বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

গাছ বাওয়াই তার পেশা

দৃষ্টি প্রতিবন্দি কুদ্দুস

বরিশাল ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ১ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

ঝালকাঠির দৃষ্টি প্রতিবন্দি কুদ্দুস মোল্লা বিগত ৩২ বছর ধরে নারিকেল-সুপারি গাছ বেয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। ঝালকাঠি শহরের কিফাইত নগরের কুদ্দুস ১১-১২ বছর বয়সে অজ্ঞাত জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দৃষ্টিশক্তি হারান। কখনো কারো কাছে হাত পাতেননি। বেছে নেননি ভিক্ষাবৃত্তি বা তৈরি হয়নি কারো কাছে হাত পাতার মানসিকতা। 

দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে কয়েক বছর চরম অভাব-অনটনে দিন কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত নিজের পায়ে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে বেছে নেন গাছ থেকে নারিকেল-সুপারি পারার পেশা। তরুণ কুদ্দুস আশপাশের মানুষের নারিকেল-সুপারি পেড়ে দিয়ে জীবিকা নির্বাহ শুরু করেন। প্রথমদিকে অনেকেই হাসি-তামাশা করলেও পরে সবার দৃষ্টি কারেন দৃষ্টিহীন কুদ্দুস। দৃঢ় মনোবল আর সততাকে পুজি করে সে থেকে ঝুঁকিপূর্ণ এ পেশাকে ধরে রেখেছেন। 
বছর পঁচিশের সময় বিয়ে করে সংসারও শুরু করেন। একে একে ৩টি কন্যা সন্তান আসে তাদের সংসারে। তবে স্ত্রী ও সন্তানদের মুখ দেখার ভাগ্য হয়নি তার। অভাবের কারণে সে তার কোন সন্তানকেই পড়াশোনাও করাতে পারেনি। বছর কয়েক আগে তার স্ত্রী দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন। তবে শোককে শক্তিতে পরিণত করেই কুদ্দুস মেয়েদের আগলে রেখেছেন। ইতোমধ্যে বড় মেয়ের বিয়েও দিয়েছেন। 
এখন দু’মেয়ে নিয়ে তার টানা পোড়েনের সংসার। সম্বল নিজের মেধা আর পরিশ্রমী শরীর। এখনো প্রতিদিন কুদ্দুস যেখানেই ডাক পড়ে সেখানেই ছুটে যান নারিকেল-সুপারি পাড়তে। ছোট মেয়ে কাছে নিয়ে গাছ ধরিয়ে দিলেই কুদ্দুস অবলীলায় উঠে যান ডগায়। পেড়ে আনেন নারকেল-সুপারি। বিনিময়ে কেউ গাছ প্রতি ৫০ টাকা আবার কেউ ২-৩টি নারিকেল বা সমমূল্যের সুপারি দেন। তাতেই চলছে কুদ্দুসের সংসার। কিন্তু সে কোনভাবেই কারো কাছে হাত পাততে রাজি নয়।
ঝালকাঠি পৌরসভার মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদার চেষ্টা করেন দৃষ্টি প্রতিবন্দি কুদ্দুসের খোঁজ-খবর রাখতে। তার চেষ্টায়ই লিয়াকত ইতোমধ্যে প্রতিবন্দি ভাতার তালিকাভুক্ত হয়েছেন। কুদ্দুসের জন্য মানবিক সহায়তা চেয়ে প্রধানমন্ত্রীরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন মেয়র।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন