বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বান্দাদের সর্তক করতে বালা মসিবত দেন আল্লাহপাক জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে পেশ ইমাম

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৩:০২ পিএম

মহান আল্লাহপাক তার বান্দাদের সর্তক করার জন্য নানা ধরণের বালা মসিবত দিয়ে থাকেন। পাপ কাজ ছেড়ে দিয়ে নেক আমলের পথে আসা দরকার। চলমান করোনা মহামারি থেকে শিক্ষা নিয়ে পাপ কাজ ছেড়ে মানুষকে অবশ্যই আল্লাহর দিকে ফিরে আসতে হবে। আজ শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন মসজিদে জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে পেশ ইমাম ও খতিবরা এসব কথা বলেন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে বিভিন্ন মসজিদে জুমার নামাজে প্রচুর মুসল্লির সমাগম ঘটে। নগরীর মহাখালীস্থ মসজিদে গাউছুল আজমেও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে প্রচুর মুসল্লির সমাগম ঘটে।

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি মিজানুর রহমান আজ খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেন, আগামী ৮ সেপ্টেম্বর স্বাক্ষরতা দিবস। পবিত্র কুরআনে নিরক্ষরতা দুরিকরণ এবং শিক্ষার অনেক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। জ্ঞানার্জন হতে হবে আল্লাহর প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস ও আস্থার জন্য। শিক্ষিতদের মাঝে নৈতিক মূল্যবোধ জাগ্রত করা ছাড়া হানাহানিমুক্ত সমাজ গঠন করা সম্ভব নয়। পেশ ইমাম বলেন, শিক্ষা ও জ্ঞানের সকল শাখায় পারদর্শিতা অর্জনের পাশাপাশি দ্বীনি শিক্ষা অর্জনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমেই আল্লাহ ও বান্দার হক আদায় করা সম্ভব। তিনি বলেন, দেশ ও একটি সমাজকে এগিয়ে নিতে হলে শিক্ষিত ও দক্ষ জনশক্তির বিকল্প নেই। ঢাকার ডেমরার ঐহিত্যবাহী দারুননাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদরাসা জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মুফতি মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম আজ খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেন, মহান আল্লাহ তা’য়ালা পৃথিবীতে নানা ধারণের বালা মসিবত দিয়ে থাকেন তাঁর বান্দাদেরকে সতর্ক করার জন্য। মহান আল্লাহ তা’য়ালা এরশাদ করেছেন। “স্থলে ও পানিতে মানুষের কৃতকর্মের দরুন বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। আল্লাহ তাদেরকে তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করাতে চান, যাতে তারা (আল্লাহর দিকে) ফিরে আসে।” মূলত: দুনিয়ার এই শাস্তি ও বিপদ মানুষকে সতর্ক করার জন্য। যাতে করে তাদের আখেরাতের বড় শাস্তি তথা জাহান্নামের আজাব ভোগ করতে না হয়। মহান আল্লাহ তা’য়ালা আরো এরশাদ করেছেন, “বড় শাস্তির পূর্বে আমি অবশ্যই তাদেরকে ছোট শাস্তি আস্বাদন করাব, যাতে তারা (আল্লাহর কাছে) প্রত্যাবর্তন করে (এবং তাওবা করে)। (সাজদা:২১) । বড় শাস্তি হলো জাহান্নামের শাস্তি। আর জাহান্নামের আজাব বড়েই কঠিন।

তাই এই করোনা মহামারিতে মানুষের শিক্ষা নেয় উচিত। পাপ কাজ ছেড়ে মানুষকে আল্লাহর দিকে ফিরে আসতে হবে। আল্লাহ তা’য়ালা আমাদেরকে হেফজত করুন, নেক আমল করে আল্লাহ ওয়ালা হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমীন ইয়া রব্বাল আলামিন। রাজধানীর চকবাজার ইসলামবাগ বড় মসজিদের খতীব শাইখুল হাদীস মাওলানা মন্জুরুল ইসলাম আফেন্দী খুতবাপূর্ব বয়ানে বলেছেন, মুমিনের ঈমান যদি এই যুগেও সুদৃঢ় ঈমানে পরিণত হয় তাহলে মহান আল্লাহর গায়েবী সাহায্য এখনো তার সঙ্গী হবে এবং শত্রæদের বিরুদ্ধেও আল্লাহ তাকে সাহায্য করবেন। পবিত্র কুরআনের সূরা মুমিনের ৫১-৫২ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, আমি অবশ্যই রাসূলগণ ও মুমিনগণকে সাহায্য করবো দুনিয়াবী জীবনেও এবং ক্বেয়ামত দিবসেও। সেদিন জালেমদের ওযর আপত্তি কোন উপকারে আসবেনা। তাদের জন্য থাকবে অভিশাপ ও মন্দ গৃহ। সূরা মুহাম্মাদের ৭ নং আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আরো বলেছেন, হে ঈমানদারগণ! যদি তোমরা আল্লাহর সাহায্য কর তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের পা সুদৃঢ় করে দিবেন।

চকবাজার শাহী মসজিদ ইমাম ও খতিব মুফতি মিনহাজ উদ্দিন খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেন, পবিত্র আশুরা কেয়ামত পর্যন্ত আগত মানুষের জন্য অন্যায়ের সামনে মাথা নত না করার আদর্শ শিক্ষা দিয়েছেন। অথচ কিছু মানুষ অজ্ঞতাবশত হুসাইন রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর শাহাদাতকে কেন্দ্র করে এমন অবৈধ কুসংস্কার ও বিদাআত লিপ্ত হন যে ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্পষ্ট নিষেধ করেছেন এবং সতর্ক করেছে। রাসুলুল্লাহ বলেছেন, সে আমার উম্মত নয় যে বুক চাপড়ায়,জামা কাপড় ছিড়ে জাহিলিয়াতের মত মাতাম করে। ইসলাম আসার আগে দুনিয়াতে এ দুটি প্রথা ছিল। আল্লাহপাক কুরআনুল কারীমে ঘোষণা করলেন, যারা বিপদে ধৈর্য ধারণ করবে তাদের জন্য বেহিসাব প্রতিদান রয়েছে। পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী আরমানিটোলা শাহী জামে মসজিদের খতিব ও মুহাদ্দিস মাওলানা মুসা বিন ইযহার জুমা পূর্ব বয়ানে বলেন, একটি জাতির সঠিক পরিচয় তার সংস্কৃতির মধ্যে নিহিত থাকে। সেই সূত্রে জাতি হিসেবে মুসলমানদের পরিচয় ও বিকাশ ইসলামী সংস্কৃতির মধ্যেই নিহিত রয়েছে। সঠিক ইসলামী সংস্কৃতির চর্চা অব্যাহত থাকলে মুসলমানদের জাগতিক ও পরকালীন অগ্রযাত্রা ও সফলতা রুখে দেয়ার কোন শক্তি পৃথিবীতে থাকবে না। আর সে কারণেই বিভিন্ন পর্যায়ের ইসলাম বিরোধী অপশক্তিগুলো মুসলমানদের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চালিয়ে আসছে মারাত্মকভাবে। বহুপক্ষীয় সাংস্কৃতিক আগ্রাসন গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শিয়াবাদ মুসলমানদের সাংস্কৃতিক বিকাশ এবং ইতিহাস ঐতিহ্যে ব্যাপক বিকৃতির মাধ্যমে বিশাল ক্ষতি সাধন করে চলেছে। মুসলমানদেরকে সাফল্যের চূড়ায় আরোহন করতে হলে নির্ভেজাল ইসলামী আক্বীদা বিশ্বাস ও তাহযীব তমদ্দুনকে আঁকড়ে ধরতে হবে মজবুত ভাবে। পেশ ইমাম বলেন, মুসলিম জনসাধারণের দায়িত্ব হচ্ছে হক্কানি ওলামায়ে কেরামের সাথে থেকে নিজেদের ঈমান আক্বিদাকে হেফাজত করা। আল্লাহ সবাইকে তৌফিক দান করুন। রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর রহমতিয়া জামে মসজিদের খতিব মুফতি সুলতান মহিউদ্দিন বলেছেন, বর্তমানে সর্বত্র জুলুম অত্যাচার, পাপাচার অনাচার বেহায়াপনা, সুদ ঘুষ জালিয়তি, শিরক কুফর ও বিদাআ’তের মতো কাজ অহরহ হচ্ছে। এ সব অন্যায় ও অপরাধমূলক কাজ থেকে বেঁচে থাকতে তাকওয়া অর্জন ও কুরআন হাদিসের যথাযথ আমল করা জরুরি। আল্লাহর ভয় এবং কুরআন সুন্নাহর অনুশীলনের মাধ্যমে সমাজ থেকে সকল অপরাধ দূর করা সম্ভব।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Mohammad Sirajullah, M.D. ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৮:২৮ পিএম says : 0
When one try's to analyze properly, so called Muslims of Bangladesh and Indian sub-conti ntinent, Perform most of the rituals of Islam without having IMAN. Quran has no place. Lots of fake Hadiths are followed instead of Quran.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন