বিচারক তাদের আবেদন নাকচ করে দেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র‌্যাব-১৫ এর সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) খায়রুল ইসলামের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ২৪ আগস্ট ওসি প্রদীপসহ সাত পুলিশের দ্বিতীয় দফায় চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করছিলেন একই আদালত। তার আগে সাত দিনের রিমান্ড শেষ হয়।
গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মারিশবনিয়া পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর এপিবিএন এর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মোঃ রাশেদ খান। ৫ আগস্ট কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা করেন সিনহা মোঃ রাশেদ খানের বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। এতে প্রদীপসহ পুলিশের নয়জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় এ পর্যন্ত পুলিশের ৭ জন, এপিবিএনের ৩ জন ও স্থানীয় ৩ জন বাসিন্দা (পুলিশের মামলার সাক্ষী) গ্রেফতার হয়েছেন।

এদিকে ২৯ আগস্ট জেলা কারাগারে ওসি প্রদীপের সঙ্গে কথা বলে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি। ৩১ আগস্টের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময়সীমা বেঁধে দেয়া আছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। তাই ২৯ আগস্ট জেলা কারাগারে ওসি প্রদীপের সঙ্গে কথা বলে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন কমিটি। তবে আদালত গতকাল ওসি প্রদীপসহ তিন আসামীর ৩য় দফায় রিমান্ড মন্জুর করায় তদন্ত কমিটির সাথে ওসি প্রদীপের সাক্ষাত আজ ২৯ আগষ্ট আর হচ্ছে না। এতে করে ৩১ আগষ্ট তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করাও অনিশ্চিত হয়ে গেল।

বিচারের দাবিতে মানববন্ধনঃ মেজর (অব.) সিনহা হত্যার প্রতিবাদে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মানববন্ধন করে কক্সবাজারে। মানববন্ধনে তারা বলেছেন, গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ শামলাপুর পুলিশ চেকপোস্টে সেনাবাহিনীর (অব.) মেজর ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে গুলি করে নৃশংসভাবে খুন করে পুলিশ। অপরদিকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত মানববন্ধনে মুক্তিযোদ্ধা ও গণমাধ্যম কর্মীদের উপর ন্যক্কারজনক হামলা চালায় বাঁশখালীর এমপি মোস্তাফিজুর রহমানের লেলিয়ে দেয়া মাস্তান বাহিনী।

কক্সবাজারের মুক্তিযোদ্ধা পরিবার এই দু’টি ঘটনায় খুবই উদ্বিগ্ন ও মর্মাহত। গত বৃহস্পতিবার কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্ত¡রে কক্সবাজার মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কল্যাণ সোসাইটির ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা এই দু’টি ন্যক্কারজনক ঘটনার নিন্দা জানান এবং সুষ্ঠু বিচার দাবী করেন। তারা বলেন, পেশীশক্তি স্বাধীনতা বিরোধী চক্র এখনো মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের প্রজন্মের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিকল্প নেই। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সিনহা ছিলেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে দীর্ঘদিন প্রধামন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু এই দেশপ্রেমিক সেনা অফিসার ও বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ছাড়াও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে আমরা এই নৃশংস হত্যাকান্ডে জড়িতদের ফাঁসির দাবী জানাই। পাশাপাশি চট্টগ্রামে মুক্তিযোদ্ধা ও গণমাধ্যম কর্মীদের উপর ন্যক্কারজনক হামলায় জড়িত এমপি মোস্তাফিজুর রহমান ও তার দোসরদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান বক্তারা।

সংগঠনের সভাপতি সাইফুর রহিম শাহীনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল হাকিম নূকীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন নাজনীন সরওয়ার কাবেরী, শহিদুল ইসলাম, এম আলা উদ্দিন, নুরুল আজিম, ফজলুল কাদের কাজল প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (12)
Repon Sorkar ২৯ আগস্ট, ২০২০, ১২:৫৬ এএম says : 0
পাপ ছাড়েনা বাপকে
Total Reply(0)
Mushfiq Rony ২৯ আগস্ট, ২০২০, ১২:৫৬ এএম says : 0
খুনিদের ফাসি দেয়া হউক
Total Reply(0)
Towhid Afridi ২৯ আগস্ট, ২০২০, ১২:৫৬ এএম says : 0
রিমান্ডে নিয়া পিটাইলে চেহারা এত্ত তেলতেলে লাগে কেন
Total Reply(0)
Mohammad Alauddin ২৯ আগস্ট, ২০২০, ১২:৫৬ এএম says : 0
কতো প্রমান হলে আসামিকে ফাঁসী দেওয়া যায়।
Total Reply(0)
Ashraf Hossain ২৯ আগস্ট, ২০২০, ১২:৫৬ এএম says : 0
কিছুই হবে না। এই গরম গরম ভাব টা কেটে গেলে দেখবেন সব ঠান্ডা ।
Total Reply(0)
Shamim Uddin ২৯ আগস্ট, ২০২০, ১২:৫৭ এএম says : 0
ওর বিচার হবেতো
Total Reply(0)
Rashed Ahmed-Omi ২৯ আগস্ট, ২০২০, ১২:৫৭ এএম says : 0
Asole era proman bolte ki bujasse? J manush gulo k cross fire desse tader jonnoto kono proman lage nai... Tahole ai poshugular jonno keno atto proman.
Total Reply(0)
Moktar Msstore ২৯ আগস্ট, ২০২০, ১২:৫৭ এএম says : 0
বাঁচানোর অকৌশল
Total Reply(0)
হক কথা ভল ২৯ আগস্ট, ২০২০, ১২:৫৮ এএম says : 0
প্রদীপকে কঠিন শাস্তি দিতে না পারলে বাংলাদেশ কঠিনভাবে রহেরে যাবে।
Total Reply(0)
salman ২৯ আগস্ট, ২০২০, ৪:৩৯ এএম says : 0
.................ar chehara dekhte chaina. .................... 3 ta k CROSS FIRE koray daw. kisher bechar?? Ora e tu khuni, Promanito.
Total Reply(0)
a aman ২৯ আগস্ট, ২০২০, ৭:১৩ এএম says : 0
How come too many Minority POLICE officer in the most important Zila Coxs bazaar ? These minors often become highly corrupt and opportunist, We have seen DIG Partho throwing bag load of cash from his building , OC prodeep and NONDO was helping each other same way.. many more minors officer become corrupt to make money. My question is Coxs bazaar is one of the main zila where millions of ROHINGA shelled, Close to Burma and India, close to major sea port and does these Milor officer passing securiety information to India and burma ??
Total Reply(0)
Mohammed Shah Alam Khan ২৯ আগস্ট, ২০২০, ৭:৫৩ এএম says : 0
মেজর (অবঃ) সিনহা হত্যা মামলার একরকম প্রমাণিত আসামীকে (খুনীকে) বাচানোর জন্যে উকিল বাবুরা আসামীর টাকায় পকেট ভরার জন্যে উঠেপড়ে নেমেছেন। আবার অপরদিকে মেজর (অবঃ) সিনহা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হওয়ায় কক্সবাজারের মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের পক্ষথেকে মানববন্ধন করলে সেখানকার এমপি মোস্তাফিজুর রহমান তাঁর মাস্তান বাহিনী দিয়ে মানবন্ধনে হামলা চালায়। এই সংবাদ কতটা বেদনার সেটা ভাষায় বুঝানোর নয়। উকিল বাবুরা তাদের পেশার কথা বলে অন্যায়কারীর পাশে দাঁড়িয়ে গেছে আবার রাজনীতিবিদ নির্বাচনে পুলিশের সহযোগিতা পাবার আশায় অন্যাকারীর পাশে দাঁড়িয়ে কতটা নিম্নমানুষিকতার পরিচয় দিচ্ছে এটা ভাবাই যায়ন। আল্লাহ্‌ আমাদের দেশের উকিল বাবু সাথে সাথে বিপথগামী রাজনৈতিক নেতাদেরকে সত্য পথে চলার ক্ষমতা দান করুন। আমিন
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন