যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের হত্যাকাণ্ডে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় গঠিত ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটির তদন্ত রিপোর্ট মঙ্গলবার রাতে দাখিল করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আবুল লাইছ দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, তদন্তে কী কী তথ্য উপাত্ত পাওয়া গেছে তার বিস্তারিত বলা যাবে না। তবে কর্তৃপক্ষ যে কোনভাবেই দায় এড়াতে পারেন না সেটি আমাদের মতামতে এসেছে।
আমাদের উপর মূলত ৩টি বিষয়ে তদন্তের দায়িত্ব ছিল। এক, ঘটনার কারণ কী তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ, দুই, হতাহতের দায়দায়িত্ব নিরুপণ এবং কারা কীভাবে দায়ি এবং তিন, ঘটনার পর পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কী না। এ ব্যাপারে আমরা ১০টি সুপারিশ ও ৯টি পর্যবেক্ষণ দিয়েছি। তদন্ত রিপোর্ট হয়েছে মোট ২৭ পৃষ্টার। রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে ই-মেইলে। রাত ১১টার দিকে ই-মেইল করা হয়। বুধবার সকালে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ রিপোর্টটির ই-মেইল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছেন বলে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়।
এর আগে সমাজসেবা অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটি তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করে। ওই রিপোর্টে তদন্ত কমিটির প্রধান সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রতিষ্ঠান) যুগ্ম সচিব সৈয়দ নুরুল বাসির উল্লেখ করেছেন, ঘটনাটি নিঃসন্দেহে দুর্ভাগ্যজনক। কেন্দ্রে ওইদিন ঘটনাটি দুপুরে ঘটলেও জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন কিংবা ডিপার্টমেন্টের কাউকেই অবহিত করা হয়নি। কেন্দ্রের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বা নিরাপত্তার দায়িত্বেসহ অন্য যারা উপস্থিত ছিলেন তারাও তাদের দায়িত্ব ন্যুনতম পালন করেননি।
যশোরের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন পিপিএম জানান, পৈশাচিক হত্যাকান্ডটির ব্যাপারে পুলিশ গুরুত্বের সাথে দেখছে। পুলিশী তদন্ত শেষ হলে যত দ্রæত সম্ভব মামলার চার্জশিট দেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, পুরো ঘটনার আদ্যপান্ত পুলিশ সুপার ঘটনার পরপরই প্রেস ব্রিফিংএর মাধ্যমে তুলে ধরেন। তাতে কারা কীভাবে জড়িত, কেন কীভাবে ঘটলো তার বিস্তারিত বর্ণনা ছিল।
ট্রিপল মার্ডার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মোঃ রোকিবুজ্জামান জানান, রিমান্ডে কিশোর কেন্দ্রের সহকারি পরিচালকসহ কর্মকর্তারা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। কেন্দ্রের মধ্যে অভিযুক্ত বন্দি ৮ কিশোরের জিজ্ঞাসাবাদ শেষ করা হয়েছে। যারা ১৬১ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন তাদের আদালতের মাধ্য্যমে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করার প্রক্রিয়া চলছে। ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত প্রায় শেষ। সিসিটিভি ফুটেজ ও জবানবন্দি, রিমান্ডে পাওয়া তথ্য ও আনুষাঙ্গিক বিষয়ে পরিস্কার একটা চিত্র পাওয়া গেছে। তার কথা, পুলিশ সুপার মহোদয় সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছেন, সম্পুর্ণ নিরপেক্ষভাবেই মামলাটির চার্জশিট দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৩ আগস্ট যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে বন্দি কিশোরদের রুম থেকে বের করে দফায় দফায় পৈশাচিক নির্যাতনে তিন কিশোর হত্যা ও ১৫ জন আহত করা হয়। এ ঘটনায় ১৪ আগস্ট রাতে হত্যাকান্ডের শিকার বন্দি কিশোর পারভেজ হাসান রাব্বির পিতা খুলনার দৌলতপুরের রোকা মিয়া যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন