বহুদিন দেখা নেই প্রিয় বন্ধুদের। যাদের সাথে একত্রে খাওয়া আর দিনের পর দিন পাশাপাশি বসে ক্লাস-পরীক্ষাসহ অনেক কঠিন সময় পার হয়েছে। একসাথে সেলিম আল-দ্বীন মুক্তমঞ্চে নাটক দেখে পার হয়েছে কত অগণিত সন্ধ্যা তার হিসেবও যে কারে কাছে নেই। পড়ন্ত বিকেলে সবুজ ক্যাম্পাসে ঘোরাঘুরি আর প্রাণবন্ত আড্ডার সোনালি স্মৃতি ভোলা এতই সহজ? আর তাইতো শুক্রবার বেলা যতই বাড়তে ছিল ততই প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা তাদের প্রিয় বিভাগের বারান্দায় হাজির হতে থাকে। সুখ-দুঃখ সব রকম সময়ে পাঁচ থেকে ছয়টি বছর কেটেছিল বন্ধুদের সাথে। আজ দীর্ঘদিন পর দেখা হতেই বুকে জড়িয়ে ধরে একটাই কথা, ‘‘বন্ধু কেমন আছিস? কি খবর বল...।’’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতœতত্ত্ব বিভাগের পূর্ব ঘোষিত ঈদ মিলনমেলা-২০১৬ এভাবে বেশ উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়েই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গত ২৯ জুলাই। দিনব্যাপী বর্তমান এবং সাবেক শিক্ষার্থীদের আনাগোনায় মুখর হয়ে উঠেছিল নতুন কলা ভবনের তৃতীয় তলা। দীর্ঘদিন পর বন্ধুদের দেখা পেয়ে প্রাণ ফিরে পায় প্রতœতত্ত্ব বিভাগের আঙিনা। সাবেক সকল ব্যাচের শিক্ষার্থীরা এবং বর্তমান শিক্ষার্থীরা সবাই বেশ আগ্রহ নিয়ে এসেছিল এদিন। সিনিয়র আর জুনিয়রদের মধ্যে পরিচয় পর্ব, কুশল বিনিময়, চা-চক্র, উম্মুক্ত আড্ডা, স্মৃতিচারণ আর দুপুরের খাবার একসাথে গ্রহণ প্রভৃতি নানান আকর্ষণীয় পর্বের মাধ্যমে জমে উঠেছিল মিলনমেলা।
দুপুরের খাবার গ্রহণের পর সামনে এভাবে একসাথে আর কীভাবে বসা যায় তার জন্য অনুষ্ঠিত হয় ‘উম্মুক্ত মতামত পর্ব। বিভাগের ২৫ বছরপূর্তি পালন করা এবং দ্রুত বিভাগীয় পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য সর্বসম্মতিক্রমে একটি প্রাথমিক আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। অধিকাংশের মতামত ছিল এমন, ‘কি করা দরকার তা জানি না। তবে আমরা চাই সামনে এভাবে আবার মিলিত হওয়ার ব্যবস্থা অবশ্যই হোক।’’ আবেগের প্রভাব একটু বেশিই ছিল আরকি!
সবাই মিলে ঘোরাঘুরি আর নানান রঙের পুরনো দিনের স্মৃতিচারণে সবাই যেন ফিরে গিয়েছিল অনার্স বা মাস্টার্সের শিক্ষার্থীর বেশে। একসাথে ছবি তুলতেও ছাড়েনি কেউ। চলেছিল মিলেমিশে ইচ্ছামতো ছবি তোলা পর্ব। এভাবে একটি দিনের উৎসব মুখর মিলনমেলা যেন সবাইকে ভুলিয়ে দিয়েছিল কে সিনিয়র আর কে জুনিয়র। এক আন্তরিকতাপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হয়েছিল সবার মাঝে।
উল্লেখ্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতœতত্ত্ব বিভাগের যাত্রা শুরু হয় ১৯৯০ সালে। বর্তমান বিভাগীয় সভাপতি অধ্যাপক ড. মোকাম্মেল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘‘এমন আয়োজন হলে খুব ভালো লাগে। সাবেক এবং বর্তমান শিক্ষার্থীরা এভাবে মিলিত হওয়া সত্যিই অন্যরকম আনন্দের বিষয়। আর আমিও তো এই বিভাগেরই শিক্ষার্থী। ভবিষ্যতে এমন অনুষ্ঠানের জন্য বিভাগের পক্ষ থেকে সকল প্রকার সহযোগিতা থাকবে।’’
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. স্বাধীন সেন, সহকারী অধ্যাপক কামরুন নেছা খন্দকার, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতœতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক সাদেকুজ্জামান তনু, বাংলাদেশ সরকারের যুগ্মসচিব আহসান কিবরিয়া, বেসরকারি সংস্থা অ্যাকশন এইডের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা নাজমুল আহসান মিরাজসহ আরো অনেক গণ্যমান্য প্রতœতত্ত্ব বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী।
ষ ওয়ালীউল্লাহ মিঠু
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন