শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

লাশ হয়ে ফিরলেন নয়ন

দায়িত্ব ছিল পরিবারের প্রয়োজন মেটানো

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ থেকে | প্রকাশের সময় : ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

এক হাস্যোজ্জ্বল টগবগে তরুণ শুকুর আলী নয়ন। ছোটবেলা থেকেই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন। হৃদয়ে ছিল অনেক স্বপ্ন। মা-বাবা আর ছোট ভাইদের মুখে হাসি ফোটাতে চাকরির জন্য ছুটে যান নারায়ণগঞ্জ শহরে। কিন্তু সেই স্বপ্ন নিমিষেই শেষ হয়ে গেল। সেদিন মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়ে নিজের নামটা লিখিয়ে নিলেন লাশের সারিতে।

শুকুর আলী নয়ন (২৫) লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মেহের আলী ও বুলবুলি বেগমের ছেলে। গত রোববার বিকেলে উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের তালুক পলাশী গ্রামে তার লাশ দাফন করা হয়। নয়ন নারায়ণগঞ্জের একটি পোশাক কারখানায় এক বছর ধরে চাকরি করছিলেন।
পারিবারিক সূত্র জানায়, গত শুক্রবার রাতে মসজিদে ওই ভয়াবহ বিস্ফোরণে শুকুর আলী নয়ন দগ্ধ হন। ছেলের বন্ধুর কাছ থেকে মুঠোফোনে সেই খবর পেয়ে রাতেই মা বুলবুলি বেগম আদিতমারী থেকে ঢাকার পথে রওনা হন। শনিবার সকাল ৬টার দিকে ঢাকায় পৌঁছান। ছুটে যান ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে। সেখানেই অপেক্ষা করতে থাকেন। বিকেলে ছেলের মৃত্যুর খবর পান বুলবুলি বেগম। রাতে ছেলের লাশ নিয়ে বাড়ি ফেরেন তিনি।
শুকুর আলী নয়নের বন্ধু শামীম বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় আমাদের গার্মেন্টস কারখানা ছুটি হয়। নয়ন বাসায় ফিরে নামাজ পড়তে গিয়েছিল। নামাজ শেষে আমাদের একসঙ্গে খাবার খাওয়ার কথা। কিন্তু হঠাৎ খবর পেলাম বিস্ফোরণ, আগুন লেগেছে। গিয়ে দেখি লোকে লোকারণ্য। আমরা ওই মসজিদের মেসেই থাকি। তাকে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে ওর লাশ ও মোবাইলটি পাই। এরপর ওর বাড়িতে কথা হয়। ওর ভগ্নিপতি ও মা শনিবার সকাল ৬টায় ঢাকায় পৌঁছালে লাশ বুঝে পান। এরপর আমরা ১৫ হাজার টাকায় একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে লাশ নিয়ে রওনা দিই। নয়নের মা বুলবুলি বেগম বিলাপ করে বলেন, তার তিন ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিল বড় ছেলে নয়ন। সেও আল্লাহর ডাকে চলে গেল।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন