দক্ষিনাঞ্চলে করোনা সংক্রমনের সংখ্যা তিন দিন আগের পর্যায়ে বৃদ্ধি পেলেও বরিশাল ও বরগুনা ছাড়া অন্য ৫টি জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। বরিশালে ২৪ ঘন্টায় আক্রান্তের সংখ্যা চলতি মাসের ৭ দিনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে ৩০ জনে উন্নীত হয়েছে। করোনা সংক্রমনে বরিশাল মহানগরীর অবস্থাই এখনো সবচেয়ে নাজুক। তবে সোমবার দ্বিতীয় দিনের মত দক্ষিণাঞ্চলে করেনা সংক্রমণে কোন মৃত্যু ছিলনা। পাশাপাশি সোমবার দুপুরের পূববর্তি ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণাঞ্চলে নতুনকরে ১০২ জন সহ ৬ হাজার ১৭২ জন সুস্থ হয়ে উঠেছে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমিত হিসেবে বলা হয়েছে। আর এসময় পর্যন্ত সরকারী হিসেবে দক্ষিণাঞ্চলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৭ হাজার ৮৬০। মারা গেছেন এ পর্যন্ত ১৬৩ জন।
তবে গত দু মাসের তুলনায় চলতি মাসের প্রথম ৭ দিনে দক্ষিণাঞ্চলে করেনা সংক্রমনে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা কিছুটা কম। সরকারী হিসেবে জুলাই মাসের প্রথম ৭ দিনে দক্ষিণাঞ্চলে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৬৯৯ ও ১৭, যা আগষ্টের একই সময়ে ছিল ৩৩৭ ও ৮। আর চলতি মাসের প্রথম ৭ দিনে সংখ্যাটা আরো সামান্য কিছুটা কমে যথাক্রমে ২৮৯ ও ৭ জনে নেমে এসছে। তবে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে, জুলাই-এর প্রথম ৭দিনের তুলনায় আগষ্টের একই সময়ে পরিস্থিতির যতটা ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটেছিল, সেপ্টেম্বরে সেধরনের আশাব্যঞ্জক উন্নতি ঘটেনি। উপরন্তু চলতি মাসে নমুনা পরিক্ষার সংখ্যা হ্রাস পাবার ফলেও সনাক্তের সংখ্যা কিছুটা কমেছে। কিন্তু বাস্তবে চলতি মাসে পরিস্থিতির খুব উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটেনি বলে মনে করছেন মহলটি।
উপরন্তু বরিশাল মহানগরী সহ জেলার পরিস্থিতি এখনো যথেষ্ঠ ঝুকিপূর্ণই রয়ে গেছে। সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে এ মহানগরীর অবস্থা এখনো যথেষ্ঠ নাজুক। সোমবার দুপুর পর্যন্ত বরিশালে ৩,২৭২ জন আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছেন ৬৫ জন। যার প্রায় ৭০ ভাগই বরিশাল মহানগরীর বলে জানা গেছে। এর পারেও নগর প্রশাসনের তেমন কোন হেলদোল নেই বলে অভিযোগ নগরবাশীর। এনগরীর বেশীরভাগ মানুষই এখন নুন্যতম কোন স্বাস্থ্যবিধিও অনুসরন করছেন না। সোমবার এ জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩০ জন। আগের দিন সংখ্যাটা ছিল ১১। বরগুনাতেও সোমবার আক্রান্তের সংখ্যা অগের দিনের দুই থেকে ৭ জনে উন্নীত হয়েছে। ৫ উপজেলার এ জেলাটিতে সোমবার পর্যন্ত ৮৭৭ জন আক্রান্তের মধ্যে মৃত্যু ঘটেছে ১৮ জনের ।
পটুয়াখালীতে সোমবার আক্রান্তের সংখ্যা আগের দিনের ৪ থেকে ৩ জনে হ্রাস পেয়েছে। জেলাটিতে এ পর্যন্ত ১,৩৪৭ জন আক্রান্তের মধ্যে ৩৭ জনের মৃত্যু ঘটেছে। আর দ্বীপ জেলা ভোলোতে আক্রান্তের সংখ্যা আগের দিনের ৪ থেকে সোমবারে দু জনে হ্রাস পেয়েছে। জেলাটিতে এ পর্যন্ত ৬৮৪ জন আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছেন ৬ জন। সোমবার সকালের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় ভোলা সদর হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে ৪২ জনের নমুনা পরিক্ষায় দু জনের করোনা পজিটিভ সনাক্ত হয়।
পিরোজপুরেও নতুন আক্রান্তের সংখ্যা আগের দিনের ৩ থেকে একজনে হ্রাস পেয়েছে সোমবার। ১,০১৫ জন আক্রান্তের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২১জনের। আর ঝালকাঠীতেও সোমবার নতুন আক্রান্তের সংখ্যা আগের দিনের দুজন থেকে ১ জনে হ্রাস পেয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে ছোট এ জেলায় সরকারী হিসেবে ৬৬৫ জন আক্রান্তের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৬ জনের ।
সোমবার সকালের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে ২৮২ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৪৫ জনের দেহে করোনা পজিটিভ সনাক্ত হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলার মধ্যে ভোলা বাদে অন্য জেলাগুলোর করোনা টেষ্টই এখনো শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে হয়ে আসছে। পটুয়াখালীতে ল্যাব স্থাপনের দাবী এখনো বাস্তবতা থেকে অনেক দুরে।
এদিকে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করেনা ওয়ার্ডে সোমবার সকাল পর্যন্ত ২৮ জন রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। যে সংখ্যাটা একদিন আগে ছিল ৩৮। আর আইসোলেশন ওয়ার্ডেও চিকিৎসাধীন ছিলেন আগের দিনের ৩৯-এর স্থলে ৩৬ জন। হাসপাতালটির আইসিইউ’তে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৮ জন। যে সংখ্যাটা আগের দিন ছিল ৯।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন