শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

মহিপুরে ৬৫ বছরের বৃদ্ধ কর্তৃক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী যুবতীকে ধর্ষণের অভিযোগ, অভিযুক্ত আটক

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৫:৫৫ পিএম

পটুয়াখালীর মহিপুরে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এক যুবতীকে ৬৫ বছরের বৃদ্ধ কর্র্তক ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ইউনিয়ন পরিষদের সরকারের বরাদ্ধকৃত সুবিধা পাইয়ে দেবার নাম করে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী অসহায় ওই যুবতীকে দীর্ঘ সাত মাস ধরে লাগাতার ধর্ষণ করে আসছে প্রতিবেশী বৃদ্ধ কাদের প্যাদা (৬৫)। অভিযুক্ত বৃদ্ধ কাদের প্যাদা (৬৫) কে ৩ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) দুপুরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মহিপুর থানা পুলিশ আটক করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে অভিযোগ প্রমানিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনানূগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে পুলিশ জানান। মহিপুর থানার ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের মনসাতলী গ্রামের সিকদার বাড়ি বাঁধঘাট এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটেছে। তবে ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করে ওই যুবতীর মা বলেন আমার মেয়ের নামে দূর্নাম রটিয়ে বৃদ্ধ কাদের প্যাদা বিবাহ করতে চায়। এনিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে এলাকায় তোলপাড় চলছে।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, কৃষক মোঃ নাসির মোল্লার বাড়িতে প্রতিবেশি মোঃ কাদের প্যাদা (৬৫) প্রায় সময়ই আসা যাওয়া করতো। আসা যাওয়ার এক পর্যায়ে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী যুবতী (২০) এর সাথে সখ্যতা গড়ে ওঠে। অসহায় যুবতীকে ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দকৃত সুবিধা সহ নানা প্রলোভন দেখিয়ে সাত মাস পর্যন্ত ধর্ষণ করে আসছে।
স্থানীয়রা জানান, কাদের প্যাদা অত্র এলাকার চরিত্রহীন ও মামলাবাজ নামে পরিচিত। অতীতেও তার নামে এরকম একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর কাদের প্যাদা তার স্ত্রী মোসাঃ সায়েরা খাতুন (৫৫) কে তালাক দিয়ে যুবতীকে বিবাহের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু ওই যুবতীর পরিবার এ প্রস্তাব প্রত্যাখান করে।

এ বিষয়ে ওই যুবতী বলেন, কাদের প্যাদা আমাদের বাসায় সব সময় আসা যাওয়া করতো। আমার মা তাকে জামাই বলে ডাকতো। তাই আমিও তাকে স্বামী মনে করতাম, তাই কাদের প্যাদা আমাদের নিজ বাসায় ও পার্শ¦বর্তী সমবয়সী হনুফাদের বাসায় বসে শারিরীক মেলামেশা করতো। সাত মাস ধরে তাদের দু”জনের শারিরীক সম্পর্ক চলে আসছে। কাদের প্যাদা তাকে বিবাহ করবে বলেও ওয়াদা করেছে।

যুবতীর মা বলেন, আমি বিভিন্ন সময় বাড়ির বাহিরে থাকতাম। আমার মেয়ে ১০ বছর যাবৎ প্রতিবেশী হনুফার বাসায় থাকতো, শুধু খাবারের সময় বাসায় আসতো। হনুফার বাসায় থাকা অবস্থায় এমন কথা আমি শুনে হনুফাকে জিজ্ঞাস করলে, হনুফা সেটা অস্বীকার করে। এর পর থেকে আমার মেয়েকে আমি নজরে রাখি। হনুফার সাথে কাদের প্যাদার খারাপ সম্পর্ক আছে। হনুফা কাদের প্যাদার সাথে সম্পর্ককে ঢাকতে যোগসাজসে এখন আমার প্রতিবন্ধী মেয়ের উপরে দোষ চাপিয়ে দিয়ে সে সাধু সাজতে চেষ্টা করছে। তিনি আরও বলেন, জনপ্রতিনিধিদের কাছে বিচার চাইতে গেলে কাদের প্যাদা ও তার লোকজন বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। তিনি এবং তার পরিবার প্রতিদিনই ভয়ে দিন পার করছেন।
এমন অভিযোগ প্রতিবেশী হনুফা অস্বীকার করে বলেন দু’জনের সম্মতিতে দীর্ঘদিন শাররীক চলে আসছে। যা এলাকার সবাই জানে।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শাখাওয়াত হোসেন নান্নু ও সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নাজমা বেগম বলেন, আমরা এমন ঘটনা শুনে ঘটনাস্থলে যাই। এসময় প্রায় অর্ধশতাধিক স্থানীয় মানুষের সামনে অভিযুক্ত কাদের প্যাদা ধর্ষণের কথা অস্বীকার করেন। তিনি বিবাহের প্রস্তাব পাঠিয়েছে বলে নিজে স্বীকার করেছে। তারা আরও বলেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী রোখসোনা তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক আছে এবং তাকে বিয়ে করবে বলে তাদেরকে উপস্থিত লোকজনের সামনে জানিয়েছে।
এবিষয়ে ডালবুগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আঃ ছালাম সিকদার বলেন এঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। একটি পক্ষ কাদের প্যাদাকে ফাঁসাতে অপ-প্রচার চালাচ্ছে।

এ ব্যাপারে মহিপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, তারা এমন অভিযোগ শুণে অভিযুক্ত কাদের প্যাদাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে আইনানূগ ব্যবস্থা নেবেন বলে তিনি জানান। ###

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন