বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

যুক্তরাষ্ট্রে চীনা শিক্ষার্থীদের হয়রানির অভিযোগ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৪:৫৪ পিএম

আমেরিকা ও চীনের মধ্যে ক্রমবর্ধমান স্নায়ুযুদ্ধের পরিণতি ভোগ করতে হচ্ছে উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যাওয়া লাখ লাখ চীনা ছাত্রছাত্রীকে। আমেরিকার বিমানবন্দরগুলোতে চীনের শিক্ষার্থীদের সন্দেহভাজন প্রযুক্তি পাচারকারী হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে দেশে ফেরার সময় তাদের ওপর কঠোর দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। ফলে হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। খবর বিবিসির।
চীনা সরকারি বৃত্তি নিয়ে গবেষণা করতে আসা ১৫ জন শিক্ষার্থীর সঙ্গে চুক্তি গত সপ্তাহে মাঝপথে বাতিল করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়। এ ধরনের ঘটনা নজিরবিহীন।
ওয়াশিংটনে বিবিসি-র চীনা সার্ভিসের সংবাদদাতা ঝাও ইন ফেং-এর কাছে নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন ছাব্বিশ বছর-বয়স্ক পিএইচডিরর একজন ছাত্র ঝাং। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগে এক বছরের জন্য একটি গবেষণা প্রকল্পে কাজ করতে এসেছিলেন। দেশে ফেরার আগে দু’ঘণ্টা ধরে তাকে যেভাবে জেরার মুখোমুখি হতে হয় তা স্বপ্নেও ভাবেননি তিনি। মার্কিন পুলিশ বের করার চেষ্টা করছিল তার সাথে চীনা কম্যুনিস্ট পার্টির কোনো সম্পর্ক রয়েছে কিনা।
বোস্টনের লোগান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানে ওঠার জন্য অপেক্ষা করছিলেন ঝাং। তাকে হঠাৎ বোর্ডিং ডেস্কে তলব করা হলে তিনি ভেবেছিলেন রুটিন নিরাপত্তার জন্যেই ডাকা হচ্ছে তাকে। কিন্তু গিয়ে দেখলেন দুজন সশস্ত্র সীমান্ত এজেন্ট পুলিশ তার জন্য অপেক্ষা করছে। দেখে ভয় পেয়ে যান তিনি। তার কথায়, 'তারা আমাকে এমনভাবে জেরা শুরু করলো যেন আমি যেন আমি প্রযুক্তি চুরি করতেই আমেরিকাতে পড়তে এসেছিলাম'।
শুধু ঝাং নয়, যুক্তরাষ্ট্রে যে প্রায় চার লাখের মত চীনা শিক্ষার্থী বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন, তাদের অস্বস্তি দিনকে দিন বাড়ছে। দুই দেশের মধ্যে শত্রুতার পারদ যত চড়ছে, তারা মনে করছেন তাদের প্রত্যেককেই এখন সন্দেহভাজন চর হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, সিএসসি প্রায় ৬৫,০০০ চীনা শিক্ষার্থীকে বিদেশে পড়তে যাওয়ার জন্য বৃত্তি দিয়েছে। এই সংখ্যা বিদেশে মোট চীনা শিক্ষার্থীর সাত শতাংশ। অবশ্য চীনে পড়তে যায় এমন হাজার হাজার বিদেশি শিক্ষার্থীকেও সিএসসি বৃত্তি দেয়।
এমন পরিস্থিতি দেশ দুটির খারাপ সম্পর্কের মূল্য দিতে হাতে পারে আমেরিকায় পড়তে যাওয়া অসংখ্য শিক্ষার্থীদের। এ ঘটনা প্রকাশের পর আমেরিকার এমন আচরণ নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে।
গত জুলাইতে টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের হিউস্টনে চীনা কনসুলেট বন্ধ করার নির্দেশ দেয়ার সময় মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল ওই কনসুলেটটি একটি ‘গুপ্তচরবৃত্তির সেন্টারে' পরিণত হয়েছে। বিবিসির ঝাউ ইন ফেং বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে চীনা নাগরিকদের ওপর হালে নজরদারী বহুগুণে বেড়ে গেছে এবং বিশেষ নজরে পড়েছেন চীন থেকে পড়তে আসা ছাত্র-ছাত্রীরা। বহু চীনা শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত ব্যবহারের ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে গিয়ে গোয়েন্দারা পরীক্ষা করে দেখছেন। অনেক সময় সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে তা ফেরত দেয়া হচ্ছেনা। সূত্র : বিবিসি

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন