শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

কৃষিতে সরব বিপ্লব

বাম্পার ফলনের প্রত্যাশা শীতকালীন সবজিতেও বন্যা বৃষ্টিতে বেড়েছে জমির উর্বরতা এক ইঞ্চিও অনাবাদি থাকছে না

মিজানুর রহমান তোতা | প্রকাশের সময় : ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

দুর্দান্ত গতিতে এগিয়ে চলছে বাংলার কৃষি। সারাদেশের মাঠে মাঠে এখন চলছে বিশাল কর্মব্যস্ততা। এবারের বন্যা ও বৃষ্টিতে কৃষির কোন ক্ষতি হয়নি। বরং বন্যায় সব ময়লা আর্বজনা ধুয়ে মুছে ওয়াশের কাজ হয়েছে। জমেছে পলি। তাতে বৃদ্ধি পেয়েছে উর্বরতা। দেশের সবখানে বন্যা হয়নি, হয়েছে বৃষ্টি। রোপা আমনে সেচ খরচ লাগেনি। মুষ্টিমেয় বিল এলাকার বোনা আমনে সামান্য ক্ষতি হলেও লেটজাত চারা ব্যবহারের মাধ্যমে তা পুষিয়ে নেয়া হয়েছে। তবে রোপা আমনে কোন ক্ষতিই হয়নি।। শীতকালীন সবজিসহ বিভিন্ন ফসল চাষাবাদের মহোৎসব চলছে। প্রধানমন্ত্রী কৃষির সার্বিক উন্নয়নে এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি না রাখতে নির্দেশ দেওয়ার পর থেকে করোনা সঙ্কটেও বিন্দুমাত্র থেমে থাকেনি কৃষি। বিদেশে চাকরি হারিয়ে আসা লোকজন এখন কৃষিতে নিয়োজিত হচ্ছেন। শহরের বহু মানুষ গ্রামে ফিরে ফল ফসলের আবাদে ঝুঁকেছেন।

এমনিতেই বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় কৃষি প্রধান বাংলাদেশের মাটি অধিক উর্বর এবং বিরাট সম্ভাবনার। কৃষিসমৃদ্ধ আবহাওয়া ও জলবায়ুর এত সুন্দর দেশ বিশ্বে খুব কমই আছে। কৃষিতে বাংলাদেশের সাফল্য এখন রীতিমতো ঈর্ষণীয়। বিশ্ব অর্থনীতির পরিসংখ্যানে খাদ্যশস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে অনন্য উদাহরণ। গ্রামে ও মাঠের কর্মবীররা বিপ্লব ঘটাচ্ছেন। এখন কৃষি বিপ্লব নীরবে নয়, ঘটছে সরবে। শুধু চাষাবাদ নয়, গবাদি পশু, হাঁস-মুরগি পালন, মাছ চাষ করে গ্রামীণ অর্থনীতি করছেন চাঙ্গা। মহিলারও বসে নেই। তারা বাড়ির আঙিনায় সবজি আবাদ, কুটির শিল্পে জড়িত হয়ে সাবলম্বী হচ্ছেন।

কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুল মুঈদ গতকাল বিকালে দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, ক্লাইমেট চেঞ্জ বাংলার কৃষকদের জন্য কোন পুরানো ব্যাপার নয়। বন্যা, ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, নিম্নচাপ, কুয়াশা বৃষ্টিসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ যা আছে সব মোকাবিলা করে মুহূর্তে আবার ঘুরে দাঁড়ানোর অভ্যাস আছে। আবহকাল ধরেই এটি কর্মবীররা করে আসছেন। এখন বহুগুণে সচেতন হয়েছেন। নিত্য নতুন ব্যবস্থাপনায় কৃষি বিপ্লব ঘটাচ্ছেন, যা অনেকের কাছে কল্পনাতীত।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দেওয়া তথ্য হচ্ছে, বন্যায় কোথাও জমি খালি নেই। রোপা আমন ৫৮ লাখ ৯৫ হাজার হেক্টরে আবাদ হয়েছে। আশা করা হচ্ছে চাল উৎপাদন হবে ১ কোটি ৫৫ লাখ মেট্রিক টন। বিল এলাকার বোনা আমনের সামান্য ক্ষতি হলেও মুহূর্তে তা লেটজাত দিয়ে পূরণ করা হয়েছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওয়ায় এবার উঁচু জমিতেও রোপা আমন আবাদ হয়েছে। সবমিলিয়ে টার্গেটের বেশি জমিতে এবার রোপা আমন আবাদ হচ্ছে। এর প্রমাণ ২ লাখ ৯২ হাজার হেক্টরের স্থলে ৩ লাখ ৩২ হাজার হেক্টর বীজতলা তৈরি করতে হয়েছে। শীতকালীন সবজি উৎপাদনের টার্গেট রয়েছে সাড়ে ৫ লাখ হেক্টর জমিতে। বন্যা ও বৃষ্টির কারণে আগামী রবি মৌসুমেও কৃষকরা সুবিধা পাবেন।
বন্যা ও বৃষ্টিতে সারাদেশের কৃষির সার্বিক পরিস্থিতি উঠে এসেছে দৈনিক ইনকিলাবের ব্যুরো অফিসের তথ্য উপাত্তে।

চট্টগ্রাম ব্যুরো থেকে রফিকুল ইসলাম সেলিম জানান, চট্টগ্রাম অঞ্চলে আমন আবাদে রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। এবার সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ ৬৪ হাজার ৪৪৩ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। গতকাল পর্যন্ত পাঁচ লাখ তিন হাজার ৬৩৭ হেক্টরে আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। যা মোট লক্ষ্যমাত্রার ৮৯ শতাংশ। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আমন চাষ হচ্ছে। করোনাকালে খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কায় কৃষকরা ধান চাষে মনোনিবেশ করছেন। ফলে এখন আর পতিত কোন জমি নেই। সম্পূর্ণ প্রকৃতি নির্ভর এ ফসল আবাদে খরচ কম। এবার কৃষি শ্রমিক পাওয়া গেছে। সার, বীজের সরবরাহ স্বাভাবিক আছে। এই অঞ্চলে বড় কোন বন্যা বা পাহাড়ি ঢলও হয়নি। স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হওয়ায় পানিরও কোন সঙ্কট নেই। যথাসময়ে বীজতলা প্রস্তুত করা গেছে। অন্যবারের চেয়ে এবার হাইব্রিড ও উচ্চ ফলনশীল বা উফশী জাতের আবাদ বেশি হচ্ছে। আবহাওয়া অনুক‚লে থাকলে ফলনও ভাল হবে-এমন প্রত্যাশা কৃষক ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের। এই অঞ্চলের মাঠে মাঠে প্রান্তিক চাষিরা এখন দারুন ব্যস্ত। চলছে শেষ সময়ের আবাদ। বৃহত্তর চট্টগ্রামে চলতি মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত আমনের আবাদ হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মো. মঞ্জুরুল হুদা বলেন, করোনায় এই অঞ্চলের কৃষি আরো সমৃদ্ধ হচ্ছে। ধানের পাশাপাশি হরেক ফল ফসলের আবাদে ব্যস্ত এই এলাকার কৃষক। বিদেশে চাকরি হারিয়ে আসা অনেকে কৃষি এবং খামারে যুক্ত হচ্ছেন। কৃষি বিভাগও তাদের সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। কৃষিতে বিপ্লব হচ্ছে, আর তাতে খাদ্যনিরাপত্তা বাড়ছে।

রাজশাহী ব্যুরো থেকে রেজাউল করিম রাজু জানান, বান বর্ষণের কারনে বরেন্দ্র অঞ্চলের নীচু এলাকায় আউশ ধানের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কোমর বেঁধে কৃষক মাঠে নেমেছে বোরো আমন আবাদে। বরেন্দ্র অঞ্চলের প্রায় জমিতে আবাদ শেষ হয়েছে। শুরুর দিকে লাগানো ক্ষেতে সবুজ ধানের চারা লকলকিয়ে বেড়ে উঠছে। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার রাজশাহী অঞ্চলে রোপা আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৩৬ হাজার ২২৪ মে.টন। আর চালের লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ২৪ হাজার ১৪৯ মে. টন। এবার উঁচু জমিতে উফসি জাতের ধানের আবাদ বেশি হচ্ছে। এরমধ্যে কালোজিরা ও চিনি আতব চালও রয়েছে। কৃষি বিভাগ সূত্রমতে এবার কৃষক ধানের দাম বেশি পাওয়ায় তারা ধান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

নোয়াখালী ব্যুরো থেকে আনোয়ারুল হক আনোয়ার জানান, নোয়াখালীর উপক‚লীয় ও দ্বীপাঞ্চলের কৃষি সেক্টর ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। রোপা আমন মৌসুমে কৃষকরা নব উদ্যমে মাঠে কাজ করছে। এবার নোয়াখালীতে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৭৮৭ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। নোয়াখালীর উপক‚লীয় ও দীপাঞ্চলে বিপুল পরিমাণ ভ‚মি প্রতি বছর চাষের আওতায় আনা হয়েছে। বিশেষ করে মেঘনা নদীগর্ভে জেগে ওঠা নতুন নতুন চরাঞ্চলে কৃষকরা পরীক্ষামূলকভাবে চাষাবাদ করে আসছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম ইনকিলাবকে জানান, নোয়াখালীর দক্ষিণাঞ্চল কৃষি বিপ্লবের জন্য অপার সম্ভাবনাময়। সরকার কৃষি সেক্টরকে আরও গতিশীল করার মহতী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। প্রতি বছর আরো অধিক পরিমাণ জমি চাষের আওতায় আনা হচ্ছে। এতে করে এ অঞ্চলে অধিক ফসল উৎপাদন হবে।

বরিশাল ব্যুরো থেকে নাছিম উল আলম জানান, একরে পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে চলমান করোনা সঙ্কটের মধ্যেও কৃষিনির্ভর দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতিকে সচল রাখতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন কৃষিযোদ্ধারা। বিগত রবি মৌশুমে বোরো, গম, গোল আলু, মিষ্টি আলু, তরমুজ ও শাক-সবজি উৎপাদনে প্রকৃতির বিরুদ্ধে লড়াই করেছে দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকরা। দক্ষিণাঞ্চলে প্রধান দানাদার খাদ্য ফসল আমন আবাদ শুরু হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় ৫ লাখ ১৫ হাজার ৫২২ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের মাধ্যমে ১৬ লাখ ৬৩ হাজার টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমেছেন কৃষকরা। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে কৃষিই দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি হিসেব কাজ করে আসছে। করোনা সঙ্কটসহ একাধিক প্রাকৃতিক দুর্যোগেও মহান আল্লাহ রাব্বুল আল-আমীনের অপারদান, কৃষিই সচল রেখেছে দক্ষিণাঞ্চলের আর্থ-সমাজিক ব্যবস্থাকে, মন্তব্য কৃষি অর্থনীতিবীদদের।

বগুড়া ব্যুরো থেকে মহসিন রাজু জানান, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে মহাব্যস্ত এখন বগুড়া অঞ্চলের চাষিরা। রীতিমত চারিদিকে রোপা ও বোনা আমন এবং মৌসুমি রবি ফসল আবাদের ধুম পড়েছে যেন ! বগুড়া আঞ্চলিক কৃষি অফিসের তথ্য মোতাবেক বগুড়া, জয়পুরহাট, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলাকে নিয়ে গঠিত বগুড়া কৃষি অঞ্চলে এবার ২২ হাজার ১শ ৭১ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের বীজতলা তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও গড় অগ্রগতির হার ছাড়িয়ে ১শ’ ১৯ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। পাশাপাশি ৩ লাখ ৬১ হাজার ১৩ হেক্টর জমিতে রোপা ও বোনা আমন রোপনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও গতকাল এই রিপোর্ট লেখার সময়তক অগ্রগতির লক্ষ্যমাত্রার হার দাঁড়িয়েছে ৯৪ দশমিক ৪০ শতাংশ। আঞ্চলিক কৃষি পরিচালকের ধারণা, ভাদ্রের শেষ নাগাদ রোপা ও বোনা আবাদের নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। বগুড়া ,জয়পুরহাট, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ এই চার জেলায় এবার ১২ হাজার ৪শ ৮৬ হেক্টর জমিতে মাসকলাই ডালের চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা ধরা হয়েছে। ইতোমধ্যেই ৩ হাজার ৮০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। মধ্য আশ্বিনের মধ্যেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়ে যাবে বলে কৃষি বিভাগের ধারণা।

বগুড়া অঞ্চলে ১০ হাজার ৮শ ৭৮ হেক্টর এবং জমিতে মৌসুমি শাক সবজি এবং মরিচ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪শ ২৪ হেক্টর জমিতে। চাষিদের ধারণা, পলি পড়া জমিতে এবার ডাল ও সবজির বাম্পার ফলন হবে।
দিনাজপুর অফিস থেকে মাহফুজুল হক আনার জানান, কৃষি নির্ভর দিনাজপুরে এবার চলতি আমন মৌসুমে এক লাখ একাত্তর হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। উৎপাদনও চালের আকারে সাড়ে সাত লক্ষ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য এবার দিনাজপুর অঞ্চলে বন্যা দেখা দেয়নি বললেই চলে। বৃষ্টি হয়েছে। যা কিনা আমন আবাদের জন্য রহমতের পানি বয়ে এনেছে।

ময়মনসিংহ ব্যুরো থেকে মো. শামসুল আলম খান জানান, এবার ময়মনসিংহ অঞ্চলের চাষিরা বোরো ধানের দাম বেশি পাওযায় অন্যান্য ফসলের চেয়ে আমন ধানের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। ফলে বন্যার পানি কমে যাওয়ায় আমন চাষে ধুম পড়েছে মাঠে মাঠে।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বীনা) সুমানগজ্ঞ উপ-কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. ফরহাদ হোসেন জানান, চলতি বছরে রোপা আমনে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। হাওড় এলাকায় বন্যার পানি নামতে শুরু করায় ইতোমধ্যে মাঝারি নিচু ও উচু জমি গুলোতে রোপা আমন লাগানোর ধুম পড়েছে। শেষ পর্যায়ে চলবে নিচু জমিতে রোপন কাজ। এই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আরো জানান, আমন ফসল বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষক পর্যায়ে স্বল্পমেয়াদী উচ্চ ফলসশীল রোপা আমন ধানের বীজ সরবরাহ করা হচ্ছে। সেই সাথে প্রযুক্তিগত ও কারিগরি সহায়তা নিয়মিত প্রদান করা হচ্ছে।

সিলেট ব্যুরো থেকে ফয়সাল আমীন জানান, বিপুল উৎসাহ নিয়ে রোপা আমন চাষ চলছে সিলেটে। আগামী কৃষি বিপ্লবের স্বপ্ন চোখে মুখে এখন কৃষকদের। চলতি ৩ দফা বন্যার পরও মনোবলে অটুট সিলেট অঞ্চলের কৃষকরা। মাথায় হাত উঠেনি তাদের বন্যার দুর্যোগেও। সব শঙ্কা দূর করে বিভাগের আউশের আশাতীত ফলন পেয়েছে তারা। রোপা আমান আবাদ চলছে পুরোদমে। উফশী ও স্থানীয় জাত মিলে বিভাগে এবার রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ এক হাজার ৯৮৭ হেক্টর। কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সিলেট অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক শ্রীনিবাস দেবনাথ বলেন, এই মুর্হুতে আবহাওয়া নিরাপদ। নদীর পানির স্তর নিচে। আকাশের অবস্থা কৃষি বান্ধব। তাই রোপা আমনের আবাদ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে শতভাগ।

খুলনা ব্যুরো থেকে আবু হেনা মুক্তি জানান, নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ স্বত্তে¡ও ঘুরে দাঁড়িয়েছে বৃহত্তর খুলনার কৃষি সেক্টর। বিগত দেড় দশকে কৃষিতে খুলনায় উন্নয়ন হয়েছে পূর্বের তুলনায় প্রায় তিন গুণেরও বেশি। এদিকে উপক‚লীয় জেলা খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা প্রাকৃতিকভাবে লবণ প্রবণ এলাকা। স্থানীয় মৃত্তিকা বিজ্ঞানীদের গবেষণার সুফল হিসেবে খুলনাঞ্চলের জমিতে এখন লবণ সহিষ্ণু বিভিন্ন জাতের ধান ও ভুট্টার চাষ শুরু হয়েছে। চলতি আমন মৌসুমে আমনের চারা এখন হৃষ্ট পুষ্ট ও সুশোভিত।

যশোর ব্যুরো থেকে শাহেদ রহমান জানান, বন্যামুক্ত যশোর অঞ্চলের মাঠে মাঠে রোপা আমন ও শীতকালীন সবজি আবাদে ধুম পড়েছে। দেশের মোট চাহিদার ৬৫ ভাগ সবজির উৎপাদন হয় যশোর অঞ্চলে। এ অঞ্চলের নীচু এলাকার জমির আউশ ধান ঘরে নিতে না পারলেও পানি নেমে যাবার সাথে সাথে বিলম্বিত হলেও রোপা আমন আবাদ করে ক্ষতি খানিকটা পুষিয়ে নেয়া যাবে। বরেন্দ্র অঞ্চলের আমনের সবুজ ক্ষেত সে কথায় বলছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (11)
জাহিদ খান ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:৪৩ এএম says : 0
আমরা যারা দেশে আছি তারা কেমিক্যাল ও ভাইরাস যুক্ত শাক সবজী-ই খাবো
Total Reply(0)
মোঃ তোফায়েল হোসেন ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:৪৪ এএম says : 0
বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ একটি দেশ।দিনে দিনে চাষযোগ্য জমি কমে যাচ্ছে। যতটুকু চাষযোগ্য জমি আছ , প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অন্যান্য প্রতিকুলতার কারনে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকে।আকুয়াপনিকস ও হাইডরোপনিকস আমাদের কৃষিতে অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারে। ১। জনসংখ্যার তুলনার কৃষিযোগ্য জমির অভাব। হাইডরোপনিকস ও আকুপোনিকস অতি অল্প জায়গায় অধিক পরিমানে উৎপাদন করতে পারে। ২। সেচ এর সমস্যা। - এ পদ্ধতি গুলোতে জমিতে চাষের চেয়ে তিন ভাগের একভাগ পানির দরকার হয়। ৩। বৈরী আবহাওয়া যেমন - বন্যা, খরা কারনে ফসলের ক্ষতি- হাইডরোপনিকস ও আকুয়াপনিকস যেহেতু সেডের ভিতর চাষ করা হয় বৈরী আবহাওয়ার কারণে ফসলের ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। ৪। জমিতে চাষে কীটনাশক অত্যাবশ্যনিয়। সাধারণত পোকামাকর ও রোগজিবানু মাটির মধ্য থেকেই আসে। এসবের কারনে প্রচুর ফসলের ক্ষতি হয় ব উৎপাদন কম হয়। হাইডরোপনিকস এ কোন প্রকার কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না। ৫। জমিতে চাষে ফসল পেতে অনেক সময় লাগে। হাইডরোপনিকস এ একই সময়ে দুইবার ফসল ফলানো যায়। এ পদ্ধতিতে শষ্যকে তার খাদ্য পেতে বেগ পেতে হয় না তাই সে দ্রুত বড় হয় ও ফল দেয়। হাইডরোপনিকস এ আকুয়াপনিকস দ্বারা যদিও ধান, গম জাতীয় ফসল সম্ভব নয় কিন্তু সকল প্রকার সবজি চাষ জমির উপর চাপ কমানো সম্ভব। সর্বোপরি কেমিকেল ও কীটনাশক সবজি পাওয়া সম্ভব।
Total Reply(0)
বারেক হোসাইন আপন ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:৪৭ এএম says : 0
বিশ্বে করোনাভাইরাসের প্রভাবে বড় দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা রয়েছে। এতে তিন কোটি মানুষ প্রাণ হারাতে পারে। তাই আগামীতে যাতে খাদ্যের কোনো সংকট না হয়, সেজন্য সরকারি গুদামে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি খাদ্যশস্য মজুদ করছে সরকার।
Total Reply(0)
বিপুলেন্দু বিশ্বাস ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:৪৭ এএম says : 0
বিশুদ্ধ বীজের মাধ্যমে ফসলের উত্পাদন ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা সম্ভব। অথচ সেই বীজের জন্য আমাদের বিদেশের ওপর নির্ভর করতে হয়। পাটবীজের মোট চাহিদার প্রায় ৮৫ শতাংশ আসে ভারত থেকে। পেঁয়াজ, পেঁপে, ভুট্টাসহ নানা প্রকার সবজি বীজ আমদানি করা হয় ভারত, চীন, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশ থেকে। কৃষি ও কৃষকের স্বার্থে এসব ফসলের উন্নত জাতের উচ্চফলনশীল বীজ দেশে উত্পাদন করতে হবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনে প্রণোদনা দিতে হবে।
Total Reply(0)
তাসফিয়া আসিফা ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:৪৭ এএম says : 0
প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতি থেকে কৃষকদের বাঁচাতে শিগগিরই শস্য বীমা চালু করতে হবে এবং এর প্রিমিয়াম সরকারকে দিতে হবে।
Total Reply(0)
জাবের পিনটু ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:৪৮ এএম says : 0
পেঁয়াজ, রসুন, আদা, ডাল, ভুট্টা ও মৌসুমি ফল উত্পাদনের ভরা মৌসুমে কৃষকের স্বার্থে এসব পণ্য আমদানি সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে হবে
Total Reply(0)
কামাল ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:৪৮ এএম says : 0
ঠিক আছে। তবে করোনা ও আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত সবজি, দানা শস্য, ফুল, ফল, মত্স্যচাষী এবং পোলট্রি ও দুগ্ধ খামারিদের ক্ষতি কাটিয়ে পুনরায় উত্পাদন শুরু করার জন্য বিশেষ নগদ প্রণোদনা প্রদান করতে হবে।
Total Reply(0)
কায়সার মুহম্মদ ফাহাদ ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:৪৯ এএম says : 0
চলমান করোনাভাইরাস মহামারি জাতিকে বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, দেশের জনগণকে মহামারির প্রতিরোধ যুদ্ধ চলাকালীন খাদ্যাভাব থেকে বাঁচাতে রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করছে কৃষি খাতের সাফল্য।
Total Reply(0)
হক কথা ভল ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:৪৯ এএম says : 0
বাংলাদেশের কৃষি খাতে এক দশক ধরে একটি বিপ্লব চলছে বলা হয়। জনসংখ্যার অত্যধিক ঘনত্ব, জমি-জন অনুপাতের অত্যল্পতা এবং চাষযোগ্য জমির ক্রম-সংকোচন সত্ত্বেও বাংলাদেশ ধান উৎপাদনে স্বয়ম্ভরতা অর্জন করে এখন ধান-উদ্বৃত্ত দেশে পরিণত হয়েছে।
Total Reply(0)
mohosin ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১:১২ এএম says : 0
সময় উপযোগি সংবাদ প্রতিবেদন । মিজানুর রহমান তোতা ও দৈনিক ইনকিলাবকে ধন্যবাদ।
Total Reply(0)
ash ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৫:১৫ এএম says : 0
DESHER KRISHOKRA FOSHOLER NEJJO MULLO PABE TAR NISHCHOTA PELE DESH AGIE JABE !! KINTU JODI VAROTER FOSHOL AMDANI KORE NIJ DESHER KRISHOKDER SHORBONASH KORA HOY? TAHOLE DESHER KRISHOK FOSHOL FOLATE NIRITHSHAHITO HOBE, DESH ODHOPOTONE JABE
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন